উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ। — ফাইল চিত্র।
দলের ভিতরে থেকে যাঁরা ‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব’ চালিয়ে যাচ্ছেন, এ বার তাঁদের প্রতি হুঁশিয়ারি দিলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ। দিনহাটা ২ ব্লকের গোবরাছড়া-নয়ারহাট পঞ্চায়েতের খারিজা দশগ্রাম প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে ‘গ্রামে চলো’ কর্মসূচির সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে মন্ত্রী উল্লেখ করেন, ‘‘যাঁরা ভেটাগুড়ি যাচ্ছেন, ভাল কথা। তবে ফেরার পথে যদি রাস্তায় আপনার গাড়ি রাস্তার সঙ্গে মিশে যায়, তখন দোষ দিতে পারবেন না। আমাদের কাছে খবর আছে, তৃণমূলের কারা কারা ভেটাগুড়ির দিকে যায়।’’ উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রীর এই বক্তব্য ঘিরে রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে জোর চর্চা। দলেও গুঞ্জন শুরু হয়েছে।
দিনহাটার এক ব্লকের ভেটাগুড়িতে বাড়ি বিজেপি নেতা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের। নাম না করে নিশীথের বাড়ির কথা উল্লেখ করেছেন উদয়ন, মনে করছেন জেলা রাজনীতির পর্যবেক্ষকেরা। বিজেপির তরফেও মন্ত্রীর এই বক্তব্যকে কটাক্ষ করা হয়েছে।
এ দিন সভায় উদয়ন উল্লেখ করেন, এ বার পঞ্চায়েত ভোটে গ্রামের মানুষই প্রার্থী ঠিক করবেন। কোনও পঞ্চায়েত সদস্য মানুষের থেকে টাকা নিয়ে থাকলে, তিনি টিকিট পাবেন না। জানান, তৃণমূলের এক জনই প্রার্থী থাকবেন, একাধিক নয়। তাঁর দাবি, ‘‘আলাদা রাজ্যের কথা বলে বিজেপি মানুষকে ভাঁওতা দিচ্ছে। আলাদা রাজ্য করে ভাল হয় না। কাজেই বিজেপির কথায় ভুললে চলবে না। পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূলকে জেতাতে হবে।’’
এ দিন মন্ত্রী দিনহাটা ২ ব্লকের গোবরাছড়া-নয়ারহাট পঞ্চায়েতের বিভিন্ন এলাকায় ‘গ্রামে চলো’ কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে বেশ কয়েকটি সভা করেন। ছিলেন দলের দিনহাটা ২ নম্বর ব্লক তৃণমূল সভাপতি দীপককুমার ভট্টাচার্য, তৃণমূলের মহিলা সভানেত্রী স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান মমতাজ বেগম, দলের শ্রমিক সংগঠনের ব্লক সভাপতি মিলন সেন, আজিজার রহমান।
এ দিন বিজেপির কোচবিহার জেলা সভাপতি সুকুমার রায় বলেন, ‘‘উদয়ন গুহকে সাধারণ মানুষ পছন্দ করেন না। মন্ত্রী হয়েও তাঁকে উত্তরবঙ্গের অন্য কোথাও দেখা যায় না। বিরোধী দল, বা কখনও নিজের দলের কর্মীদের নানা ভাবে আক্রমণ করে সংবাদের শিরোনামে থাকার চেষ্টা করছেন তিনি। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে উত্তপ্ত পরিবেশ তৈরি করছেন। নির্বাচনে কোনও ঘটনা ঘটলে তার জন্য দায়ী থাকবেন মন্ত্রী।’’