বিধ্বস্ত উত্তরবঙ্গের পর্যটন ব্যবসা। করোনা আবহে পর্যটকদের পা খুব একটা পড়ছে না দার্জিলিং- কার্শিয়াঙে। তাই প্রায় যাত্রীশূন্য কামরা নিয়েই ছুটছে এখানকার ঐতিহ্যবাহী টয় ট্রেন।
গত বছরের অক্টোবর মাসে কার্শিয়াঙের মহানদীর কাছে ৫৫ নম্বর জাতীয় সড়ক ভূমিধসের ফলে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে রেলপথ৷ তার পর থেকেই বন্ধ হয়ে যায় টয়-ট্রেন যাত্রা। ধস সরিয়ে রাস্তা তৈরি করার পর লাইন সারাইয়ের কাজেও বেশ কিছুটা সময় পার হয়। পর্যটন ব্যবসার মরসুমেরও বেশির ভাগ সময়ই পেরিয়ে যায়। এর পর ২৪ জানুয়ারি থেকে আবারও টয় ট্রেনে শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিঙ যাত্রা শুরু হয়।
যাত্রা শুরু হলেও পর্যটকের ঘাটতিতে বিফলে সমস্ত প্রচেষ্টা। তাই শৈলশহরের দিকে একাই ছুটছে ফাঁকা টয়-ট্রেন।
দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ে সূত্রের খবর অনুযায়ী, বেশির ভাগ সময়েই প্রায় ফাঁকা কামরা নিয়ে ছুটছে টয়-ট্রেন। ফাঁকা থাকছে আসন। নিজের তালে শব্দ তুলে ধোঁয়ার কুন্ডলী পাকিয়ে জঙ্গল এবং চা-বাগানের মনোরম দৃশ্য থাকলেও, অভাব এই দৃশ্য উপভোগ করার মতো মানুষের।
কেন হয়েছে এমন অবস্থা? তার কারণ সন্ধানে নেমে অ্যাসোসিয়েশন ফর কনজারভেশন এন্ড ট্যুরিজমের আহ্বায়ক রাজ বসু জানিয়েছেন, পুজোর আগে পর্যটন ব্যবসা খানিকটা চাঙ্গা হয়েছিল। কিন্তু ভূমিধসে টয় ট্রেন-সহ দার্জিলিঙের সঙ্গে জাতীয় সড়কের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়। দার্জিলিং এবং সান্দাকফুতে ঘুরপথেই পৌঁছতে হচ্ছিল পর্যটকদের৷ এরপর আবার হঠাৎ করোনার নয়া রূপ ওমিক্রন হানা দেওয়ায় আবার ক্ষতির মুখে পড়ে পর্যটন ব্যবস্থা। সঠিক সরকারি নির্দেশের অভাবে পরিষেবা চালু রাখা নিয়ে ধন্ধ তৈরি হওয়াতেও ক্ষতিগ্রস্থ হয় পর্যটন ব্যাবসা। টাইগারহিল-সান্দাকফুর পাশাপাশি বন্ধ হয় জলদাপাড়া-বক্সাও।
টয় ট্রেন চালানো নিয়ে তাঁদের সঙ্গে কোনও আলোচনা করা হয়নি বলেও রাজ জানান।
টয়-ট্রেন চালাতে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ খরচ বহন করতে হয়। তাহলে কেনও শুধু-শুধু গাঁটের কড়ি খরচ করে চালানো হচ্ছে ফাঁকা টয়-ট্রেন? এই প্রসঙ্গে দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ের ডিরেক্টর একে মিশ্র জানান, ঘাটতি থাকলেও এখনই থামানো যাবে না টয়-ট্রেন। টয়-ট্রেন বন্ধ হলে পর্যটন ব্যবসায় আরও বিরূপ প্রভাব পড়বে। তবে খুব শীঘ্রই পর্যটকদের ভিড় বাড়বে এবং আগের মতোই টয়-ট্রেনের কু-ঝিকঝিক শব্দে দার্জিলিং মুখরিত হবে বলেও আশা করছেন কর্মকর্তারা।