ধৃত: রাখি শাহ। নিজস্ব চিত্র
ট্রেজারি আধিকারিক নাদির শাহের রহস্য মৃত্যুর ঘটনায় তাঁর স্ত্রী রাখি শাহ ওরফে সায়রা বিবিকে গ্রেফতার করল পুলিশ৷ বৃহস্পতিবার বিকেলে কোতোয়ালি থানার পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে৷ এই মুহূর্তে থানাতেই তাঁকে জেরা করছেন পুলিশ কর্তারা৷ শুক্রবার আদালতে তোলা হবে রাখিকে ৷
গত ১৩ ডিসেম্বর গভীর রাতে জলপাইগুড়ির কমপোজিট কমপ্লেক্সের সরকারি আবাসনে অ্যাডিশনাল ট্রেজারি অফিসার নাদির শাহর মৃত্যু হয়৷ ঘটনার পর থেকেই রাখি দাবি করতে থাকেন, গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছেন তাঁর স্বামী৷ কিন্তু এটা আত্মহত্যার ঘটনা নয় বলে সন্দেহ প্রকাশ করে দেহটি শিলিগুড়িতে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে রেফার করে দেন জলপাইগুড়ির চিকিৎসকরা৷ এমনকী, এটা খুন না আত্মহত্যা তা নিয়ে ধন্দে পড়ে যান মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসকেরাও৷ এরই মধ্যে নাদিরের বাবা নাসির শাহ জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন৷ সেখানে তাঁর ছেলেকে খুন করা হয়েছে বলে সন্দেহ প্রকাশ করেন তিনি৷
তবে এটা খুন না আত্মহত্যার ঘটনা সে ব্যাপারে নিশ্চিত হতে মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসকরা ওই ট্রেজারি আধিকারিকের আবাসনের ঘরটি পরীক্ষা করে দেখার সঙ্গে রাখি শাহর সঙ্গে কথা বলার সিদ্ধান্ত নেন৷ সেই অনুযায়ী তদন্তের জন্য কলকাতা থেকে রাখি শাহকে ডেকে আনে জলপাইগুড়ির পুলিশ৷ ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞ ও পুলিশও বুধবার প্রথম ঘরটিতে ঢোকেন৷
পুলিশ সূত্রে খবর, ওই ঘরে ঢুকে তদন্ত শুরু করার পর থেকেই এরপরই গোটা ঘটনা নাটকীয় মোড় নিতে শুরু করে৷ সূত্রের খবর, নাদির যে ঘরে থাকতেন সেটি পরীক্ষা করে দেখার পর ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলেন জেলার পুলিশ কর্তারা৷ সেখানে এটা যে খুনের ঘটনা হতে পারে সে ব্যাপারেও সন্দেহ প্রকাশ করেন তাঁরা৷ তবে আত্মহত্যা যে একেবারেই নয় সে কথাও বলেননি তাঁরা৷
পুলিশ সূত্রের খবর, এরপরই নাদিরের স্ত্রী রাখি শাহকে জেরা শুরু করেন জেলা পুলিশের কর্তারা৷ জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার অমিতাভ মাইতি বলেন, ‘‘জেরায় পুলিশকে একেক সময় একেক বয়ান দিয়েছেন ট্রেজারি আধিকারিকের স্ত্রী৷ স্বামীর মৃত্যুর কারণ নিয়েও একেক সময় একেক রকম কথা বলেছেন৷ এমনকী, এমন অনেক প্রশ্ন ওনাকে করা হয়, যেগুলির উত্তর তিনি দিতেও পারছেন না৷’’ পুলিশ সুপার বলেন, ‘‘ওনার বিরুদ্ধে বেশ কিছু তথ্য প্রমাণ আমাদের হাতে এসেছে৷ যা থেকে বলাই যায় এই মৃত্যুর পেছনে ওনার হাত রয়েছে৷ তাই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে৷’’
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতের বিরুদ্ধে ৩০২ ধারায় খুনের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে৷ ঘটনার আরও তদন্তের জন্য শুক্রবার তাকে জলপাইগুড়ি আদালতে পেশ করে নিজেদের হেফাজতে চাইবে পুলিশ৷