জয়িতা দেবনাথ ও সৌমিতা সেন। — নিজস্ব চিত্র।
এক জন আমদাবাদে অনুষ্ঠিত জাতীয় শিশু বিজ্ঞান কংগ্রেসে অংশ নিয়েছে। সুযোগ পেয়েছে শ্রীহরিকোটায় ‘ইসরো’র কর্মশালাতেও। সেখানে তার নিজের হাতে তৈরি ‘মিনি রকেট’ শূন্যে ওড়ানো হয়। অন্য জন ক্যারাটেতে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার মঞ্চে জোড়া পদক জিতেছে। কোচবিহারের এমনই দুই কৃতী ছাত্রী এ বার কলকাতায় রাজ্য স্তরের কন্যাশ্রী দিবসের অনুষ্ঠানে পুরস্কৃত হবে। আজ, সোমবার কলকাতার নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে ওই অনুষ্ঠান হবে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের ওই অনুষ্ঠানে থাকার কথা রয়েছে। ইতিমধ্যে জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় দুই ‘সেরা’ কন্যাশ্রী জয়িতা দেবনাথ ও সৌমিতা সেন কলকাতায় পৌঁছেছে। কোচবিহারের জেলাশাসক পবন কাদিয়ান বলেন, “কন্যাশ্রী দিবসে রাজ্য স্তরের অনুষ্ঠানে জেলার দুই ছাত্রী পুরস্কার পাচ্ছে।”
প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, জয়িতা দেবনাথের বাড়ি কোচবিহার ২ ব্লকের পুন্ডিবাড়ি এলাকায়। সে পুন্ডিবাড়ি জিডিএল গার্লস হাইস্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী। গত মে মাসে শ্রীহরিকোটায় ‘ইসরো’র যুব বিজ্ঞান কার্যক্রমে (যুবিকা) অংশ নিয়েছে জয়িতা। তার আগে, জাতীয় শিশু বিজ্ঞান উৎসবেও অংশ নেয়। ‘খুদে’ বিজ্ঞানী হিসাবেও এখন তাকে এলাকায় অনেকে চেনেন। অন্য দিকে, দিনহাটা ২ ব্লকের কিসামত করলা গ্রামে বাড়ি সৌমিতা সেনের। ক্যারাটে প্রতিযোগিতায় বহু পদক তার ঝুলিতে। গত নভেম্বরে গোয়ায় অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক ক্যারাটে প্রতিযোগিতায় একটি রুপো ও ব্রোঞ্জ পদক জিতেছে নয়ারহাট হাইস্কুলের দ্বাদশ শ্রেণির ওই ছাত্রী।
বিজ্ঞান চর্চা থেকে খেলাধূলো— দুই ক্ষেত্রে নজরকাড়া সাফল্যের নিরিখে ওই পুরস্কার পাচ্ছে জেলার ওই কন্যাশ্রীরা। কন্যাশ্রী দিবসে রাজ্য স্তরের পুরস্কার প্রাপ্তিতে খুশি দু’জনেই। কলকাতা থেকে মোবাইলে জয়িতার বক্তব্য, “আমি ভীষণ খুশি। আমার বিজ্ঞান চর্চায় উৎসাহ আরও বাড়িয়ে দেবে ওই পুরস্কার।”
সৌমিতার কথায়, “ভীষণ ভাল লাগছে।” পুন্ডিবাড়ি জিডিএল হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষিকা রীতা ভট্টাচার্য বলেন, “ছাত্রীর সাফল্যে আমরাও দারুণ খুশি। এতে অন্যরাও উৎসাহিত হবে।” ওই স্কুলের বিজ্ঞানের শিক্ষিকা, জয়িতার ‘গাইড টিচার’ আরাধনা আচার্য বলেন, “পাট পচানোর পরে, ফেলে রাখা জলাশয়ের বাস্তুতন্ত্র ও জলের ব্যবহার নিয়ে জয়িতা সমীক্ষা করেছিল। পরীক্ষামূলক ভাবে স্কুলে ওই জল দিয়ে ট্রে-তে ধান, লাউ, রসুন চাষ করা হয়। রাসায়নিক সারের মতো প্রায় সমতুল্য ফলন হয়েছে। ওই বিষয়টিই রাজ্য শিশু বিজ্ঞান কংগ্রেসেও নজর কাড়ে। জাতীয় স্তরে মনোনীত হয়।”
সৌমিতার প্রশিক্ষক বিক্রমাদিত্য বর্মণ বলেন, “২০১৮ সাল থেকে শোতোকান ক্যারাটে শিখছে সৌমিতা। আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় গোয়ায় ‘কাতা’ বিভাগে সে রুপো পায়, ‘কুমিতে’ বিভাগে জেতে ব্রোঞ্জ। ওকে দেখে, অনেক ছাত্রী ক্যারাটে শিখছে। মেয়েদের আত্মরক্ষার পাঠ, আত্মবিশ্বাস বাড়াতে ক্যারাটে শেখা জরুরি।” দিনহাটার নয়ারহাট হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক তাপস সরকার বলেন, “কলকাতা থেকে ফিরলে, ওকে স্কুলে সংবর্ধনা দেওয়া হবে।”