দুষ্কৃতী তাণ্ডবে জখম ট্রেনের মহিলা যাত্রী, লুঠপাট

চলন্ত ট্রেনের মহিলা কামরায় উঠে প্রায় আধ ঘণ্টা ধরে তাণ্ডব চালাল এক দুষ্কৃতী। সোনার গয়না, নগদ টাকা মিলিয়ে অন্তত লক্ষাধিক টাকার সামগ্রী লুঠ করে সে। তার ছুরির আঘাতে জখম হন এক মহিলা যাত্রী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০১৬ ০২:১২
Share:

চলন্ত ট্রেনের মহিলা কামরায় উঠে প্রায় আধ ঘণ্টা ধরে তাণ্ডব চালাল এক দুষ্কৃতী। সোনার গয়না, নগদ টাকা মিলিয়ে অন্তত লক্ষাধিক টাকার সামগ্রী লুঠ করে সে। তার ছুরির আঘাতে জখম হন এক মহিলা যাত্রী। সোমবার ভোরে নিউ জলপাইগুড়ি-বেলাকোবা স্টেশনের মাঝে শিয়ালদহ-নিউ আলিপুরদুয়ারগামী তিস্তা-তোর্সা এক্সপ্রেসে ওই ঘটনা ঘটে।

Advertisement

যাত্রীদের অভিযোগ, ট্রেনের কামরায় কোনও রক্ষী না থাকার সুযোগে ওই দুষ্কৃতী বিনা বাধায় লুঠতরাজ চালায়। সকালে নিউকোচবিহার স্টেশনে পৌঁছানোর পরে যাত্রীদের তরফে প্রথম অভিযোগ জানান‌ো হয়। পরে আলিপুরদুয়ারেও রেল পুলিশের কাছে অভিযোগ জমা পড়েছে। গোটা ঘটনায় রেলে যাত্রী সুরক্ষা ও মহিলাদের নিরাপত্তা ফের প্রশ্নের মুখে। রেল পুলিশের সুপারিনটেন্ডেন্ট ই আনাপ্পা বলেন, “পুরো বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ইতিমধ্যে সন্দেহভাজনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। খুব শীঘ্রই ঘটনায় জড়িত অভিযুক্তকে ধরা যাবে বলে আশা করছি।”

রেল পুলিশ সূত্রেই জানা গিয়েছে, জখম ওই যাত্রীর নাম মৌমিতা সাহা। তাঁর বাড়ি বর্ধমানের কালনায়। আলিপুরদুয়ারে আত্মীয়ের বাড়িতে যাওয়ার জন্য তিনি ওই ট্রেনে চাপেন। দুষ্কৃতীর দাবি মেনে টাকা দিতে আপত্তি করায় তাঁর মুখে ছুরি দিয়ে আঘাত করা হয় বলে অভিযোগ। ওই ঘটনায় অন্য যাত্রীদের মধ্যেও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরপর বেশ কয়েকজন মহিলার গলায় ছুরি ঠেকিয়ে লুঠ চলতে থাকে। পরপর সোনার গয়না ও নগদ টাকা পকেটে ভরে নেয় ওই দুষ্কৃতী। ওই কামরায় থাকা দিনহাটার বড় আটিয়াবাড়ি এলাকার বাসিন্দা রেহানা সুলতানা বলেন, “শিয়ালদহ থেকে ট্রেনে ঊঠেছিলাম। এনজেপি’তে অনেকেই ওঠানামা করছিল। দরজা খোলা থাকায় ওই যুবকও ওঠে। কয়েকজন আপত্তি করলেও আমল দেয়নি। কিছুক্ষণ বাদেই স্বমূর্তি ধারণ করে লুঠপাট শুরু করে ওই দুষ্কৃতী। ট্রেনে কোনও পুলিশ পাহারা ছিল না। বাধ্য হয়ে আমিও টাকা, গয়না খুলে দিই।”

Advertisement

কোচবিহারের চাকিরমোড় এলাকার বাসিন্দা মুনা দীপক শিলানীর কাছ থেকে নগদ ৩৮০০ টাকা ও নদিয়ার বাসিন্দা ষষ্ঠী রায়ের সোনার দুল ছিনতাই হয়েছে বলেও নিউকোচবিহার জিআরপি’র কাছে অভিযোগ জমা পড়েছে। যাত্রীদের অভিযোগ, সে সময় ২৫ জন মহিলা ওই কামরায় ছিলেন। তাঁদের মধ্যে অন্তত ১০ জনের কাছ থেকে থেকে বিভিন্ন সামগ্রী লুঠ করা হয়। ট্রেনটি বেলাকোবা স্টেশনের পৌঁছনোর আগে গতি কমতেই ওই দুষ্কৃতী নেমে পালিয়ে যায়।

রেল পুলিশ সূত্রেই জানা গিয়েছে, সোমবার ভোর সওয়া তিনটে নাগাদ ট্রেনটি এনজেপি স্টেশন থেকে নিউ আলিপুরদুয়ারের উদ্দেশে রওনা হয়। বেলাকোবা পৌঁছনোর আগে ভোর সাড়ে তিনটে থেকে চারটের মধ্যে ওই দুষ্কৃতী তাণ্ডব চালায়। রেল পুলিশের একটি সূত্রের খবর, ভোটের জন্য জিআরপির প্রায় দু’শো কর্মীকে তুলে নেওয়া হয়েছে। ফলে ট্রেনে পাহারা দেওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি হয়েছে। রেল পুলিশের এক কর্তা জানান, একটি ‘ ট্রেন গার্ড’ দলে অন্তত ৮ জন কর্মী থাকেন। ভোটের ডিউটির জন্য কর্মী সংখ্যা কমে যাওয়ায় সব ট্রেনে গার্ড দেওয়া যাচ্ছে না। রেল পুলিশ সুপার অবশ্য দাবি করেছেন, নিরাপত্তা রক্ষায় সাধ্যমত সব চেষ্টা হচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement