প্রতীকী ছবি।
করোনার জেরে রাজ্যের পর্যটন শিল্পেও মন্দা। লকডাউন ওঠার পর ভ্রমণপিপাসুরা অনেকেই খোঁজখবর নিয়ে এদিক-ওদিক যাচ্ছেন। সম্প্রতি রাজ্য সরকারও স্বাস্থ্যবিধির শর্তে রাজ্যের বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রে ঘোরার অনুমতি দিয়েছে। কিন্তু মুখ থুবড়ে পড়া পর্যটন শিল্পকে কী ভাবে ফের নতুন করে চাঙ্গা করা যায়, তা নিয়ে ভাবনা-চিন্তা শুরু হয়েছে।
এরই অঙ্গ হিসেবে দেশ-বিদেশের পর্যটকদের কথা মাথায় রেখে সোশ্যাল মিডিয়ায় পর্যটন দফতরের উপস্থিতি ও প্রচার আরও বাড়াতে চায় সরকার। সেই লক্ষ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় উপস্থিতি বাড়াতে বেসরকারি হাতে দায়িত্ব তুলে দিতে চলেছে সরকার। সরকারি সূত্রের খবর, ফেসবুক, ট্যুইটার, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম থেকে শুরু করে বিভিন্ন ব্লগ— সবকিছুর দায়িত্ব বিশেষজ্ঞ এক সংস্থাকে দিতে টেন্ডারও করা হয়েছে। অক্টোবর-নভেম্বর জুড়ে চলছে এই প্রক্রিয়া। আগামী দু’বছরের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত কোনও সংস্থা পর্যটন দফতরের ডিজিটাল উপস্থিতি সক্রিয় করার কাজ করবে।
রাজ্যের পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব বলেছেন, ‘‘বর্তমান যুগ তথ্যপ্রযুক্তি, সোশ্যাল মিডিয়ার যুগ। রাজনীতি থেকে পড়াশোনা সব কিছুই ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার হচ্ছে। করোনার জন্য তা আরও বাড়ছে। এ বার সরকারি স্তরে এসবের ব্যবহার, সক্রিয়তা দিনদিন বাড়ানো হচ্ছে।’’ প্রশাসনিক সূত্রের খবর, গত ৬ অক্টোবর পর্যটন দফতর থেকে একটি নির্দেশিকাও জারি করা হয়েছে।
দেশের মধ্যে গুজরাত, মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু, দিল্লি, কর্নাটক, অসম এবং বিহার থেকেই মূলত পর্যটকেরা এ রাজ্যে আসেন। আর বিদেশের ক্ষেত্রে, ব্রিটেন, জার্মানি, স্পেন, অস্ট্রেলিয়া, জাপান, তাইল্যান্ড, মালেয়শিয়া এবং বাংলাদেশ থেকে পর্যটকেরা আসছেন। এই দিকগুলি লক্ষ্য রেখেই ডিজিটাল মিডিয়ায় প্রচারের জন্য বলা হচ্ছে। তেমনিই, ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে নতুন করে চিন্তাভাবনা, স্লোগান, ব্র্যান্ডিংয়ের কথা বলা হয়েছে। পর্যটকদের মতামত বা অনলাইন ফিডব্যাক নিয়ে কাজ করার কথাও বলা হয়েছে।
পর্যটন দফতরের অফিসারেরা জানাচ্ছেন, বিদেশে এটা অনেকদিন আগেই হয়েছিল। এ দেশে কেরল, গুজরাতের মত রাজ্যগুলি যেভাবে সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেদের উপস্থিতি বজায় রাখে তা যথেষ্টই ভাল। সেখানে রাজ্য পর্যটন দফতর ফেসবুক, ইনস্টাগ্রামের মতো প্রতি ক্ষেত্রে থাকলেও সক্রিয় উপস্থিতি বাড়েনি। সেখানে এখনও সরকারি ভাবনায় প্রচারের জন্য হোর্ডিং, ব্যানার, ফ্লেক্সকেই ভাবা হচ্ছে। তা বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়ার ধারেকাছে কিছুই নয় বলে ওই অফিসারেরা জানিয়েছেন।
সম্প্রতি রাজ্য পর্যটন দফতরের প্রধান সচিব নন্দিনী চক্রবর্তী দু’দিনের সফরে শিলিগুড়িতে এসেছিলেন। দফতরের অফিসার, প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করা ছাড়াও তিনি পর্যটন সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গেও কথা বলেন। করোনার জেরে বিপর্যস্ত পর্যটন ব্যবসাকে চাঙ্গা করার জন্য প্রতিনিধিরা প্রধান সচিবকে অনুরোধ করেন। সরকারি তরফে আর্থিক সাহায্যের জন্য প্যাকেজের দাবি-সহ প্রচারের কথাও বলা হয়। তখনও প্রধান সচিব তাঁদের জানিয়ে দেন, নতুন বছর থেকে পর্যটন দফতরের চেহারা সোশ্যাল মিডিয়ায় পাল্টে যাবে।
নতুন তো বটেই জোরদার ভাবেই পর্যটন দফতর ডিজিটাল মঞ্চে নামতে চলছে।
দফতর সূত্রের খবর, গত একমাস ধরে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার নিয়ে নানা রূপরেখা তৈরি হয়েছে। এরমধ্যে কোনও অনুষ্ঠান, প্রোমোশন ছাড়াও ফেসবুকে ইভেন্ট পেজ তৈরি, প্রতি সপ্তাহে ৪টি করে পোস্ট করা, ১০টি ট্যুইট করা বা ২০টি রিট্যুইট করার মত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।