রুমা রেশমি এক্কা। — নিজস্ব চিত্র।
দেশে প্রথম আদিবাসী সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি দ্রৌপদী মুর্মুকে রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী করেছে বিজেপি। তা নিয়ে আলোচনার মধ্যেই আলোর বৃত্তে তৃণমূলের আদিবাসী প্রার্থী। শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদ নির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী হয়েছেন রুমা রেশমি এক্কা। তবে তাঁর আরও একটা পরিচয় রয়েছে। তিনি অভিনেত্রী। ওঁরাও জনজাতির ওই তরুণী রেশমি বাংলার পাশাপাশি সাদরি ভাষার ছবিতে কাজ করেছেন। তবে ভোটপ্রচারে নেমে সিনেমা নয়, রাজনীতির সংলাপই শোনা যাচ্ছে রেশমির গলায়।
আগামী ২৬ জুন নির্বাচন। তার আগে এখন ব্যস্ততা তুঙ্গে রেশমির। বাড়ি ফাঁসিদেওয়া ব্লকের খারুভাঙা এলাকায়। ২০০৭ সালে শিলিগুড়ির জ্যোৎস্নাময়ী বালিকা বিদ্যালয়ে থেকে পড়াশোনা শেষ করে রেশমি ভর্তি হয়েছিলেন শিলিগুড়ি কলেজে। সেখান থেকে পাশ করে ২০১৫ সালে তিনি বারাণসীতে যান স্নাতকোত্তর স্তরে ভরতনাট্যম নিয়ে পড়াশোনা করতে। এর পর ফিল্ম নিয়েও রেশমি পড়াশোনা করেছেন কলকাতায়। সেই সময় থেকেই তিনি চলচ্চিত্রের কাজে জড়িয়ে পড়েন। আঞ্চলিক ভাষায় ‘মোর স্বপ্ন’ এবং ‘টেম্পার’ নামে দু’টি ছবিতে অভিনয় করেন রেশমি। এ ছাড়াও টলিউডে ‘তোমায় আমায় মিলে’ এবং ‘কিরীটি রায়’ নামেও দু’টি ছবিতে কাজ করেন তিনি। ভোটের ময়দানে নবাগতা হলেও, রাজনীতিতে নতুন নন রেশমি। ২০২০ সালে সক্রিয় ভাবে তৃণমূলে যোগ দেন রেশমি। এখন তিনি ফাঁসিদেওয়া ব্লকের মহিলা তৃণমূল কংগ্রেসের সম্পাদকের দায়িত্বে।
শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের নয় নম্বর ফাঁসিদেওয়া নির্বাচনী কেন্দ্রের প্রার্থী রেশমি। ভোটপ্রচারে নেমে মানুষকে এগিয়ে চলার বার্তা দিচ্ছেন তিনি। আশ্বাস দিচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দাদের পাশে থাকারও। রেশমির কথায়, ‘‘ভবিষ্যতে পিছিয়ে পড়া জনজাতির উন্নয়নকে লক্ষ্য রেখেই আমি কাজ করে যেতে চাই।’’ তাঁর কথায়, ‘‘দল আমাকে সুযোগ দিয়েছে। আমি খুবই খুশি। এর পর মানুষ আমাকে কাজ করার সুযোগ দিলে হতাশ করব না। বছর চারেক আগে থেকেই পিছিয়ে পড়া মানুষের জন্য কাজ শুরু করেছিলাম নিজের গ্রামে।’’
গত বিধানসভা নির্বাচনেও এমনই এক জনজাতি গোষ্ঠীর প্রতিনিধি বিরবাহা হাঁসদাকে ঝাড়গ্রাম কেন্দ্র থেকে প্রার্থী করেছিল তৃণমূল। ঝাড়গ্রামে ঘাসফুল ফুটিয়েছেন বিরবাহা। যাঁর নামের অর্থ ‘বনফুল’। এ ছাড়া অনেক অভিনেতা-অভিনেত্রীও প্রার্থী হয়েছিলেন গত বিধানসভা ভোটে। বিরবাহার মতো রেশমিও শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদ নির্বাচনে তুরুপের তাস। সেখানে জয় রেশমের মতো মসৃণ হবে কি না, তা অবশ্য সময় বলবে। তবে রেশমির দাবি, ‘‘বিধাননগর-১ এবং বিধাননগর-২ গ্রাম পঞ্চায়েত মিলিয়ে মোট ৩৯টি বুথ রয়েছে আমার এলাকায়। আশা করছি, সব বুথ থেকেই আমি সমর্থন পাব।’’
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।