জয়ী: অঙ্কিতা দাস (বাঁ দিকে) এবং সৌম্যজিৎ ঘোষ। নিজস্ব চিত্র
জাতীয় টেবিল টেনিসের মঞ্চের হাত ধরে ফের সাফল্যের স্বাদ পেল শিলিগুড়ি টেবিল টেনিস মহল। রবিবার হায়দরাবাদে জাতীয় টিটির আসরে বাংলার মেয়েদের জয়জয়কারের মধ্যেই কামব্যাকের আলোয় ফিরল শিলিগুড়ির মেয়ে অঙ্কিতা দাস। এ দিন সেমিফাইনালে পেট্রোলিয়াম স্পোর্টস প্রমোশন বোর্ডের কৃত্তিকা সিংহ রায়ের কাছে ৪-০ তে হেরে ব্রোঞ্জ নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হল তাঁকে। এ দিনই পদক জিতেছেন শিলিগুড়ি আর এক কৃতী সৌম্যজিৎ ঘোষ। তবে সৌম্যজিৎ খেলেছেন হরিয়ানার হয়ে আর অঙ্কিতা খেলেছেন বাংলার বি দলের হয়ে। দু’জনেই ২০১২ সালে লন্ডন অলিম্পিকে ভারতের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন।
২০১৩তে সিনিয়র বিভাগে জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হন অঙ্কিতা। ২০১৫তে সুরাতে কমনওয়েলথে সোনা পান তিনি। ওই বছরই নভেম্বরে অঙ্কিতার বাবা মারা যান। খেলার ব্যাপারে বাবার উৎসাহ, সহযোগিতা বড় সহায় ছিল অঙ্কিতার। ২০১৬ সালে অঙ্কিতা ভাল পারফরম্যান্স করতে পারেননি। ২০১৭তে জাতীয় প্রতিযোগিতায় কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে ছিটকে গিয়েছিলেন। তারপরের বছর নর্থ জ়োনাল খেলতে গিয়ে পায়ের লিগামেন্টে গুরুতর চোট পান অঙ্কিতা। যার ফল গত বছর কোনও জাতীয় প্রতিযোগিতায় অংশই নিতে পারেনি। জাতীয় র্যাঙ্কিংয়ে নেমে গিয়েছিলেন ৩০ নম্বরে। সেখান থেকে লড়াইয়ে ফিরে জাতীয় স্তরে অঙ্কিতার ব্রোঞ্জ জেতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন ক্রীড়া বিশেষজ্ঞরা।
তাঁর কাছে এই পদক যে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ সেটা স্বীকার করেছেন শিলিগুড়ির ওয়াইএমএ ক্লাবের খেলোয়াড় অঙ্কিতাও। তিনি বলেন, ‘‘বাঁ পায়ে হাঁটুর কাছে লিগামেন্টে চোটের পরে অনেক পিছিয়ে পড়েছিলাম। সেটা কাটিয়ে উঠতে একটা ভাল ‘ব্রেক’ পেলাম। এই সাফল্য ধরে রাখার চেষ্টা করব।’’ জাতীয় কোচ অর্জুন পুরস্কারপ্রাপ্ত মান্তু ঘোষ বলেন, ‘‘এটা ওর মতো খেলোয়াড়ের কাছে অবশ্যই একটা বড় ব্যাপার। ওকে আরও ভাল জায়গায় ফিরতে এটা অনেক সাহায্য করবে বলেই আমার বিশ্বাস।’’
কামব্যাক হয়েছে সৌম্যজিতেরও। ২০১৭তে সালে জাতীয় প্রতিযোগিতায় রুপো পেয়েছিলেন তিনি। এরপর নানা অভিযোগ ঘিরে টিটিএফআই সাসপেন্ড করেছিল তাঁকে। খেলতে পারেননি এক বছর। এ বার ব্যক্তিগত বিভাগে এই সাফল্যে সৌম্যজিৎ খুশি। তিনি বলেন, ‘‘আন্তর্জাতিক স্তরে সাফল্য আসছিল। জাতীয় প্রতিযোগিতার আসরে গত কয়েক বছর সাফল্য মিলছিল না। এ বার সেটা কাটল।’’
এ দিন মেয়েদের মধ্যে জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হয়েছে কলকাতার সুতীর্থা মুখোপাধ্যায়। তিনিও হরিয়ানার হয়ে খেলেছেন। ফাইনালে সুতীর্থা হারিয়েছেন কলকাতার মেয়ে কণিকা মুখোপাধ্যাকে। কণিকা রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার হয়ে খেলেছেন।