মায়ের প্রেম, মরতে হল শিশুকে

তুফানগঞ্জ পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, নাককাটিগছ গ্রাম পঞ্চায়েতের ব্যাপারিপাড়ার রসিদুল হক তুফানগঞ্জ থানায় হঠাৎই স্ত্রী মনোয়ারা বিবির বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে জানান, মনোয়ারা তাঁদের এক বছর চার মাসের পুত্র সন্তান মোস্তাফাকে খুন করেছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

তুফানগঞ্জ শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০১৯ ০৫:১৭
Share:

প্রতীকী ছবি।

ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে কবর থেকে মৃতদেহ তুলে ময়নাতদন্তের জন্য দেহ পাঠাল তুফানগঞ্জ থানার পুলিশ। আর শিশু সন্তানকে খুনের অভিযোগ দায়ের হল মায়ের নামে। অভিযোগ দায়ের করলেন খোদ বাবা। ঘটনাটি তুফানগঞ্জ থানা নাককাটিগছ গ্রাম পঞ্চায়েতের ব্যাপারিপাড়া এলাকার।

Advertisement

তুফানগঞ্জ পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, নাককাটিগছ গ্রাম পঞ্চায়েতের ব্যাপারিপাড়ার রসিদুল হক তুফানগঞ্জ থানায় হঠাৎই স্ত্রী মনোয়ারা বিবির বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে জানান, মনোয়ারা তাঁদের এক বছর চার মাসের পুত্র সন্তান মোস্তাফাকে খুন করেছেন। কিন্তু হঠাৎ এমন অভিযোগের কারণ কী? স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত সোমবার মোস্তাফার অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়। বাড়ির পিছনে ডোবায় তার মৃতদেহ ভাসতে দেখা যায়।

স্থানীয়দের দাবি, তার আগে থেকেই অবশ্য মনোয়ারা বিবি কান্নাকাটি শুরু করে দেন, ছেলে পুকুরে ভেসে গিয়েছে। তাঁর কথা শুনে অনেকেরই মনে হয়, খেলতে গিয়ে হয়তো শিশুটি পুকুরে পড়ে যায় এবং ডুবে যায়। মৃতদেহ উদ্ধারের পর সে দিনই মোস্তাফার শেষকৃত্যও হয়ে যায়।

Advertisement

পরিবার সূত্রে দাবি, এর পরেই মনোয়ারার চালচলনে কিছু অসঙ্গতি নজরে আসে তাঁদের। মনোয়ারা বাপের বাড়িতে খবর গেলে তাঁর মা ও বাবা আসেন। পরিবারের দাবি, শুক্রবার দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের পর মনোয়ারা স্বীকার করেন, বিয়ের আগে থেকেই অন্য এক জনের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিল এবং এই সম্পর্কের জন্যই নিজের সন্তানকে খুন করেছেন তিনি। এর পরে শুক্রবার স্থানীয়রা তুফানগঞ্জ থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে মনোয়ারাকে গ্রেফতার করে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে তার স্বামী রসিদুলকে।

এর মধ্যে শুক্রবার রাতে রসিদুল লিখিত অভিযোগ জানান পুলিশকে। তার ভিত্তিতে তুফানগঞ্জ থানার পুলিশ শনিবার সকালে ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে কবর থেকে শিশুটির দেহ তুলে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায় কোচবিহারে।

তুফানগঞ্জ মহকুমার এসডিপিও জ্যাম ইয়াং জিম্বা জানান, রসিদুলের লিখিত ময়নাতদন্তের সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেই মতো দেহ তুলে পাঠানোও হয়েছে। ময়নাতদন্ত হলেই জানা যাবে, মৃত্যুর প্রকৃত কারণ কী। কিন্তু একটা খটকা রয়েই গিয়েছে। যদি মানোয়ারা শিশুটিকে জলে ডুবিয়ে খুন করে থাকেন, তা হলে সেটা ময়নাতদন্ত থেকে প্রমাণ হবে কী করে? এই নিয়ে অবশ্য কিছু বলতে চায়নি পুলিশ বা স্থানীয় লোকজনেরা। তাঁদের শুধু একটাই কথা, বেঘোরে মরতে হল দুধের শিশুটিকে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement