—ফাইল চিত্র।
রাঙাপানিতে চিতাবাঘ মারার তদন্ত চলাকালীনই বন আধিকারিকদের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করে এফআইআরের আর্জি জানাল দু’টি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। বুধবার রাঙাপানির ধোতিজোতে একটি স্ত্রী চিতাবাঘকে গুলি করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে বন আধিকারিকদের বিরুদ্ধে। এ দিন ঘটনাস্থলে যান তদন্তের দায়িত্বে থাকা বনকর্তা মুখ্য বনপাল (বন্যপ্রাণ) রাজেন্দ্র জাখর। গ্রামবাসীরা তাঁকে জানান, পিটিয়ে মেরে গুলি করেন বন দফতরের কর্মীরাই।
চিতাবাঘটিকে গুলি করে মারা হয়েছে এবং এর জন্য যাবতীয় গাফিলতি বন দফতরের— এই কথা বলেই শহরে প্রতিবাদ বিক্ষোভে নামে ওই দু’টি সংগঠন। এ দিন আরও এক ধাপ এগিয়ে সংগঠনের কর্মকর্তারা দাবি করেন, চিতাবাঘ উদ্ধারের পদ্ধতি দেখে মনে হয়েছে, কোনও অভিসন্ধি নিয়েই উদ্ধারে হাজির হন আধিকারিকরা। বন্যপ্রাণ নিয়ে কাজ করছে স্ন্যাপ। তার কর্ণধার কৌস্তভ চৌধুরী বলেন, ‘‘এর আগেও একই রকমের গাফিলতি লক্ষ করা গিয়েছিল জলপাইগুড়ির ডেঙ্গুয়াঝাড় এলাকায়। এ সবের দায় কে নেবে?’’ ওই সংগঠনের সঙ্গে রয়েছে লিগ্যাল এড ফোরাম। সে দিন সারুগাড়ার রেঞ্জার সঞ্জয় দত্ত ছিলেন পুরোভাগে। তাঁকেই চিতা আক্রমণ করার পর গুলি চালানো হয়। সঞ্জয়বাবু এ বিষয়ে কিছু বলতে চাননি। তিনি চিকিৎসাধীন।
অভিসন্ধির কথা মানতে চাননি তদন্তকারীরা। বিভাগীয় তদন্তের ভারপ্রাপ্ত উত্তরবঙ্গের বনকর্তা মুখ্য বনপাল (বন্যপ্রাণ) রাজেন্দ্র জাখর বলেন, ‘‘এ দিন এলাকায় গিয়ে সকলের সঙ্গে কথা বলেছি। এই মুহূর্তে বেশি কিছু বলতে পারছি না।’’ বুধবারের ওই ঘটনার পরেই একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছিল। তাতে দেখা যায়, উর্দি পরা কিছু লোক বাড়ির উঠোনে প্রথমে লাঠিপেটা করছে একটি চিতাবাঘটি এবং পরে গুলি চালাচ্ছে। সেই ভিডিয়োর সত্যতা আনন্দবাজার যাচাই করেনি। তবে সংগঠনগুলির দাবি, ভিডিয়ো থেকে পরিষ্কার, আত্মরক্ষার জন্য গুলি চালানো হয়নি। এ দিন শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনার দফতরে দায়ের হওয়া ওই অভিযোগের ভিত্তিতে একটি মামলা রুজু করা হয়েছে বলে জানান শিলিগুড়ির ভারপ্রাপ্ত ভিসি (সদর) কুঁয়র ভূষণ সিংহ।
বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ আইনের প্রথম অনুচ্ছেদভুক্ত প্রাণী চিতাবাঘ গুলি করে মারার প্রতিবাদ জানিয়েছেন পরিবেশ প্রেমী সংস্থা ন্যাফের কো-অর্ডিনেটর অনিমেষ বসু। তিনি বলেন, ‘‘ঘটনা খুবই দুঃখজনক। এর যথাযথ তদন্ত হওয়া খুব জরুরি।’’