প্রতিবাদী: দুই বন্ধু। নিজস্ব চিত্র
‘নয়া নাগরিকত্ব আইন সংবিধান বিরুদ্ধ। ভারত ধর্মনিরপেক্ষ দেশ। কিন্তু এই আইন তাতেই আঘাত করেছে। অন্য সমস্যা থেকে মানুষের দৃষ্টি ফেরাতেই এই আইন করা হয়েছে। এই আইন বাতিল করতে হবে।’—এই দাবিতেই এ বার অনির্দিষ্টকালের জন্য পথে বসলেন দুই কলেজ পড়ুয়া।
সোমবার দুপুরে মালদহের সামসিতে ৮১ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে ত্রিপল পেতে প্ল্যাকার্ড হাতে দুই পড়ুয়াকে বসে থাকতে দেখা যায়। ওই দুই পড়ুয়ার একজন আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি অনার্সের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র শাহিদুল ইসলাম আর অন্যজন হলেন জুলমত আলি। তিনি চাঁচল কলেজের ইংরেজি অনার্সের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। যতদিন না ওই আইন বাতিল হচ্ছে ততদিন তাঁদের অবস্থান চলবে বলে জানান শাহিদুল ও জুলমত। তবে শুধু কেন্দ্র সরকার নয়, রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধেও অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন দুই পড়ুয়া।
চাঁচলের মহকুমাশাসক সব্যসাচী রায় বলেন, ‘‘বিষয়টি নিয়ে পুলিশের সঙ্গে কথা বলছি।’’ আর চাঁচলের এসডিপিও সজলকান্তি বিশ্বাস বলেন, ‘‘ওসিকে বিস্তারিত খোঁজ নিয়ে রিপোর্ট দিতে বলেছি।’’
সাম্প্রতিক বক্তব্যের জন্য বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে গ্রেফতারের দাবি তুলেছেন তাঁরা। তাঁদের আরও ক্ষোভ, এ ধরনের মন্তব্যের পরও কেন তাঁর বিরুদ্ধে রাজ্য সরকার পদক্ষেপ করছেন না। আর রাজ্য সরকার ছাত্রদের পাশে থাকার কথা বললেও তা মানা হচ্ছে না বলেই অভিযোগ তাঁদের।
শাহিদুল জানান, সুজাপুরে সাম্প্রতিক ঘটনার পর পুলিশ নিরীহদের ধরছে, যাঁদের অনেকে পড়ুয়া। যাদবপুরেও ছাত্রদের উপর হামলা করা হয়েছিল বলে অভিযোগ করে তাঁদের বার্তা, ছাত্রদেরই রুখে দাঁড়াতে হবে। আর তাই আন্দোলনের সিদ্ধান্ত বলে জানান তাঁরা।
হরিশ্চন্দ্রপুরের বরনাহীর বাসিন্দা শাহিদুল ও মোহনপুরের জুলমত বন্ধু। ৮১ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে ওই এলাকায় গিয়ে দেখা গেল ফুটপাথে মাথার উপরে ছাউনি নেই। এ দিন শাহিদুল বলেন, ‘‘আইন বাতিল না হলে এখানেই মরে যাব কিন্তু আন্দোলন ছাড়ব না।’’ আর জুলমতের দাবি, আর কেউ সমর্থন করুন বা নাই করুন, তাঁরা দু’জনেই আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। তাঁর এ কথারই প্রতিধ্বনি শোনা যায় শাহিদুলের ফেসবুক স্ট্যাটাসেও। যেখানে লেখা আছে, ‘যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চলো রে।’
এই নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে এ দিন ইংরেজবাজারের বুধিয়া হাই মাদ্রাসার পড়ুয়ারাও পথে নামে। পা মেলান শিক্ষকেরাও।