—নিজস্ব চিত্র।
ভোট আসে, ভোট যায়। কিন্তু জারিধরলা, দড়িবস গ্রামের ছবি বদলায় না! দুই গ্রামের তিন দিকে নদী, এক দিকে বাংলাদেশ। কার্যত বন্দিদশায় জীবন কাটে গ্রামবাসীদের। তার উপর বর্ষা এলেই ভাঙন। বার বার প্রশাসনের দ্বারস্থ হওয়া সত্ত্বেও কোনও সুরাহা হয়নি। ভোটের সময় নেতারা প্রতিশ্রুতি দিলেও নদীবাঁধ সংস্কার হয় না বলেই অভিযোগ। এই অবস্থায় উপনির্বাচন ভোট বয়কটের সিদ্ধান্ত দিলেন দুই গ্রামের বাসিন্দারা। বিষয়টি জানাজানি হতেই গ্রামবাসীদের ফের প্রতিশ্রুতি দিলেন কোচবিহারের তৃণমূল সাংসদ জগদীশচন্দ্র বর্মা বসুনিয়া। তিনি জানান, শীঘ্রই বাঁধ তৈরির কাজ শুরু হবে।
আগামী ১৩ নভেম্বর কোচবিহারের সিতাইয়ে উপনির্বাচন রয়েছে। জারিধরলা ও দড়িবস গ্রাম দু’টি ওই বিধানসভা কেন্দ্রেরই অন্তর্গত। গত শনিবার রাতে এলাকাবাসীরা নিজেদের মধ্যে একটি বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেন, ধরলা নদীর বাঁধ সংস্কার না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন না। স্থানীয় বাসিন্দা নজমালউদ্দিন বলেন, ‘‘ভোট এলে নেতারা শুধু প্রতিশ্রুতি দিয়েই হাওয়া হয়ে যায়। কাজের কাজ কিছুই হয় না। এই এলাকায় নদীভাঙনের সমস্যা দীর্ঘ দিনের। ভাঙনের ফলে চাষের জমি গিলে খাচ্ছে নদী। প্রতি বছর বর্ষায় গোটা এলাকা প্লাবিত হয়। কিন্তু কোনও সুরাহা হয় না। তাই আমরা সকলে মিলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, ভোটে অংশ নেব না। আগে বাঁধ নির্মাণ হবে। তার পর নির্বাচন।’’
জগদীশের আশ্বাস, নদীবাঁধ তৈরির প্রক্রিয়া ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে। তিনি নিজে সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়ার সঙ্গে দেখাও করেছেন। সাংসদের কথায়, ‘‘শীঘ্রই নদীবাঁধ নির্মাণ করা হবে। ইতিমধ্যে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে চিফ ইঞ্জিনিয়ার এলাকা পরিদর্শন করে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট তৈরি করেছেন। রাজ্য সরকারের সেচ দফতর এবং ব্রহ্মপুত্র বোর্ডে সেই রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে। জারিধরলার এই ভাঙন সত্যিই এলাকার মানুষকে সমস্যায় ফেলেছে। আমি সেচমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছি। চেষ্টা করব যাতে দ্রুত বাঁধ নির্মাণ করা হয়।’’
প্রসঙ্গত, জগদীশ আগে সিতাইয়েরই বিধায়ক ছিলেন। গত লোকসভা নির্বাচনে তাঁকেই কোচবিহারে প্রার্থী করেছিল তৃণমূল। তিনি জেতেনও। সেই কারণেই সিতাইয়ে উপনির্বাচন। তৃণমূল প্রার্থী করেছে সঙ্গীতা রায়কে। তাঁর বিরুদ্ধে কংগ্রেসের টিকিটে লড়ছেন হরিহর রায় সিংহ। কংগ্রেসের সঙ্গে জোট না হওয়ায় প্রার্থী দিয়েছে বামেরাও। তারা ফরওয়ার্ড ব্লকের অরুণকুমার বর্মাকে প্রার্থী করেছে। আর বিজেপির প্রার্থী দীপক রায়।