পাশে: প্রবীণ বাসিন্দার সঙ্গে মন্ত্রী ও মার্কিন কর্তা। নিজস্ব চিত্র
নাগরিকত্বহীন জনগোষ্ঠীর যন্ত্রণার আখ্যান শুনলেন। শুনলেন পরিচয় খোঁজার লড়াইয়ের অবসানের কাহিনিও। যদিও এখনও তাতে সব সমস্যা মিটে ওঠেনি। সোমবার সকালে পোয়াতুরকুঠিতে গাছের ছায়ায় বসে ছিটমহল বিনিময়ের অতীত এবং বর্তমানের সেই সফরে মার্কিন কনসাল জেনারেল ক্রেগ হলের সঙ্গী হলেন তাঁর স্ত্রীও। প্রশাসনের উদ্যোগে সেখানেই একটি গাছের নীচে চেয়ার-টেবিল পেতে তাঁদের স্বাগত জানান হয়। উপস্থিত ছিলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, বিধায়ক উদয়ন গুহ সহ প্রশানিক কর্তারা।
এলাকার বাসিন্দাদের সমস্যা, যন্ত্রণার অভিজ্ঞতার কথা যখন তুলে ধরছিলেন স্থানীয় যুবক সাদ্দাম মিয়াঁ, তখন অতিথিদের জন্য তার ইংরেজি অনুবাদ করতে থাকলেন জলপাইগুড়ির ডিভিশন্যাল কমিশনার বরুণ রায়, কোচবিহারের জেলাশাসক কৌশিক সাহা। ছিটমহলের উৎপত্তির ইতিহাস নিয়েও খোঁজ নেন ক্রেগ।
সাদ্দাম তাঁদের জানান, বিনিময়ের আগে ছিটমহলের বাসিন্দাদের পরিচয় ভাঁড়িয়ে পড়াশোনা করতে হয়েছে। হাসপাতালে ভর্তি হতেও অন্যের পরিচয় নিতে হত। রাস্তা থেকে বিদ্যুৎ—নানা সমস্যা ছিল। অর্থনৈতিক ভাবেও বাসিন্দারা পিছিয়ে পড়েছেন। দু’বছর আগে ছিটমহল বিনিময়ের পর থেকে অবশ্য অবস্থা বদলাতে শুরু করেছে। এলাকার প্রবীণ বাসিন্দা মনসুর আলি বলেন, “দীর্ঘ দিনের যন্ত্রণার অবসান হয়েছে। নতুন অধ্যায়ের শুরু হয়েছে। বিদেশে সবাই এ সব ইতিহাস জানুক আমরাও চাই।”
বাসিন্দাদের অনেককেই বলতে শোনা যায়, এলাকায় শীত-গ্রীষ্মে থাকার উপযুক্ত ঘর নেই। হালে বিদ্যুৎ এসেছে। রাস্তা হচ্ছে। উন্নয়নের কিছু কাজ শুরু হয়েছে। তবে জমির নথি সংক্রান্ত সমস্যা মেটেনি। চড়া রোদের দিনে প্রত্যন্ত গ্রামের পুকুর পাড়ে গাছের ছায়ায় বসে মার্কিন কনসাল জেনারেল দীর্ঘ ক্ষণ সময় কাটানোয় খুশি বাসিন্দারাও। মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “উনি সাবেক ছিটমহল সরেজমিনে ঘুরে দেখার আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন। ওই এলাকার উন্নয়ন দেখে খুশিও হয়েছেন।”