তৃণমূল-বিজেপি সংঘাতে ত্তপ্ত গঙ্গারামপুর

বিজেপি ও তৃণমূল নেতাকর্মীদের একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগে রবিবার উত্তপ্ত হল দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুর। এদিন সকাল ১০ নাগাদ শহরের ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাদিঘাট এলাকার ঘটনা। ওই ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী অমলেন্দু সরকারের নেতৃত্বে শাসক দলের কর্মীদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী কানাই বিশ্বাস সহ মোট চার জনের উপর হামলা চালিয়ে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গঙ্গারামপুর শেষ আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০১৫ ০২:৩৫
Share:

বিজেপি ও তৃণমূল নেতাকর্মীদের একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগে রবিবার উত্তপ্ত হল দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুর। এদিন সকাল ১০ নাগাদ শহরের ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাদিঘাট এলাকার ঘটনা। ওই ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী অমলেন্দু সরকারের নেতৃত্বে শাসক দলের কর্মীদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী কানাই বিশ্বাস সহ মোট চার জনের উপর হামলা চালিয়ে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠেছে। হামলায় গুরুতর জখম বিজেপি সমর্থক পরেশ রবিদাসকে গঙ্গারামপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। তাঁর কাছ থেকে আগ্নেয়াস্ত্র পাওয়া গিয়েছে অভিযোগে পরেশবাবুকে পুলিশ গ্রেফতারও করেছে। পরেশবাবুর সঙ্গেই ছিলেন প্রার্থী কানাই বিশ্বাস সহ বিজেপির আরও তিন নেতাকর্মী। তাঁদেরও পুলিশ আটক করেছিল, পরে ছেড়ে দেওয়া হয়।

Advertisement

পুলিশ পরেশবাবুকে গ্রেফতার করে গঙ্গারামপুর হাসপাতালে ভর্তি করে। খবর পৌঁছতেই বালুরঘাট থেকে বিজেপির জেলা নেতারা গঙ্গারামপুর থানায় ছুটে যান। বিজেপির জেলা সভাপতি গৌতম চক্রবর্তী অভিযোগ করেন, ‘‘তৃণমূলই আমাদের প্রার্থী ও কর্মীদের উপর হামলা করে। উল্টে জখম কর্মী পরেশের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র ধরিয়ে দিয়ে তৃণমূল কর্মীরা তাঁকে পুলিশের হাতে তুলে দেন।’’ বিজেপির দাবি, অমলেন্দুবাবুর নেতৃত্বেই হামলা চালানো হয়েছিল। পরেশবাবুকে ফাঁসানো হয়েছে। সে বিষয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ করা হলেও পুলিশ উল্টে প্রহৃত দলের প্রার্থী সহ তিন জনকে ধরে নিয়ে যায়। বিজেপির জেলা নেতৃত্ব এ দিন এই বিষয়টি নিয়ে গঙ্গারামপুর থানায় গিয়েও সরব হন।

ঘটনাচক্রে ওই সময় পুরভোটে স্ট্রংরুম ও পুলিশি ব্যবস্থা খতিয়ে দেখতে গঙ্গারামপুর থানায় উপস্থিত ছিলেন ডিআইজি সত্যব্রত মজুমদার, পুলিশ সুপার শীশরাম ঝাঝারিয়া, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এস সালভে মুরাগন সহ পদস্থ পুলিশ অফিসারেরা। পরে বিজেপি প্রার্থী সহ আটক ওই তিন জনকে থানা থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। পুলিশ সুপার বলেন, ‘‘অভিযোগের ভিত্তিতে আগ্নেয়াস্ত্র সহ একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। দু’তরফের অভিযোগই খতিয়ে দেখতে তদন্ত শুরু হয়েছে।’’ বিজেপির অভিযোগ সম্পর্কে তৃণমূল জেলা সভাপতি তথা পরিষদীয় সচিব বিপ্লব মিত্র বলেন, ‘‘ঘটনার কথা জানা নেই। তবে পরিস্থিতি যা, তাতে কর্মীরা অযথা কেন গন্ডগোল করতে যাবে? বিরোধীরা মিথ্যা অভিযোগ করছে।’’

Advertisement

গঙ্গারামপুরে পুরভোট আগামী ২৫ এপ্রিল। তার আগে শেষ রবিবারের প্রচারে সব দল জোর দেবে এটাই স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু এদিন সকাল থেকে এলাকাগুলিতে প্রচারে তৃণমূলের প্রার্থী থেকে কর্মী সমর্থকদের ভিড়, শিক্ষকদের মিছিল দেখা গেলেও সিপিএমের কোনও প্রার্থী এবং কর্মীকে রাস্তা ও মহল্লায় দেখা যায়নি। বরং এদিন সকালে ওই গন্ডগোলের খবর ছড়িয়ে পড়তে বিরোধী শিবির আরও গুটিয়ে যায় বলে অভিযোগ।

এদিন থানার সামনে দাঁড়িয়ে ওই এলাকার বিজেপি সমর্থক বৃন্দাবন ঘোষ অভিযোগ করেন, সকাল ১০টা নাগাদ প্রচারে নামার আগে পাড়ার চায়ের দোকানে দলীয় প্রার্থী কানাইবাবু সহ কয়েকজন চা খাচ্ছিলেন। সে সময় তৃণমূল প্রার্থী অমলেন্দুবাবুর নেতৃত্বে অন্তত ৩০ জনের একটি দল হামলা চালায়। তিনি বলেন, ‘‘পরেশবাবুকে বেধড়ক মারধর করা হয়। মারাত্মক আঘাতে লুটিয়ে পড়লে তার হাতে একটি পিস্তল গুঁজে দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।’’ তাঁর দাবি, ‘‘যাঁদের হামলায় মার খেয়ে আমাদের প্রার্থী কর্মীরা আক্রান্ত হলেন, পুলিশ তাঁদের ধরল না। উল্টে মিথ্যা আগ্নেয়াস্ত্রের মামলা দিয়ে আমাদের এক কর্মীকে গ্রেফতার করল।’’

বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক মানস সরকারের অভিযোগ, গত মাসের ৩০ তরিখে ৬ নম্বর ওয়ার্ডের পিডব্লিউডি পাড়ায় দলের নেতা বিশ্বজিৎ কুন্ডুর বাড়িতে প্রার্থীদের নিয়ে কর্মিসভায় তৃণমূল নেতা তথা প্রার্থী অমলেন্দুবাবু দলবল নিয়ে বাড়িতে ঢুকে হামলা চালান। সে সময় অমলেন্দুবাবু সহ ৪ জন তৃণমূল কর্মীর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। পুলিশ ওই ঘটনার পর অভিযুক্ত তৃণমূল নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। ফলে আরও সাহস পেয়েছেন অমলেন্দুবাবুরা। তৃণমূলের প্রাক্তন শিক্ষক নেতা তথা ২ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী অমলেন্দুবাবুর পাল্টা অভিযোগ, ‘‘বিজেপি সমাজবিরোধীদের নিয়ে প্রচার করছিল। জনতাই প্রতিরোধ করে আগ্নেয়াস্ত্র সহ অভিযুক্তকে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement