প্রতীকী ছবি।
শিক্ষকই রয়েছেন ছ’জন। আর শিক্ষা দফতরের বদলির নির্দেশের তালিকায় নাম রয়েছে হরিশ্চন্দ্রপুরের নসরপুর প্রাথমিক স্কুলের ওই ছয় শিক্ষকেরই। একই ভাবে বদলির তালিকায় নাম রয়েছে আলিনগর প্রাথমিক স্কুলের মোট দুই শিক্ষকেরই। আবার খেজুরবাড়ি-ধুমসাডাঙ্গি প্রাথমিক স্কুলে পাঁচ শিক্ষকের মধ্যে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ছাড়া বাকি চার জনকেই বদলির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
শুধু হরিশ্চন্দ্রপুরই নয়, ওই বদলির নির্দেশের জেরে জেলা জুড়ে বিভিন্ন প্রাথমিক স্কুলে কোথাও শিক্ষক সংখ্যা শূন্য, কোথাও এক জন মাত্র শিক্ষক থাকছেন। এ ভাবে ঢালাও বদলি হলে স্কুল কী ভাবে চলবে সেই প্রশ্ন তুলে বদলির নির্দেশ সংশোধনের দাবি উঠতে শুরু করেছে।
প্রশাসনিক সূত্রে খবর, যে সব স্কুলে শিক্ষক সংখ্যা শূন্য বা এক জনে দাঁড়াচ্ছে, সেখানে বদলি আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে। যার জেরে শুক্রবার একাধিক চক্রে রিলিজ নিতে এসেও না পেয়ে বিক্ষোভ দেখান শিক্ষকদের একাংশ।
মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শকের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তবে দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘এটা রাজ্যের নির্দেশ। জেলাস্তরে কিছু করা হয়নি।’’
জেলার শিক্ষা বিভাগের দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত জেলাশাসক অর্ণব চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বিষয়টি নিয়ে জেলা পরিদর্শকের সঙ্গে কথা বলব।’’
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা দফতর সূত্রে খবর, মালদহে ১৯৪৬টি প্রাথমিক স্কুল রয়েছে। শিক্ষা দফতরের নির্দেশ বদলির তালিকায় রয়েছেন ৬৯৭ জন শিক্ষক। তাঁরা সকলেই রাজ্যের বিভিন্ন জেলার। উল্টো দিকে জেলায় বদলি হয়ে ফিরছেন মাত্র ৭৬ জন। ফলে স্কুলগুলিতে শিক্ষক সঙ্কট তৈরি হবে অভিযোগ উঠেছে।
বিরোধীদের অভিযোগ, শিক্ষার অধিকার আইনে(২০০৯) কোনও প্রাথমিক স্কুলে এক জন শিক্ষক রাখা যাবে না। কারণ চার থেকে পাঁচটি শ্রেণির পড়াশোনা ছাড়াও মিড ডে মিল রয়েছে। এবিপিটিএ-র হরিশ্চন্দ্রপুর চক্রের সম্পাদক মনোজ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘শিক্ষক-ছাত্র অনুপাত না মেনেই এই নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। আমরা সংশোধনের দাবি জানাচ্ছি।’’ জেলা তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি আইনুল হক বলেন, ‘‘তথ্যের কোনও ভুলের জন্য এমন হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। সমস্যা দ্রুত মিটিয়ে দেওয়ার দাবি আমরাও জানাচ্ছি।’’
এ দিকে এ দিন রিলিজ় না পেয়ে ক্ষুব্ধ এক শিক্ষক বলেন, ‘‘নদিয়ায় বাড়ির কাছে বদলির নির্দেশ পেয়েছিলাম। কিন্তু স্কুল এক জন শিক্ষক বিশিষ্ট হচ্ছে জানিয়ে রিলিজ় দেওয়া হল না।’’ একই দাবি হরিশ্চন্দ্রপুরের অন্য দুটি স্কুলের শিক্ষক তথা পশ্চিম মেদিনীপুরের বাসিন্দা বিশ্বনাথ ঘোরুই, হুগলির বাসিন্দা পবিত্র ঘোরুইদের।