প্রতীকী ছবি।
করোনার বাধা কাটিয়ে কাঞ্চনজঙ্ঘাকে উপভোগের সম্ভাবনায় সাড়া দিতে শুরু করেছেন পর্যটকেরা। পাহাড়ে মোর্চার দুই গোষ্ঠীর মধ্যে উত্তেজনার মধ্যেও ছড়িয়ে ছিটিয়ে ভিড় জমছে। তবে ডুয়ার্সের প্রতি টানটা যেন একটু বেশিই, বলছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা। দেওয়ালি, ভাইফোঁটার এই মরসুমে পর্যটক বেড়েছে। শীতের মরসুম ভাল বুকিংয়ের আশ্বাস দিচ্ছে। তবে পর্যটন ব্যবসায়ীদের সংগঠনগুলিই ডুয়ার্সের চাহিদা এ বারে ভালই।
পর্যটন দফতর সূত্রের খবর, করোনার ঠিক আগের মরসুমের (জানুয়ারি থেকে মার্চ) থেকে এখন বুকিং ভাল। পুজোর সময় থেকে ধরে দেওয়ালি, ভাইফোঁটার সময় বেশ ভাল বুকিং রয়েছে উত্তরবঙ্গের ডুয়ার্সে। তেমনিই, দক্ষিণবঙ্গেও মানুষ যাচ্ছেন বিভিন্ন প্রান্ত থেকে। বিশেষ করে সপ্তাহের শেষে বা উইক এন্ড ট্যুরিজম বাড়ছেই। আবার পাহাড়ে কিছু জায়গায় এ মাসের ২০-২৫ নভেম্বর অবধি বুকিং রয়েছে। রাজ্যের পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব বলেছেন, ‘‘দুর্গাপুজোর সময় থেকে মানুষ ঘরের বাইরে বার হওয়া শুরু করেছেন। এই প্রবণতা বাড়বে। তবে সুরক্ষা, সচেতনতা, করনো পরিস্থিতির কথাও মাথায় রাখতে হবে।’’
রাজ্য সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, করোনা শুরুর আগে জানুয়ারি থেকে মার্চের মধ্যে জলদাপাড়ায় পর্যটন দফতরের আবাসে বুকিং ছিল ৩০ শতাংশ। সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে তা ৪৬ শতাংশ পার হয়ে গিয়েছে। নভেম্বরে তা আরও খানকটা করে বাড়ছে। একই সময়সীমায় কালিম্পঙের মর্গ্যান হাউসে বুকিং ২১ শতাংশ খেকে থেকে বেড়ে হয়েছে ৩৫ শতাংশ। দক্ষিণবঙ্গের ডায়মন্ড হারবারের সাগরিকায় বুকিং ৩৭ শতাংশ থেকে ৪৮ শতাংশ হয়েছে। বকখালিতে ছিল ২২ শতাংশ। এখন তা ৭৬ শতাংশ। মাইথনের মুক্তধারায় বুকিং ৪১ শতাংশ থেকে বেড়ে হয়েছে ৫৭ শতাংশ। ডুয়ার্সের হলংয়ে টানা ১০০ শতাংশ বুকিং রয়েছে। দার্জিলিং ও কালিম্পঙে গড়ে ৫০ শতাংশের বেশি বুকিং কিছু কিছু দিনে রয়েছে। তবে সপ্তাহের শেষে নিজের গাড়ি নিয়ে ঘোরা পর্যটকদের সংখ্যাটা এবার বেশি।
বন উন্নয়ন নিগম, বন দফতরে তরফে হাতি সাফারির বন্দোবস্ত বন্ধ রয়েছে। তাও ২-৩ দিনের জন্য পর্যটকেরা আসছেন। লাটাগুড়ি, চালসা, মূ্র্তি, মালবাজার বা সামসিং— বেশ কিছু এলাকার হোম-স্টে এবং রিসর্টে পুরো বুকিং রয়েছে। বিমল গুরুং প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই পাহাড়ের রাজনৈতিক পারদ ঊর্ধ্বমুখী। ছোটখাট গোলমালও হয়েছে। এর প্রভাব কি পাহাড়ে পড়বে, এই নিয়ে চিন্তিত ব্যবসায়ীরা।
পর্যটন সংগঠনগুলি বলছে, শীতের শুরুতে পুজোর সময় পাহাড়ের টাইগার হিলে অনেকদিন পর ভিড় ঠাসা থাকছিল। ডিসেম্বরের নতুন বুকিং নিয়ে অনেকেই টেলিফোন করে পাহাড়ের পরিস্থিতি নিয়ে খোঁজ নিচ্ছেন। সংগঠনগুলি এখনই হতাশ না হয়ে অপেক্ষা করতেই আগ্রহী।