অগ্নিগর্ভ অসম। ফাইল চিত্র
নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলকে ঘিরে অসমের উত্তপ্ত পরিস্থিতির জেরে এবার অত্যন্ত সতর্ক আলিপুরদুয়ার ও কোচবিবহার জেলার প্রশাসনিক কর্তারা। গোলমালের জেরে প্রতিবেশী রাজ্য থেকে কারও চলে আসার সম্ভাবনা তৈরি হলে কী করা হবে, তা নিয়ে কোচবিহার জেলা প্রশাসনের অন্দরে ইতিমধ্যেই ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে। অসম পরিস্থিতি নিয়ে রাজ্যের তরফে কোনও নির্দেশ আসে কিনা সেই অপেক্ষায় আলিপুরদুয়ার জেলা প্রশাসনের কর্তারাও।
লোকসভায় ওই বিলটি পাশ হওয়ার পর থেকেই উত্তপ্ত অসম। শুরু হয়েছে ধর্মঘট। যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ। ট্রেন চলাচলেও সমস্যা তৈরি হয়েছে। এই অবস্থায় আতঙ্ক তৈরি হয়েছে নমনি অসমেও। অবস্থা বুঝতে পেরে ইতিমধ্যেই অসম সীমান্ত বক্সিরহাটে নজরদারি বাড়িয়ে দিয়েছে পুলিশ। তল্লাশি চালানোর পাশাপাশি সাদা পোশাকের পুলিশও সীমানা লাগোয়া এলাকায় নেমেছে। কোচবিহার জেলা পুলিশ সুপার সন্তোষ নিম্বালকর বলেন, “অসম সীমানায় নজরদারি রয়েছে।”
নিরাপত্তা কঠোর করা হয়েছে আলিপুরদুয়ারের অসম সীমানাতেও। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘আলিপুরদুয়ার লাগোয়া অসমের জেলাগুলিতে খুব বেশি গোলমাল নেই ঠিকই। কিন্তু আমরা কোনও ঝুঁকি নিতে চাইছি না।’’ আলিপুরদুয়ারের পুলিশ সুপার নগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠী বলেন, ‘‘সীমানায় নজরদারি বৃদ্ধির পাশাপাশি বাড়তি পুলিশও মোতায়েন করা হয়েছে।’’
অসম পরিস্থিতি কোন দিকে যাচ্ছে, সেদিকে নজর রাখছে দুই জেলা প্রশাসনই। অসমের কোনও জেলায় উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হলে তার ধাক্কা যে এদিকেও আসতে পারে সে ব্যাপারেও ওয়াকিবহাল দুই জেলার প্রশাসনই। আগে কয়েক দফায় এমন পরিস্থিতি তৈরিও হয়েছিল। বিশেষ করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কোচবিহার সফরে একাধিকবার আশ্বাস দিয়ে গিয়েছেন, নাগরিক পঞ্জির জন্য কোনও বাঙালি বা অন্য যে কোনও রাজ্যের মানুষ অসুবিধেয় পড়লে তাঁদের আশ্রয় দেবে বাংলা। সেই কথা মাথায় রেখেই কোচবিহার জেলার প্রশাসনিক কর্তারা একাধিক ভাবনা ভেবে রেখেছেন। জরুরি মুহূর্তে সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। কোচবিহার জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, “ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” আলিপুরদুয়ার জেলা পরিষদের মেন্টর মোহন শর্মাও বলেন, ‘‘প্রশাসন অসমের পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে। রাজ্য থেকে প্রশাসনের কাছে কোন নির্দেশ এলে সেই মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’