অনশন: ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে আন্দোলনরত ছাত্ররা। নিজস্ব চিত্র
সরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের জটিলতা কাটাতে সোমবার সব পক্ষকে নিয়ে বৈঠক ডাকল জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসন৷ বৈঠকে পুলিশ ও প্রশাসনের শীর্ষ কর্তাদের পাশাপাশি পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব উপস্থিত থাকতে পারেন বলে জানা গিয়েছে৷ সেই সঙ্গে ডাকা হয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ ও আন্দোলনরত ছাত্রদেরও।
গত ১৫ মার্চ থেকে প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রদের মধ্যে মারপিট ঘিরে গোলমাল শুরু হয় জলপাইগুড়ি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে৷ র্যাগিংয়ের অভিযোগ আনেন প্রথমবর্ষের ছাত্ররা। বাধা দেওয়ায় তার একদিন পরেই কলেজের অধ্যাপক দীপককুমার কোলের অপসারণের দাবিতে ধর্মঘটের ডাক দেয় দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্ররা৷ পরবর্তীতে সেই আন্দোলনে সামিল হন তৃতীয় ও চতুর্থ বর্ষের বেশ কিছু ছাত্র৷
বৃহস্পতিবার শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওই কলেজের ছাত্ররা আমাকে ই-মেল করে চিঠি দিয়েছে। প্রশাসনের তরফে খোঁজ নিয়েছি। ছাত্রদের কাছে অনুরোধ করেছি আন্দোলন প্রত্যাহার করে নিতে। আর দফতর পুরো ঘটনার তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে।’’
র্যাগিংয়ের শিকার প্রথম বর্ষের ছাত্র থানায় অভিযোগ দায়ের করলেও প্রথমে খানিকটা ধীরে চলো নীতি নেয় পুলিশ৷ কিন্তু পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেবের অনুরোধেও ছাত্ররা আন্দোলন না তোলায় ২৪ জন ছাত্রের বিরুদ্ধে র্যাগিং ও প্রাণনাশের চেষ্টা সহ বিভিন্ন ধারায় অভিযোগ দায়ের করা হয়৷ পরবর্তীতে কলেজ কর্তৃপক্ষের দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে আন্দোলনরত ছাত্রদের বিরুদ্ধে সরকারি সম্পত্তি নষ্ট ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে জামিন অযোগ্য ধারায় অভিযোগ দায়ের হয়৷
তার পরেও টলানো যায়নি আন্দোলনকারীদের৷ একের পর এক মামলার পরেও তারা কলেজ অচল করে রাখেন৷ এই পরিস্থিতিতে অচলাবস্থা কাটাতে আগামী সোমবার সার্কিট হাউজে বৈঠক ডেকেছে জেলা প্রশাসন৷ কিন্তু বৈঠক আরও তিনদিন পরে কেন? জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার অমিতাভ মাইতি বলেন, ‘‘শুক্রবার জেলার প্রশাসনিক আধিকারিকরা একটি প্রশাসনিক বৈঠকে ব্যস্ত থাকবেন৷ শনিবার কলেজের সবাইকে বৈঠকে পাওয়া নিয়ে সমস্যা হচ্ছিল৷ তাই সোমবার দিন ঠিক করা হয়েছে৷ জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানিয়েছেন, ওই বৈঠকে পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেবেরও থাকার কথা রয়েছে৷
এ দিকে অধ্যাপক দীপকবাবুর মোটরবাইকটি কলেজে আটকে রাখা নিয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষ এ দিন থানায় অভিযোগ করেছেন৷ অধ্যক্ষ অমিতাভ রায় বলেন, ‘‘আমরা চাই কলেজে দ্রুত পঠনপাঠনের স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরে আসুক৷’’
আন্দোলনরত ছাত্ররা অবশ্য দীপকবাবুর মোটর সাইকেল আটকে রাখার কথা মানতে চাননি৷ এক ছাত্র বলেন, ‘‘সোমবার একটি বৈঠক হবে বলে শুনেছি৷ তবে সেখানে আমরা যাব কি না তা সবার সঙ্গে আলোচনায় ঠিক করা হবে৷’’