দার্জিলিং ম্যালে পর্যটকদের ভিড়। নিজস্ব চিত্র
শীত নেই, কড়া রোদ। শৈলশহরে গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা। দিনে তাপমাত্রা প্রায় ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রাতে তাপমাত্রা ১৫-১৮ ডিগ্রির এর মধ্যে ওঠানামা করছে। তাতে কী! এই গরমেই এখন পর্যটকদের ভিড়ে ঠাসা দার্জিলিং। ম্যালের রাস্তায় ভিড়ে পা রাখার জায়গা নেই। রেস্তরাঁ, কফি শপগুলিতে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ভিড়। টয় ট্রেনের জয় রাইডও জমজমাট। বিদেশি পর্যটকেরাও টয় ট্রেনে বসে পাহাড়ের সৌন্দর্য উপভোগ করছেন। জয় রাইড চালিয়ে রেকর্ড আয় করছে দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ে। কালিম্পং থেকে কার্শিয়াং বা মিরিকেও আবহাওয়াও একই চলছে।
দার্জিলিং শহরে শেষ কবে এমন ভিড় হয়েছিল তা মনে করতে পারছেন না স্থানীয় অনেকেই। সিকিমে ব্যাপক তুষারপাতের জেরে মাঝেমধ্যেই ছাঙ্গুর রাস্তা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। কিছুদিন আগে তুষার ধসে ৭ পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে। যে কারণে পারমিট নিয়ে দুশ্চিন্তায় সিকিমে না গিয়ে অনেক পর্যটক এখন দার্জিলিংমুখী হচ্ছেন। শৈলশহরে ভিড় এতটাই যে ঘুম থেকে গাড়ির লম্বা লাইন পড়ে যাচ্ছে। শিলিগুড়ি থেকে সেখানে পৌঁছতে সাড়ে চার ঘণ্টা পর্যন্ত সময় লেগে যাচ্ছে। দার্জিলিঙের ম্যাল, চৌরাস্তা, চকবাজার, টাইগার হিল, বাতাসিয়া লুপ, দার্জিলিং চিড়িয়াখানায় ভিড়ে পা রাখার জায়গা নেই। পর্যটন ব্যবসায়ীরা বলছেন, মূল শহর শুধু নয়, গ্রামীণ এলাকায় হোম স্টেগুলিতেও এখন পর্যটকদের ভিড় রয়েছে। দার্জিলিঙের এক হোটেল মালিক শঙ্কর থাপা জানান, ‘‘অধিকাংশ হোটেলে রুম পাওয়া যাচ্ছে না। সামনেই গরমের ছুটি পড়বে স্কুলে। সে সময় ভিড় আরও বাড়তে পারে।’’
এ দিকে, যানজটে আটকে চরম নাজেহাল হতে হচ্ছে পর্যটকদের। সকাল থেকেই শহরে ঢোকার আগেই ৫-৬ কিলোমিটার পর্যন্ত গাড়ির লম্বা লাইন। যানজট কমাতে সকাল থেকেই রাস্তায় নামছে দার্জিলিং জেলা পুলিশের ট্র্যাফিক বিভাগ। গত কয়েক দিনে গাড়িভাড়া কিছুটা বেড়েছে বলে খবর। উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের বাসগুলিতেও পর্যটকেরা শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিং যাচ্ছেন।
রেল সূত্রে খবর, আগামী জুনের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত শিয়ালদহ থেকে এনজেপির মধ্যে যাতায়াতকারী বেশির ভাগ ট্রেনেই টিকিট মিলছে না। বন্দেভারত এক্সপ্রেসে মে মাসের শেষের দিকে কয়েকটি টিকিট থাকলেও পদাতিক, দার্জিলিং মেল, উত্তরবঙ্গ, কাঞ্চনকন্যার মতো ট্রেনগুলিতে টিকিটের চাহিদা অনেক বেশি বলে জানাচ্ছে রেল। মে মাসের শেষ দিকে কিছু আরএসি টিকিট মিলছে। বিমানের টিকিটেরও দাম ধীরে ধীরে উর্ধ্বমুখী। (সহ প্রতিবেদক: কৌশিক চৌধুরী)