মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণার পরে দু’বছর হতে চললেও শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের এলাকা বাড়ল না। বাসিন্দাদের সুবিধার জন্যে ২০২২ সালের এপ্রিল নাগাদ শিলিগুড়ির মহকুমার নকশালবাড়ি, খড়িবাড়ির বা ফাঁসিদেওয়ার মতো থানাগুলোকে কমিশনারেটে অন্তর্ভুক্ত করার কথা বলেছিলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী। পঞ্চায়েত ভোট থেকে পার করে লোকসভা এসে গেলেও সেই পরিকল্পনা বিশ বাঁও জলে বলেই মনে করছেন পুলিশের একাংশ। অফিসারেরা জানাচ্ছেন, রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতরের ঠান্ডা ঘরে পড়ে রয়েছে কমিশনারেটের এলাকা বৃদ্ধির প্রস্তাব। একমাত্র মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ ছাড়া উত্তরবঙ্গের একমাত্র কমিশনারেটের এই প্রস্তাবের বাস্তবায়ন সম্ভব নয়।
রাজ্য পুলিশের উত্তরবঙ্গের এক শীর্ষ কর্তা বলেন, ‘‘তিনটি থানা এলাকার মানুষকে পুলিশ জেলা সদরের জন্য প্রায় ১০০ কিলোমিটার যাতায়াত করতে হয়। সমতলের ওই এলাকার অফিসারদেরও নানা কাজে নিয়মিত দার্জিলিং যেতে হয়। অথচ, একই মহকুমার কয়েক কিলোমিটারের মধ্যেই কমিশনারেট এবং তার সদর দফতর রয়েছে।’’ তিনি জানান, পুলিশ কমিশনারেট তৈরির সময়ই এক সঙ্গে তা করা হলে সমস্যা মিটে যেতে। এখন পুরোটাই ফাইল ঠেলাঠেলি পর্যায়ে থেকে গিয়েছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর ২০১২ সালের অগস্টে শিলিগুড়ি ও আশপাশের এলাকার ৬৪০ বর্গকিলোমিটার নিয়ে কমিশনারেট তৈরি হয়। শিলিগুড়ি, প্রধাননগর, ভক্তিনগর, মাটিগাড়া, বাগডোগরা নিয়ে কমিশনারেট তৈরি হয়। পরে এনজেপি এবং ভোরের আলো ফাঁড়ি থেকে নতুন থানা হয়েছে। যুক্ত হয়েছে সাইবার ক্রাইম এবং মহিলা থানাও। কিন্তু একই মহকুমার ফাঁসিদেওয়া, নকশালবাড়ি এবং খড়িবাড়ি থানা পুরনো দার্জিলিং পুলিশের অধীনেই থেকে যায়। ২০২২ সালে নকশাল নেতা কানু সান্যালের বাড়ি জমি সংক্রান্ত অভিযোগ নিয়ে পুলিশকে তদন্তের নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সময় দার্জিলিং থেকে তা দেখা হয় শুনে দ্বিতীয় দফায় কমিশনারেটে তিনটি থানাকে ঢুকিয়ে দেওয়ার কথা বলেন।
রাজ্য পুলিশের তৎকালীন ডিজিকে তিনি তা দেখতে বলেন। এর পর থেকে গত এক বছর একাধিকবার প্রস্তাব, পরিকল্পনা এবং ম্যাপ কলকাতায় গিয়েছে। তিনটি থানা মিলিয়ে কমিশনারেটের চেহারা এবং তিনটি থানা বাদ দিয়ে দার্জিলিং পুলিশের থানাভিত্তিক ম্যাপিংও কলকাতা গিয়েছে। কমিশনারেটের এক কর্তায় কথায়, এক সময় পাহাড় থেকে দার্জিলিং পুলিশের এলাকা ছোট করা নিয়ে আপত্তি তোলা হয়েছিল। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পর তা বন্ধ হয়। কিন্তু কলকাতায় প্রস্তাব, নথি গেলেও তা আর এগোয়নি। লোকসভা ভোটের আগে এর আর সম্ভাবনা নেই। তেমনিই, আশিঘর, খালপাড়া ফাঁড়িকে থানায় পরিবর্তন এবং শিবমন্দিরের নতুন থানার প্রস্তাবও ঝুলে রয়েছে বলে অভিযোগ।
বাংলাদেশ, নেপাল সীমান্তবর্তী ওই তিনটি থানাকে কমিশনারেট দেখভাল করলে কাজের সুবিধা হবে বলেও পুলিশ অফিসারেরা
মনে করেন।