টোল প্লাজায় ভাঙচুরের ঘটনায় কামাখ্যাগুড়ি পুলিশ ফাঁড়িতে লিখিত অভিযোগ জানানো হয়েছে। ফাইল চিত্র।
কামাখ্যাগুড়ির কাছে গুয়াবাড়ি এলাকার ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর একটি টোল প্লাজায় ভাঙচুর এবং টাকা লুঠের অভিযোগ উঠল এক দল দুষ্কৃতীর বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় ৯ জনের নামে কামাখ্যাগুড়ি পুলিশ ফাঁড়িতে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছে টোল প্লাজার ঠিকাদার সংস্থা। অভিযুক্তদের অধিকাংশই আলিপুরদুয়ারের প্রাক্তন সাংসদ তৃণমূল নেতা দশরথ তিরকের অনুগামী বলে জানিয়েছেন অভিযোগকারী সংস্থার লোকজন। যদিও তৃণমূল ওই ঘটনার সঙ্গে তাদের কোনও সম্পর্ক নেই বলে জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাটি ঘটলেও ওই টোল প্লাজার কর্মীরা জানান, ঘটনার শুরু বুধবার রাতে। তাঁদের অভিযোগ, বুধবার রাত ১২টা নাগাদ একটি গাড়ি চার লেনের জাতীয় সড়ক দিয়ে যাচ্ছিল। সেই সময় টোল প্লাজায় গাড়িটি আটকানো হয়। টোল চাইলে প্লাজার কর্মীদের সঙ্গে গাড়ির চালক ও আরোহীদের বচসাও হয়। অভিযোগ, ওই সময় এক কর্মীকে মারধর করা হয়। পিস্তল এবং ভোজালি বের করে প্লাজার কর্মীদের মেরে ফেলারও হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। কিছুক্ষণ পর অভিযুক্তেরা চলে যায়।
অভিযোগ, বৃহস্পতিবার সকালে টোল প্লাজায় প্রায় পঞ্চাশজন লাঠিসোটা নিয়ে এসে ভাঙচুর চালায়। প্লাজার ১২টি কম্পিউটার, গেট, ১০টি কাউন্টার, জানালা-দরজা সব কিছু ভেঙে চুরমার করে দেওয়া হয়। তখনও পিস্তল এবং ভোজালি দেখিয়ে প্রায় ৩০ লক্ষ টাকা লুঠ করা হয় বলে লিখিত অভিযোগে জানিয়েছেন প্লাজার ঠিকাদার সংস্থার এক কর্তা অজিত কুণ্ডু। তিনিও এ দিন দাবি করেন, অভিযুক্তেরা প্রাক্তন সাংসদের অনুগামী।
অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন সাংসদ দশরথ তিরকে। তিনি এ দিন বলেন, ‘‘বুধবার প্লাজায় গাড়ি আটকে গালিগালাজ করেন টোল প্লাজার কর্মীরা। এই নিয়ে কিছু গন্ডগোল হয়। এই ঘটনার জেরে সকালে এলাকার লোকেরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এই ঘটনার সঙ্গে আমাকে জড়ানো হচ্ছে। আমি বিষয়টি আমাদের নেতাদের জানিয়েছি।’’ তৃণমূলের বারবিশা-১ অঞ্চল সভাপতি রতন পণ্ডিত অবশ্য দাবি করেন, যাঁদের নাম অভিযোগে লেখা হয়েছে তাঁরা কেউ ঘটনাস্থলেই যাননি। এটা রাজনৈতিক অভিসন্ধি ছাড়া কিছু নয়।
এই ঘটনাকে হাতিয়ার করে তৃণমূলের বিরুদ্ধে লাগাতার সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হয়েছে বিজেপি। আলিপুরদুয়ারের জেলা পুলিশ সুপার অমিতাভ মাইতি বলেন, ‘‘আমাদের কাছে এখনও কোনও অভিযোগ জমা পড়েনি। অভিযোগ পেলে আমরা ঘটনার তদন্ত করব।’’
প্লাজার ঠিকাদার সংস্থার কর্তা অজিতবাবুর অভিযোগ, ‘‘আমাদের টোল প্লাজার কর্মীদের লাঠি ও বন্দুক নিয়ে ধাওয়া করেন অভিযুক্তেরা। আমাদের কাছে সেই ভিডিয়ো ফুটেজ রয়েছে। বুধবার রাতের পর বৃহস্পতিবার সকালে টোল প্লাজা ভেঙে চুরমার করে দেওয়া হয়েছে। নগদ ৩০ লক্ষ টাকা লুঠ করে নেওয়া হয়েছে। অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’’
এদিকে, পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার রাতে যে গাড়িটির টোল চাওয়া নিয়ে ওই ঘটনার সূত্রপাত, ঘটনাচক্রে সেই গাড়িটির মালিক প্রাক্তন সাংসদের স্ত্রী চন্দ্রকলা তিরকে।