কাঞ্চনকন্যা এক্সপ্রেস —ফাইল চিত্র।
‘বুকিং’ হচ্ছে না টিকিট। যাঁদের ‘বুকিং’ ছিল, ‘বাতিল’ হতে শুরু করেছে। রেল সূত্রে খবর, ৯ ডিসেম্বর থেকে ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত শিয়ালদহ থেকে আলিপুরদুয়ার জংশনগামী কাঞ্চনকন্যা এক্সপ্রেস বাতিল করা হয়েছে।
তবে ট্রেন বাতিলের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা এখনও না হওয়ায় যাত্রীদের মধ্যে ‘বিভ্রান্তি’ বেড়েছে। পূর্ব রেলের আধিকারিকদের দাবি, এ বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি শীঘ্রই জারি করা হবে। কিন্তু পর্যটনের ভরা মরসুমে কেন আচমকা ট্রেন বাতিল করা হল, তার কোনও যথাযথ ব্যাখ্যা রেলের কাছে পাওয়া যায়নি। বাতিলের মেয়াদ আরও কয়েক দিন বাড়তে পারে বলেও রেল সূত্রে ইঙ্গিত মিলেছে। তার জেরে, ডুয়ার্সে বড়দিনের পর্যটনের উপরে প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে।
শিয়ালদহ থেকে ডুয়ার্সে যেতে ওই ট্রেনটির উপরেই ভরসা করেন অধিকাংশ পর্যটক। ডিসেম্বর মাসে ডুয়ার্স এবং পাহাড়ে সব থেকে বেশি পর্যটক আসেন। রিসর্ট, হোটেলগুলিতে বুকিং নেওয়ার কাজ শেষ। ট্রেন থেকে নামার পরে, বেড়ানোর গাড়ির বুকিংও হয়ে গিয়েছে। কিন্তু ট্রেন বাতিলের খবরে চিন্তায় পড়েছেন বিভিন্ন পর্যটন সংস্থার কর্তারা। চিন্তায় পর্যটকেরাও।
‘হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড টুরিজ়ম ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্ক’-এর সাধারণ সম্পাদক সম্রাট সান্যাল বলেন, ‘‘ঠিক বড়দিনের আগেই ডুয়ার্সের ট্রেন বাতিল করা হল কোন যুক্তিতে? বিকল্প ব্যবস্থা না করে কেন এমন করা? সিকিমের বিপর্যয়ে এমনিতেই পর্যটন ব্যবসায় মার খেয়েছি আমরা।’’
উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সব্যসাচী দে বলেন, ‘‘পূর্ব রেলের এলাকায় লাইন মেরামতি এবং রক্ষণাবেক্ষণের কিছু কাজ রয়েছে বলে শুনেছি।’’ কলকাতা থেকে উত্তরবঙ্গের দিকে চলাচলকারী আরও ৪১টি ট্রেনের রুট বদলানো হয়েছে বলে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল সূত্রের খবর। কেন কাঞ্চনকন্যা এক্সপ্রেসকে ঘুরপথে চালানোর ব্যবস্থা করা হল না, কেনই বা পর্যটনের সময় বাদ দিয়ে অন্য সময় এ কাজ করা হল না? এ সব প্রশ্নের অবশ্য উত্তর মেলেনি। পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র বুধবার বলেন, ‘‘এ বিষয়ে আমি কিছুই বলব না।’’
কলকাতা থেকে ডুয়ার্সে যাতায়াতের একমাত্র ট্রেন কাঞ্চনকন্যা এক্সপ্রেস। সেই কারণে বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণের জন্যে রেলের কাছে ইতিমধ্যেই আর্জি জানিয়েছে পর্যটন ব্যবসায়ী সংগঠন, ‘লাটাগুড়ি রিসর্ট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন’।
কলকাতার একটি ভ্রমণ আয়োজক সংস্থার টুর গাইড সতীশ সিংহ বলেন, ‘‘বুকিং হয়ে গিয়েছে। সব কিছু একেবারে প্রস্তুত। এই মুহূর্তে ট্রেন বাতিলের খবরে দিশাহারা হয়ে পড়েছি।’’ জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূল সভাপতি মহুয়া গোপ বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানানোর আশ্বাস দিয়েছেন।