Protests

নতুন বছর কেমন হবে? জানেন না পথে বসে থাকা শিক্ষকেরা, নিউ ইয়ার থেকে বাদ ‘হ্যাপি’

সত্যিই কি নতুন বছর তাঁদের পক্ষে শুভ হবে? উত্তর জানেন না কেউই। আতঙ্কিত শিক্ষকেরা তাই ‘হ্যাপি নিউ ইয়ার ২০২৫’, এই শুভেচ্ছাবার্তা থেকে ‘হ্যাপি’ বাদ দিয়েছেন।

Advertisement

আর্যভট্ট খান

শেষ আপডেট: ০১ জানুয়ারি ২০২৫ ০৫:৫১
Share:

অদম্য: ধর্মতলার ওয়াই চ্যানেলের বিক্ষোভ মঞ্চে শিক্ষকদের নববর্ষে উদযাপন। মঙ্গলবার। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক।

বর্ষবরণের উদ্‌যাপনে যখন আলোয় ভেসে যাচ্ছে পার্ক স্ট্রিট, ধর্মতলা চত্বর, তখন তার কাছেই ওয়াই চ্যানেলে বিক্ষোভ মঞ্চে শিক্ষকেরা বছরের শেষ দিনটাকে পালন করছেন ‘কালো দিন’ হিসাবে। সত্যিই কি নতুন বছর তাঁদের পক্ষে শুভ হবে? উত্তর জানেন না কেউই। আতঙ্কিত শিক্ষকেরা তাই ‘হ্যাপি নিউ ইয়ার ২০২৫’, এই শুভেচ্ছাবার্তা থেকে ‘হ্যাপি’ বাদ দিয়েছেন।

Advertisement

গত কয়েক দিন ধরে ধর্মতলার ওয়াই চ্যানেলে বসে আছেন ‘২০১৬ যোগ্য শিক্ষক-শিক্ষিকা অধিকার মঞ্চ’-এর সদস্যরা। তাঁদের দাবি, প্যানেল থেকে অযোগ্যদের বাদ না দেওয়া পর্যন্ত তাঁরা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। আগামী ৭ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্টে পরবর্তী শুনানি রয়েছে। সেই শুনানির পরেও যদি সুরাহা না হয়, তা হলে তাঁরা রাজপথ ছাড়বেন না বলে জানান শিক্ষকেরা।

মঙ্গলবার ওয়াই চ্যানেলের আলো-অন্ধকারে বিক্ষোভ মঞ্চ সাজানো হয়েছে কালো বেলুনে। স্লোগান উঠছে, ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’, ‘এই লড়াই জিতবে কে? যোগ্য ছাড়া আবার কে?’ এই শিক্ষকদের বেশির ভাগেরই ছ’বছর চাকরি হয়ে গিয়েছে। জয়নগরের একটি স্কুলের বাংলার শিক্ষক ধীতীশ মণ্ডল বলেন, ‘‘হঠাৎ আমাদের চাকরি অনিশ্চিত হয়ে যাবে, আর বছরের শেষ দিনে রাস্তায় বসে আন্দোলন করতে হবে, তা ভাবতে পারিনি। চার জন শিক্ষক নতুন বছর শুরু হতেই রাত ১২টা থেকে অনশনে বসবেন। এই অনশন বুধবার বেলা ১২টা পর্যন্ত চলবে।’’

Advertisement

শুধু শিক্ষক-শিক্ষিকারাই নন, অনেকের সঙ্গে রয়েছে শিশুসন্তানেরাও। কয়েক জন জানান, নতুন বছরের শুরুতে পরিবার ছেড়ে থাকতে চান না, তাই শীতের রাতে বাচ্চাকে সঙ্গে নিয়েই আন্দোলন করছেন। বাঁকুড়ার শিক্ষক কার্তিক মণ্ডল তাঁর স্ত্রী ও চার বছরের শিশুকে নিয়েই বসে রয়েছেন। কার্তিকের স্ত্রী সুধা বলেন, ‘‘এত দিন স্কুলে শিক্ষকতা করার পরে চাকরি অনিশ্চিত। স্বামীর পাশে থাকতে রাস্তায় বসেছি সন্তানকে নিয়েই। এই অন্ধকার কাটবে কি না, জানি না। তাই হ্যাপি নিউ ইয়ার বলতে পারছি না।’’ আবার শিক্ষিকা পৌলোমী কুণ্ডু বাড়িতে রেখে এসেছেন তাঁর শিশুকে। পৌলোমী বলেন, ‘‘অযোগ্যদের বাদ দিয়ে আমরা যারা যোগ্য, তাদের প্যানেল প্রকাশ করতে হবে। শীতে বাচ্চা অসুস্থ হয়ে পড়ার ভয়ে সঙ্গে আনিনি। নতুন বছরের শুরুতে ওর সঙ্গে থাকতে পারলাম না, এই আফশোস নিয়েও আন্দোলনে থাকছি। আমার মতো অনেক মা পথে বসে আছেন পরিবার ছেড়ে।’’

রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শহরে বেড়েছে নতুন বছর উদ্‌যাপনের হুল্লোড়। শুধু ওয়াই চ্যানেলে বিচারের দাবিতে শোনা গিয়েছে স্লোগান। মছলন্দপুরের একটি স্কুলের শিক্ষিকা স্বর্ণালী চক্রবর্তী বলেন, ‘‘কার দোষে আমাদের পরিবার ছেড়ে নতুন বছরের শুরুটা রাস্তায় কাটছে, জানি না। এমন বিষাদের নতুন বছর আগে আসেনি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement