হামলা: চোপড়ায় তাণ্ডব। বিরোধীদের দাবি, ঘরে ঢুকে আক্রমণ করেছে তৃণমূল। তৃণমূল জানিয়েছে, এই ঘটনায় তারা জড়িত নয়। নিজস্ব চিত্র
সোমবার রাতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে চোপড়া। এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, শাসক দলের কর্মীদের সঙ্গে সিপিএম ও কংগ্রেস কর্মীদের ব্যাপক গন্ডগোল বাধে। দু’পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ করেছে। বিরোধীদের দাবি, মঙ্গলবার সকাল থেকে তাঁদের কর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হামলা চালানো হয়েছে। তাঁদের অভিযোগের তির তৃণমূলের দিকে। তৃণমূল অবশ্য তা অস্বীকার করেছে। তাদের দাবি, বিরোধীরাই গন্ডগোল করে শাসক দলের ঘাড়ে তার দায় চাপাতে চাইছে।
চোপড়া পঞ্চায়েত সমিতির সহকারী সভাপতি তৃণমূলের জাকির আবেদিন জানান, প্রচার থেকে ফেরার সময় তাঁদের প্রার্থী জাহিদুর রহমান সহ আরও দুই কর্মীকে ব্যাপক মারধর করেছে সিপিএম ও কংগ্রেসের কর্মীরা। সিপিএম ও কংগ্রেসের পাল্টা দাবি, তাঁদের এক কর্মীর মনোনয়ন প্রত্যাহারে চাপ দিচ্ছিল শাসক দল। মঙ্গলবার সকালে তাদের বাড়িঘর লুটপাট করে। বাইক নিয়েও পালিয়ে যায়। একটি বিয়ের প্রীতিভোজের অনুষ্ঠানও বন্ধ হয়ে যায়। ওই বাড়ির লোকজন জানান, সকাল থেকে এলাকা তপ্ত হয়ে থাকায় ভয়ে অনেক আত্নীয় স্বজন আসেননি।
উত্তর দিনাজপুরের পুলিশ সুপার শ্যাম সিংহ বলেন, ‘‘এলাকাতে পুলিশ পিকেট রয়েছে। ওই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে কোন পক্ষই কোনও লিখিত অভিযোগ করেনি।’’
মনোনয়ন প্রত্যাহার নিয়েই শাসক দল বারবার চাপ দিচ্ছে বলে বিরোধীরা চোপড়ায় দাবি করেছে। কখনও এলাকা ঢুকে ভয় দেখানো হচ্ছে। কখনও চলছে গুলি বোমা। সূত্রে খবর, তৃণমূল ও বিজেপি ঠেকাতে জায়গায় জায়গায় বাম ও কংগ্রেস এক ছাতার তলায় চলেও আসছে। দলের নিচু তলার সূত্রে জানা যাচ্ছে, কোথাও প্রার্থী না দিয়েই শুধু সমর্থন। কোথাও আবার নির্দল প্রার্থীকে একত্রিত ভাবেই সমর্থন করা হচ্ছে।
সিপিএমের উত্তর দিনাজপুরের জেলা সম্পাদক অপূর্ব পাল অবশ্য কংগ্রেসের সঙ্গে এক ছাতার তলায় যাওয়ার কথা স্বীকার করেননি। তিনি বলেন, ‘‘ওই এলাকার মানুষের জীবন অতিষ্ঠ করে তুলেছে তৃণমূল। জেলা পরিষদে তো কংগ্রেস সব ক’টি আসনেই প্রার্থী দিয়েছে। আমরা হয়তো কিছু আসনে দিতে পারিনি। নিচু স্তরে গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি স্তুরে মানুষ নিজেদের মধ্যেই জোট করে নিয়েছে।’’
সিপিএম এক কর্মীর কথায়, বিজেপি ও তৃণমূল বাদে যে কোনও প্রার্থীকেই জেতানো তাঁদের লক্ষ্য। এলাকার কর্মীদের একাংশ জানিয়েছেন, অনেক জায়গায় দলীয় প্রতীকে না দাঁড়াতে পারলেও তাঁরা নির্দলে দাড়িয়েছেন। সেই ক্ষেত্রেও কংগ্রেস সিপিএমের সমর্থনের কথা।
কংগ্রেস নেতা অশোক রায়ের কথায়, ‘‘প্রতিদিনই সন্ত্রাস চালাচ্ছে তৃণমূল। তাঁদের রুখতে চোপড়ার কিছু কিছু এলাকাতে মানুষই একত্রিত হয়েছে। এলাকাতে শাসক দলের অত্যাচারের বিরুদ্ধে আমাদের কর্মীরা সর্বত্রই প্রতিরোধ গড়ে তুলব।’’
তৃণমূল নেতা জাকির আবেদিন বলেন, ‘‘হামলায় আমাদের দলের লোক যুক্ত নয়। আমাদের নামে মিথ্যা অভিযোগ হচ্ছে। আমাদের লোকজনদের মারধর করেছে বিরোধী দল।’’