ডামডিম স্টেশনে পাথর বোঝাই করা হচ্ছে ওয়াগন। নিজস্ব চিত্র।
দীর্ঘ ৫৬ বছর পরে সবুজ ট্রেনের স্মৃতি উস্কে দিয়ে আন্তর্জাতিক সীমানা পেরিয়ে আজ, রবিবার হলদিবাড়ি-চিলাহাটি রেল রুটে ভারত থেকে প্রথম ৩০টি ওয়াগন নিয়ে পণ্যবাহী ট্রেন ছুটবে বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে। সেই মতো জোরদার প্রস্তুতিও শুরু হয়েছে হলদিবাড়ি স্টেশনে।
শনিবার সকাল থেকেই নবনির্মিত হলদিবাড়ি রেল স্টেশনটি সাফাইয়ের কাজ শুরু হয়েছে। দফায় দফায় স্টেশন পরিদর্শন করছেন কাস্টমস, ইমিগ্রেশন, রেল পুলিশ ও রেলের পদস্থ কর্তারা। স্টেশন বিল্ডিংয়ে দফতরগুলি নিজ নিজ অফিস সাজিয়ে তুলতে শুরু করেছে। প্রতি দফতরে বসছে কম্পিউটার।
১৯৪৭ সালে ভারত ভাগ হয়ে নতুন দেশের স্বীকৃতি পায় পাকিস্তান। তবে, ভারতের সঙ্গে পূর্ব পাকিস্তানে যাতায়াতের জন্য উত্তর-পূর্ব ভারতের প্রাচীন এই রেলপথটি সচল ছিল। ১৯৬৫ সালের পাক-ভারত যুদ্ধের সময় থেকে এটি সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়।
ছিটমহল বিনিময় চুক্তির পরে ভারত-বাংলাদেশ এই দুই দেশের সরকার ঐতিহ্যবাহী এই রেলপথ পুনরায় চালুর পরিকল্পনা করে। তার পরেই হলদিবাড়িতে গড়ে ওঠে আন্তর্জাতিক মানের রেল স্টেশন। আন্তর্জাতিক সীমান্ত পর্যন্ত পাতা হয় ৩.৩৪ কিমি রেললাইন। তেমন ভাবেই বাংলাদেশের নীলফামারি জেলার ডোমার উপজেলার চিলাহাটি স্টেশনকে নতুন করে গড়ে তোলে ওই দেশের সরকার। চিলাহাটি থেকে ভারতের সীমান্ত পর্যন্ত ৬.৭২৪ কিমি নতুন রেলপথ নির্মাণ করা হয়।
গত বছর ১৭ ডিসেম্বর দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী আন্তর্জাতিক এই রেল রুটের উদ্বোধন করেন। তার পরে বাংলাদেশ থেকে একটি খালি পন্যবাহী ট্রেন এলেও ভারত থেকে মাল বোঝাই কোনও ট্রেন ওই দেশে পারি দেয়নি। আজ, রবিবার সেই প্রতীক্ষার অবসান ঘটতে চলেছে।
রেল দফতর সূত্রে খবর, রবিবার সকালে ডামডিম স্টেশন থেকে ৫৯টি ওয়াগনে পাথর বোঝাই করে একটি ট্রেন এনজেপি, জলপাইগুড়ি হয়ে হলদিবাড়ি স্টেশনের পৌঁছবে। সঙ্গে থাকবে আরেকটি ব্রেক ভ্যান। এর পরে হলদিবাড়ি স্টেশনে কাগজপত্র পরীক্ষার পরে ৩০টি ওয়াগন ও একটি ব্রেক ভ্যান নিয়ে বাংলাদেশের চিলাহাটি স্টেশনের উদ্দেশ্যে যাত্রা করবে একটি ইঞ্জিন।
উত্তর-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সুভানন্দ চন্দ বলেন, ‘‘রবিবার হলদিবাড়ি স্টেশন হয়ে ৩০টি ওয়াগন ও একটি ব্রেক ভ্যান-সহ মালবাহী ট্রেন বাংলাদেশের চিলাহাটি স্টেশনে যাবে।’’