বাংলাদেশে আটকে পড়া ট্রাক চালকরা চ্যাংরাবান্ধা সীমান্ত দিয়ে ফিরলেন।
পাথর-বোঝাই ট্রাক বাংলাদেশ নিয়ে গিয়ে আটকে পড়েছিলেন ৩২ জন চালক। দিন কয়েক প্রচণ্ড সমস্যায় থাকতে হয় তাঁদের। সোমবার বাংলাদেশে ট্রাক রেখেই ফিরলেন তাঁদের ১৮ জন। বাকিদের ফেরানোর বন্দোবস্ত হয়েছে।
ট্রাক চালক পবন সিংহ বলেন, ‘‘হোটেল বন্ধ। খাবার নেই কোথাও। থাকার জায়গা নেই। পার্কিংয়ে গাড়ি রেখে সেখানেই ছিলাম। খুব কষ্ট হয়েছে।’’ আরও এক ট্রাক চালক আব্দুল মালেক বলেন, ‘‘মনে হচ্ছিল, কয়েক দিন যেন জেলখানায় রয়েছি। নিজের দেশে ফিরে মুক্ত লাগছে।’’ ওই চালকেরা জানান, গত বৃহস্পতিবার তাঁরা বাংলাদেশে পৌঁছন। কিন্তু সে দেশের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে তাঁদের যোগাযোগ হয়নি। তাঁরা অনেক বার যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। এর পরে তাঁরা বাংলাদেশের শুল্ক দফতরের পার্কিংয়ে গাড়ি রাখেন। তার পরেই শুরু হয় বাড়ি ফেরার অপেক্ষা। ভারতের ব্যবসায়ীরা প্রয়োজনীয় নথিপত্র জমা দেওয়ার পরেই ওই চালকদের ফিরিয়ে আনার অনুমতি মেলে।
এই বিষয় নিয়ে ‘চ্যাংরাবান্ধা এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর সভাপতি মনোজ কানু বলেন, ‘‘পরিস্থিতি কবে স্বাভাবিক হবে তা বোঝা যাচ্ছে না। এ সবের জেরে ব্যবসায় বড় ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে। প্রতিদিন কয়েক কোটি টাকার বাণিজ্য হয় ওই পথে। তা বন্ধ হয়ে রয়েছে। ট্রাক চালকেরা ফিরতে পেরেছেন, এটা বড় স্বস্তির।’’
গত বৃহস্পতিবার চ্যাংরাবান্ধায় বাণিজ্য-পথ খোলা ছিল। ওই দিন থেকেই বাংলাদেশে অশান্তি বাড়তে থাকে। এর পরেই বাণিজ্য-পথ বন্ধ হয়ে যায়।
বাংলাদেশ থেকেও ছাত্রছাত্রীরা ফিরতে শুরু করেন। রবিবার সাড়ে পাঁচশো জন ছাত্রছাত্রী ফিরেছেন। এ দিন আরও তেরো জন ছাত্রছাত্রী ফেরেন। তাঁদের মধ্যে ১২ জন নেপালের বাসিন্দা এবং এক জন ভারতীয়। তাঁরা ঢাকার সমভিটা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ছাত্রছাত্রী।
মাথাভাঙা ২ ব্লকের প্রেমেরডাঙার কালপানি গ্রামের সৌরভ আলম বাংলাদেশের রংপুর কমিউনিটি মেডিক্যাল কলেজের তৃতীয় বর্ষের পড়ুয়া। চার দিন ছাত্রাবাস থেকে বেরোতে পারেননি।
রবিবার সকালে চ্যাংরাবান্ধা হয়ে বাড়িতে ফেরেন তিনি। সৌরভ জানান, মহরমের পর থেকে ছাত্র আন্দোলনের জেরে পরিস্থিতি খারাপ হতে থাকে। কলেজ বন্ধ হয়ে যায়। ছাত্রাবাস ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। ইন্টারনেট পরিষেবাও বন্ধ করে দেওয়া হয়। তিনি বলেন, ‘‘পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। আতঙ্কের মধ্যে সেখানে চার দিন কাটিয়েছি। ভারতীয় দূতাবাস আমাদের সাহায্য করেছে। কলেজ কর্তৃপক্ষও পাশে ছিলেন।’’
তথ্য সহায়তা: তাপস পাল