নিজস্ব চিত্র
ইউক্রেনে রুশ সেনার অভিযান ধাক্কা দিয়েছে গোটা পৃথিবীর ভূরাজনৈতিক ভারসাম্যে। আবার তা নাড়িয়ে দিয়েছে শিলিগুড়ির রাজফাফড়ি এলাকার বাসিন্দা পীযূষকান্তি মালাকারের পরিবারকেও। পীযূষ এবং মৌসুমি মালাকারের একমাত্র সন্তান প্রীতম এখন ইউক্রেনে। সেখানকার পোল্টাবা মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র প্রীতম। ইউক্রেনের এমন উদ্বেগজনক পরিস্থিতিতে আশঙ্কায় দিন কাটাচ্ছে শিলিগুড়ির ওই পরিবার।
রাজধানী কিভ থেকে পোল্টাবার দূরত্ব প্রায় ১০০ কিলোমিটার। প্রীতমের বাবা পীযূষকান্তি পেশায় চিকিৎসক। চেয়েছিলেন ছেলেও সেই পেশাতেই যোগ দিক। তাই ছেলেকে ডাক্তারি পড়তে পাঠিয়েছিলেন ইউক্রেনে। সেখানে ডাক্তারির দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র প্রীতম। কিন্তু আচমকা ঘটল বিপত্তি। এখন যুদ্ধের আতঙ্ক গ্রাস করেছে ইউক্রেনের রাজধানী কিভকে। তার আঁচ পৌঁছেছে পোল্টাবাতেও। পোল্টাবা থেকে ভিডিয়ো কলে প্রীতম মা-কে জানিয়েছেন, সেখানকার পরিস্থিতির কথা। মৌসুমির কথায়, ‘‘ছেলের সঙ্গে দুপুরে এক বার কথা হয়েছে। আবার সন্ধ্যাতেও কথা হয়েছে। ও বলছে, ওখানে এখন পরিস্থিতি খারাপ নয়। সকলে সাধারণ ভাবেই চলাফেরা করছে। তবে ওদের সকলকে রেশন সংগ্রহ করে রাখতে বলা হয়েছে।’’ মৌসুমির মুখ থেকে কথা ছিনিয়ে নিয়ে প্রীতমের বাবা বলছেন, ‘‘কিভ, খারকিভের পরিস্থিতি খারাপ। সেখানে বোমা পড়ছে। তবে পোল্টাবাতে পরিস্থিতি খারাপ নয়। তবে যুদ্ধের আঁচ লাগতে কত ক্ষণ? ওদের সকলকে পানীয় জল এবং খাবার সংগ্রহ করে রাখতে বলা হয়েছে। প্রশাসনের তরফে ঘোষণা করা হচ্ছে। আমরা চাইছি, ওখানকার পরিস্থিতি ঠিক না হলে ও ফিরে আসুক। শুধু ও কেন, সব ভারতীয়ই ফিরে আসুক।’’
ভিডিয়ো কলে পোল্টাবার পরিস্থিতি যে অপেক্ষাকৃত ভাল, তা বোঝানোর বার বার চেষ্টা করেছেন প্রীতম। কিন্তু চরম উদ্বেগে দিন কাটাচ্ছে তাঁর পরিবার।
এই উদ্বেগের মধ্যেও অবশ্য কিছুটা উজ্জ্বল ছবি শিলিগুড়ির ভক্তিনগর চেকপোস্ট এলাকার হিমালয়াকন্য আবাসনের বাসিন্দা পেশায় চিকিৎসক শুভেন্দু বসুর পরিবারে। তাঁর ছেলে বিতানও ইউক্রেনে গিয়েছিলেন ডাক্তারি পড়তে। পরিস্থিতি খারাপ দিকে গড়াচ্ছে দেখে দেশে ফিরে এসেছেন বিতান। তেমনই ইউক্রেনে ডাক্তারি পড়তে গিয়েছিলেন শিলিগুড়ির বাবুপাড়ার অনন্যা মৈত্রও। দেশে ফিরেছেন তিনিও। আপাতত অনলাইনেই পরীক্ষা দেবেন তাঁরা।