উদয়ন গুগ (বাঁ দিকে), নিশীথ প্রামাণিক (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।
মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার জন্য বিজেপি প্রার্থীরা মিছিল করে যাচ্ছিলেন ব্লক অফিসের দিকে। সেই মিছিলের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক। পুলিশের একটি ব্যারিকেডের সামনে গিয়ে মিছিল থেমে যায়। সেখানে দায়িত্বে ছিলেন পুলিশের সাব ইন্সপেক্টর পরিমল রায়। তাঁকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সঙ্গে কানে-কানে কথা বলতে দেখা যায়। ওই পুলিশ অফিসারকে বিজেপির ‘দালাল’ তকমা দিয়ে ফেসবুকে পোষ্ট করেছেন তৃণমূল বিধায়ক তথা মন্ত্রী উদয়ন গুহ। তাঁকে ওই থানা থেকে সরিয়ে দিতে জেলা পুলিশ সুপারের কাছে দরবারও করেছেন উদয়ন।
উদয়ন ফেসবুক পোষ্টে লিখেছেন, ‘‘অন্যায় ভাবে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বহিরাগতদের নিয়ে সাহেবগঞ্জ বিডিও অফিসে মনোনয়নপত্র দাখিল করতে যান। তাঁকে বাধা দেওয়া তো দূরের কথা, সাহেবগঞ্জ থানার আধিকারিক পরিমল রায় মন্ত্রীর কানে-কানে কথা ও হাসি-মস্করা করেছেন। নির্বাচন কমিশনের অবিলম্বে এই ‘দালাল’ পুলিশকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে জেলা থেকে বের করে দেওয়া উচিত।’’ পরে উদয়ন জানান, তিনি পুলিশ সুপারের কাছে ওই ‘ভিডিয়ো ক্লিপিংস’ দিয়ে অভিযোগ জানিয়েছেন। কোচবিহারের পুলিশ সুপার সুমিত কুমার বলেন, ‘‘ওই অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
বিজেপি অবশ্য উদয়নের ওই অভিযোগ নিয়ে পাল্টা আক্রমণ করেছে। বিজেপির দাবি, ওই পুলিশ অফিসার সেখানে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রীকে আইনের কথাই বলেছেন।। আসলে নিরপেক্ষ ভাবে ভোট চান না উদয়ন। তাই ওই ধরনের অভিযোগ তুলেছেন। বিজেপির কোচবিহার দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক নিখিলরঞ্জন দে বলেন, ‘‘উদয়ন গুহ সব কিছুতেই ভূত দেখছেন। ওই পুলিশ অফিসার সৎ ও নির্ভীক। সেখানে তিনি মন্ত্রীকে জানিয়েছিলেন ব্যারিকেডের ওপাশে যাওয়া যাবে না। তিনি এ ভাবে আটকাতে পারেন না, বলে পাল্টা জানিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী। সেই সময়ে ওই অফিসার জানান, দায়িত্ব তাঁকে পালন করতে হবে। তার পরে আর কোনও কথা হয়নি।’’ কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিককে অবশ্য ফোনে পাওয়া যায়নি। হোয়াটস অ্যাপে মেসেজ করলেও কোনও উত্তর দেননি। অভিযুক্ত পুলিশ অফিসার পরিমল রায় কোনও কথা বলতে চাননি। তিনি বলেন, ‘‘এই বিষয়ে যা বলার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বলবে।’’ তাঁর সঙ্গে থাকা এক পুলিশ কর্মী দাবি করেন, সেখানে স্লোগান উঠছিল। কথা শোনা যাচ্ছিল না। তাই মন্ত্রীর কানের সামনে গিয়ে কথা বলেন ওই পুলিশ অফিসার। সেই সময় আশেপাশে কয়েক জন হাসাহাসি করেন। যদিও তা মানতে নারাজ উদয়ন। তিনি আরও অভিযোগ করেন, ওই পুলিশ অফিসার আগেও একাধিক ঘটনায় নিরপেক্ষ ছিলেন না। তৃণমূল কর্মীদের উপরে একাধিক সময়ে অত্যাচার করতে দেখে গিয়েছে তাঁকে। উদয়ন বলেন, ‘‘এক জন পুলিশ কর্মী একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলকে মদত দেবে, এ জিনিস আমরা সহ্য করব না।’’