করোনা সতর্কতায় ব্যারিকেডের মধ্যে থেকে যান নিয়ন্ত্রণ ট্রাফিক পুলিশের। রথবাড়িতে। নিজস্ব চিত্র
মাথায় হেলমেট নেই। একটাই মোটরবাইকে সওয়ারি তিন জন। তাঁদের থামিয়ে ট্র্যাফিক পুলিশকর্মী নাম-ঠিকানা জিজ্ঞাসা করতেই চালকের উত্তর ‘কন্টেনমেন্ট জ়োনে’। শুনেই কিছুটা পিছিয়ে হাতে স্যানিটাইজ়ার দিলেন পুলিশকর্মী। ফাঁক গলে হুঁশ করে বেরিয়ে গেল সেই মোটরবাইক। মালদহে ট্র্যাফিক পুলিশের মধ্যেও সংক্রমণ ছড়াতে শুরু করায় তটস্থ কর্মী, অফিসারেরা।
লকডাউনে সুনসান রাস্তায় মোটরবাইক দেখলেই তা আটকে ট্র্যাফিক পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের ছবি চেনা ছিল মালদহে। মোটরবাইকের নথি, হেলমেট পরে না থাকলে হত জরিমানা। দিনে শ’য়ে শ’য়ে মোটরবাইক আটক হত জেলায়। পুলিশ জানিয়েছে, লকডাউনের সময় জেলার ১৫টি থানায় কমপক্ষে ২ হাজার মোটরবাইক আটক করা হয়েছিল। জরিমানাও করা হয় অনেক চালককে। ট্র্যাফিক পুলিশের এক কর্মী বলেন, “লকডাউনে মোটরবাইক চালকদের মুখে নানা অজুহাত শোনা যেত। কেউ বলতেন ওষুধ নিতে এসেছি, কেউ বলতেন বাজারে যাচ্ছি। অনেকেরই বাইক আটকে হাঁটিয়ে বাজারে পাঠানো হয়েছে।”
তবে এখন উল্টো ছবি জাতীয় সড়ক থেকে শুরু করে রাজ্য সড়ক, শহরের বড় রাস্তায়। করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে জেলায়। পুলিশের মধ্যেও সংক্রমণ ছড়াতে শুরু করেছে। ট্র্যাফিক পুলিশের মধ্যেও করোনা ছড়িয়েছে জেলায়। সেই তালিকায় সিভিককর্মীরাও রয়েছেন। এক সিভিককর্মী বলেন, “গ্রামের অনেকেই মোটরবাইক নিয়ে নানা কাজে শহরে আসছেন। তাঁদের বাইক আটকে চাবি নেওয়া, নথি দেখা সবই করতে হচ্ছে। অনেকের মুখে মাস্ক থাকছে না। ফলে মোটরবাইক আটক করতেও এখন ভয় হচ্ছে।”
এক ট্র্যাফিক পুলিশ বলেন, “মোটরবাইক আটক করলেই অনেক চালক ঠিকানা বলছেন, কন্টেনমেন্ট জ়োন। করোনার ভয়ে গাড়ি আটকে জিজ্ঞাসাবাদে সাহস হচ্ছে না।”
করোনার আবহে এখন দেদার ঘুরছেন হেলমেটহীন মোটরবাইক চালকেরা। এমনকী, নিয়ম ভেঙে তিন জন সওয়ারি যাচ্ছেন অনেক বাইকে। করোনার ভয় নিয়েই কাজ করতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ট্র্যাফিক পুলিশের কর্তারা। মালদহের পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, “রুটিন মেনেই আমাদের কাজ চলছে।”