পাহাড়ি সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচয় জি২০ শীর্ষ সম্মেলনে আগত বিদেশি প্রতিনিধিদের সোমবার। নিজস্ব চিত্র
রাজ্যে প্রথম বার দেশ-বিদেশের পর্যটকদের যাবতীয় তথ্য সংগ্রহের জন্য পেশাদার সংস্থা নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে পর্যটন দফতর৷ প্রশাসনিক সূত্রের খবর, গত মাসের শেষে দফতরের তরফে এই সম্পর্কিত নির্দেশিকা (এনআইকিউ-৬৪ ডিওটি অব ২০২২-২৩) জারি করা হয়েছে। এ মাসের ১৭ এপ্রিল বিভিন্ন সংস্থার তরফে আসা প্রস্তাব খতিয়ে দেখা হবে বলে ঠিক হয়েছে। দু’দফায় সমীক্ষা করে তথ্য সংগ্রহ করা হবে বলে ঠিক হয়েছে। রাজ্যের পর্যটনের সঙ্গে জড়িত ২৩টি জেলায় এপ্রিলের শেষ থেকে কাজ শুরুর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে রাজ্যের মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় কিছু বলেননি। ‘মেসেজ’ করা হলেও রাত অবধি উত্তর আসেনি। তবে দফতরের এক যুগ্ম সচিবের কথায়, ‘‘দেশের বিভিন্ন রাজ্যে এ ধরনের তথ্য সংগ্রহের ব্যবস্থা রয়েছে। তাতে রাজ্যগুলির কাছে পর্যটকদের যাবতীয় তথ্য সব সময় মজুত থাকে, যা বণিকসভার বিভিন্ন বৈঠকে, বিনিয়োগ প্রস্তাব, পরিকাঠামো তৈরির জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।’’
দফতর সূত্রের খবর, গত কয়েক বছরে একাধিক বার রাজ্যে এ ধরনের তথ্য সংগ্রহ করা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। হিমাচল প্রদেশ, রাজস্থান, কেরল, মধ্যপ্রদেশের মতো রাজ্যে পর্যটনের সুসংসত তথ্য ভান্ডারের ব্যবস্থা রয়েছে। দেশের কোথাও কোনও সম্মেলন, সভা, বৈঠক বা প্রদর্শনীতে ওই রাজ্যগুলি সুন্দর ভাবে সরকারি তথ্য দিয়ে পর্যটনের হিসেব-নিকেশ তুলে ধরে। সেখানে এ রাজ্যে আনুমানিক হিসাবেই কাজ হয়ে এসেছে। কয়েক বছর আগে, এক দফায় জেলা প্রশাসনগুলির মাধ্যমে তথ্য সংগ্র্হের উপরে জোর দেওয়া হয়। কিন্তু কেন্দ্র, রাজ্যের প্রকল্প ছাড়া প্রশাসনের তরফে জেলায় জেলায় এই কাজ খুব একটা করা সম্ভব হয়নি।
গত ছ’মাসে রাজ্য পর্যটন দফতর বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মেলা, সভায় যোগ দিয়েছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তেও দফতরের অফিসারেরা প্রচারে গিয়েছেন। সেখানেই পর্যটকের তথ্য সুংসহত ভাবে রাখাটা যে জরুরি, তা সামনে এসেছে। নতুন বছরের গোড়াতেই তাই প্রশাসন বা দফতরের বদলে একেবারে পেশাদার সংস্থাকে দিয়ে কাজ করানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেখানে দু’দফায় সমীক্ষা করানো হবে বলে ঠিক হয়েছে। প্রথম দফার সমীক্ষা এক মাসের হবে। দ্বিতীয় দফায় তা ১২ মাসের করা হবে। কলকাতা-সহ রাজ্যের ২৩টি জেলাকে চিহ্নিত করা হয়েছে। পাহাড়, জঙ্গল, সমুদ্র— সব মিলিয়ে জেলা বাছাই হয়েছে। প্রথম দফায় কোন জেলায়, কী রকম পর্যটক আসছেন এবং কোথায় কোথায় বেশি আসছেন, তা দেখে নিয়ে দ্বিতীয় দফায় বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহের কাজে ঢোকা হচ্ছে।
পর্যটন দফতরের অফিসারেরা জানান, বিমানবন্দর, বাস টার্মিনাস, স্টেশনের তথ্যই শুধু নয়, হোটেল, রিসর্ট বা হোম-স্টে থেকেও তথ্য সংগ্রহ করা হবে। তথ্য থাকবে ‘ইমিগ্রেশন পয়েন্ট’ বা ‘পাসপোর্ট’ বিভাগেরও। কোন ধরনের পর্যটক, কত দিন, কোথায়, কত খরচে কী ভাবে থাকছেন, সে সবের তথ্য নেওয়া হবে। দেশি এবং বিদেশি— আলাদা ভাগও থাকবে।