প্রতীকী ছবি
দীর্ঘ দিন ধরেই মজুরি পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ টয় ট্রেনের বাষ্পচালিত ইঞ্জিনের ঠিকাদারের মাধ্যমে নিযুক্ত কয়লা শ্রমিকদের। এখন লকডাউনের জেরে টয় ট্রেন পরিষেবা বন্ধ। মজুরি না মিললে এরপর পরিষেবা চালু হলেই ট্রেন বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিলেন ওই কয়লা শ্রমিকরা। তাঁদের অভিযোগ, মার্চ থেকে মজুরি মিলছে না। মজুরি নিয়ে রেল কর্তৃপক্ষ টালবাহানা করছে বলে অভিযোগ তাঁদের। রেল কর্তৃপক্ষ লকডাউনের সময় কাজ না হলেও শ্রমিকদের মজুরি দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিল। কিন্তু পাহাড় এবং সমতলের একাধিক শ্রমিক এখনও টাকা পায়নি বলে অভিযোগ। যদিও, ঠিকাদার সংস্থা দ্রুত তাঁদের কয়েকজনের বকেয়া মিটিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে। সকলকেই মজুরি দিতে হবে বলে দাবি তুলেছেন শ্রমিকরা।
টয় ট্রেনের শ্রমিকদের মজুরি নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরেই চাপানউতোর চলছে। টয় ট্রেন পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন ঠিকাদারের অধীনে ৩১ জন শ্রমিক। তাঁদের অনেকেই বিভিন্ন স্টেশনে এবং আধিকারিকদের আবাসনে হাউসকিপিংয়ের কাজ করেন। অনেকে ট্রেনের ইঞ্জিনে কয়লা তোলা-নামানোর কাজ করেন। দার্জিলিংয়ের কয়লা শ্রমিক মনু রাই বলেন, ‘‘রেল কর্তৃপক্ষ যখন বলেছে, লকডাউনে কাজ না হলেও মজুরি মিলবে। সেই মজুরি না পেলে আমরা ট্রেন পরিষেবা চালু করতেই দেব না।’’
ঠিকাদার সংস্থার দাবি, দীর্ঘ দিন ধরে শ্রমিকদের উপস্থিতির হারের নথি দিচ্ছিল না রেল কর্তৃপক্ষ। তাই মজুরি দেওয়া যায়নি। ১১ জন শ্রমিকের মজুরি দেওয়া হবে। বাকিদের মজুরি দেওয়া সম্ভব নয়। অথচ, বাষ্পচালিত ইঞ্জিন চালু রাখার জন্য মূল কাজ করেন কয়লা শ্রমিকরাই। তাঁরা কাজ না করলে বাষ্পচালিত ইঞ্জিন পরিষেবা বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে। কেন এরকম বৈষম্য? ঠিকাদার সংস্থার মালিক অনিমেষ দাস বলেন, ‘‘সকলের জন্য টাকা বরাদ্দ করেনি রেল কর্তৃপক্ষ। সারা বছর যাঁরা কাজ করেন, তাঁদের টাকাই আমি দেব।’’ তবে সেই ১১ জনের মধ্যেও মাত্র চার জনের নথি দিয়েছে রেল। বাকিদের দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ ঠিকাদার সংস্থার।
কয়লা শ্রমিকদের দাবি, ট্রেন পরিষেবা চালু থাকলে সারা বছর তাঁরাও কাজ করেন। কাজ হারিয়ে অনেকেই গ্রামে চাষবাস বা অন্য কাজ করে নিজেদের পরিবার চালাচ্ছেন। শ্রমিকদের সমস্যা তুলে ধরে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার নেতা তথা জিটিএ চেয়ারম্যান অনীত থাপা শনিবার একটি ফেসবুক পোস্ট করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘অবিলম্বে সব শ্রমিকদের বকেয়া মিটিয়ে দিতে হবে। সারাজীবন ঐতিহ্যবাহী পরিষেবা এরাই চালু রাখে। ভবিষ্যতেও যেন সমস্যা না হয় তা দেখতে হবে রেলকে।’’
উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক শুভানন চন্দ বলেন, ‘‘রেলের ঘোষিত নীতি অনুসারে ঠিকাদার নিযুক্ত শ্রমিকদের মজুরি রেলওয়ে দিচ্ছে। তা নিয়ে কোনও সমস্যা হওয়ার কথা নয়। বিষয়টি দেখব।’’