চাপা: ধসের তলায় গাড়ি। নিজস্ব চিত্র
টানা বৃষ্টি আর ধসের জেরে বিপর্যস্ত পাহাড়। দার্জিলিং, কালিম্পংয়ের পাহাড় এলাকায় জোর বৃষ্টি হয়েছে। একই পরিস্থিতি সিকিমেও। বৃষ্টির দাপটে সমতলের জনজীবনও বিপর্যস্ত। এর মধ্যে ধসে চাপা পড়ে মারা গিয়েছেন দু’জন। রবিবার গভীর রাতে দার্জিলিং সদর থানার সুখিয়াপোখরির পুবংফাটকের ঘটনা। পাহাড় থেকে মাটি, কাদা পাথর নেমে ওই এলাকার দু’টি বাড়ি চাপা পড়ে। রাতেই পুলিশ, দমকল এলেও কাউকে বাঁচানো যায়নি।
পুলিশ সূত্রের খবর, মৃতের নাম কুমার লোপচান (৬০) এবং তাঁর স্ত্রী বালকুমারী লোপচান (৫৫)। রাতে তাঁরা তাঁদের কাঠের বাড়িতে শুয়েছিলেন। রাত আড়াইটার পরে বাড়িটির পিছনের অংশ থেকে হুড়মুড়িয়ে মাটি, কাদা, পাথর নেমে এসে বাড়িটি চাপা দেয়। বাড়ির সামনে গ্যারাজে রাখা একটি গাড়িও চাপা পড়ে। রাতেই দু’জনকে জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন।
সোমবার সকালে ওই এলাকায় যান জিটিএ চেয়ারম্যান অনীত থাপা। শুরু হয় ধস সারানোর কাজ। ধসের জেরে রবিবার রাতে একটি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কার্শিয়াংয়েও। শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিং ও কালিম্পং যাওয়ার রাস্তায় ছোট ছোট ধস পড়েছে। যদিও রাস্তা খোলা রয়েছে। ডিএইচআর কর্তৃপক্ষ সূত্রে খবর, সোমবার সকালে দার্জিলিঙের ছোট কাকঝোরা, বক্সিঝোরা এবং বাতাসিয়া এলাকায় টয়ট্রেনের লাইনে ধসে ক্ষতি হয়েছে। সোমবার এনজেপি থেকে দার্জিলিংগামী একটি টয়ট্রেন কার্শিয়াং অবধি গিয়েছে। বাকি সব টয়ট্রেনের সূচি বাতিল হয়েছে। ধস সরিয়ে চলছে মেরামতি। কালিম্পঙের ১০ মাইলে বৃষ্টিতে ঝোরা এবং পাহাড় থেকে জল নেমে এসে বন্যার মত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। বাসিন্দাদের অভিযোগ, বিভিন্ন নর্দমা-ঝোরার পথ আটকে ঘরবাড়ি তৈরি করায় জল জমে যায়।
আবহাওয়া দফতরের অফিসারেরা বলছেন, এই এলাকার উপর গভীর নিম্নচাপ তৈরি হয়েছে। তাতে ভরা বর্যার পরিস্থিতি আরও কয়েকদিন চলতে পারে। বিপর্যয় মোকাবিলা দল তৈরি রেখেছে প্রশাসন। দার্জিলিঙের জেলাশাসক দীপাপ প্রিয়া বলেন, ‘‘সুখিয়াপোখরিতে ধসের জেরে স্বামী-স্ত্রী দু’জনের মৃত্যুর খবর পেয়েছি। বাকি জায়গার উপর নজর রাখা হচ্ছে।’’ বিজনবাড়ি, রিম্বিক, লোধামা, রেলিং, মেরিবং, ডালি, ঘুম, কোঠিধুরা, মংপং, কিরণে, মেরিভিলার রাস্তায় ছোটছোট ধসে যানজট হয়েছে। কোথাও কোথাও রাস্তা ২-৩ ঘণ্টা বন্ধ ছিল। পরে ধস সরিয়ে রাস্তা খোলা হয়। হরসিং এলাকাতেও একটি রাস্তা ধসে গিয়েছে। সিকিমেরও বিভিন্ন প্রান্তে গত ২৪ ঘণ্টা টানা বৃষ্টি হয়েছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টায় একই পরিস্থিতি থাকবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর।