চেষ্টা: স্কুলেই ক্যারাটে শিখছে ছাত্রীরা। নিজস্ব চিত্র
মেয়েদের চূড়ান্ত নিগ্রহের ঘটনায় বারবার খবরের শিরোনামে এসেছে ধূপগুড়ি। আত্মরক্ষায় সক্ষম করে তুলতে তাই এ বার মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্কুলগুলির ছাত্রীদের ক্যারাটে প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু হল। রাষ্ট্রীয় শিক্ষা মিশন প্রকল্পে জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ধূপগুড়ির ৩০টি স্কুলের প্রতিটিতে দু’জন করে ব্ল্যাক বেল্ট প্রাপ্ত ক্যারাটে প্রশিক্ষক ৩৩ দিন ধরে ছাত্রীদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন।
ছুটির দিন বাদে প্রতিদিন স্কুল ছুটির আগে এক ঘণ্টা ধরে চলবে প্রশিক্ষণ।
ধূপগুড়ির জুড়াপানি হাই স্কুলে নবম ও দশম শ্রেণির ৩৯৭ জন ছাত্রী ১৪ জুন থেকে প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। তাদের কথায়, ‘‘চার দিকে মেয়েদের যে ভাবে বিপদে পড়তে হচ্ছে তা আমরা রোজ বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় দেখতে পাচ্ছি। অনেক মেয়ে ছেলেদের সঙ্গে লড়াই করে উঠতে না পেরে অকালে প্রাণ দিচ্ছে। ক্যারাটে জানা থাকলে বাজার, রাস্তাঘাটে ছেলেরা ইভটিজিং, শ্লীলতাহানির সুযোগ পাবে না। তার চেয়ে বেশি কিছু করতে গেলেও নিজেরাই সামলে নিতে পারব।’’
স্কুলের ছাত্রী সারদা সরকার, বর্ষা দেবনাথ বলে, “আমাদেরও অধিকার আছে যে কোনও সময়ে বাজারে, রাস্তাঘাটে একাই ঘুরে বেড়ানোর বা স্কুল-কলেজে যাওয়ার। কিন্তু, রোজ নানা জায়গায় কিছু খারাপ ছেলেরা মেয়েদের উত্ত্যক্ত করে, নির্যাতন করে। সে সব ঘটনার সামনে পড়লে আত্মরক্ষার তাগিদে ক্যারাটে শিখছি।”
ক্যারাটে প্রশিক্ষক উদ্ধব রায় বলেন, “জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসন আমাকে ছাত্রীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে তাদের আত্মরক্ষার আদব-কায়দা রপ্ত করানোর দায়িত্ব দিয়েছেন। ক্যারাটে জানা থাকলে একটি মেয়ের সঙ্গে দু’তিন জন ছেলে কিছুতেই পেরে উঠবে না।”
জুড়াপানি হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক সজলকান্তি সরকার বলেন, “আত্মরক্ষার কৌশল হিসেবে ছাত্রীদের ক্যারাটে শেখানো একটি উপযোগী সিদ্ধান্ত। বর্তমান সমাজে মেয়েদের উপরে অত্যাচারের মাত্রা যে ভাবে বাডড়ছে, তাতে ক্যারাটে জানা থাকলে আশা করি তারা নিজেদের রক্ষা করতে সক্ষম হবে।”