পাহাড়ে জলের সমস্যা দীর্ঘ দিনের। সেই সমস্যা মেটাতে ‘আরবান ওয়াটার সাপ্লাই’ প্রকল্পে মোট ৮৩৮ কোটি টাকার ডিপিআর তৈরি করে রাজ্যের জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতরে জমা দিয়েছে জিটিএ। ওই ডিপিআর তৈরি করা হয়েছে দার্জিলিং, কালিম্পং, কার্শিয়াং ও মিরিক পুর এলাকার জন্য। ‘রুরাল ওয়াটার সাপ্লাই’ প্রকল্পে সৌরিনি, তিনধরিয়া, রংবুল, সিটং ও পার্শ্ববর্তী এলাকার জন্য জিটিএ-র পক্ষ থেকে পৃথক ভাবে ৪৬ কোটি ৪৯ লক্ষ টাকার ডিপিআর তৈরি করে জমা দেওয়া হয়েছে রাজ্য সরকারের কাছে। জিটিএ-র তত্ত্বাবধায়ক কমিটির চেয়ারম্যান বিনয় তামাং বলেন, ‘‘আর্থিক বরাদ্দ পেলেই প্রকল্পের কাজ শুরু করে দেওয়া হবে। প্রকল্পগুলি চালু হলে পাহাড়ে জলের আর কোনও সমস্যা থাকবে না।’’
দার্জিলিং শহরে জল সরবরাহের দায়িত্বে রয়েছে পুরসভা। সেখানকার আধিকরিকরা জানিয়েছেন স্থানীয় কিছু ঝোরা থেকে শহরে জল সরবরাহ করা হয়। দার্জিলিং শহরের জন্য জিটিএ ২২৫ কোটি টাকার ডিপিআর তৈরি করেছে। ওই প্রকল্পে শ্রীখোলা ও সিঞ্চল ঝোরা থেকে প্রতিদিন ৩ মিলিয়ন গ্যালন জল শহরে সরবরাহ করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। বর্ষার জল ধরে রেখে বছরের অন্য সময় সেই জল সরবরাহ করার ব্যবস্থাপনাও প্রকল্পে রয়েছে।
কার্শিয়াং শহরেও জল সরবরাহ করে পুরসভা। স্থানীয় সিপাইধুরা এবং ডাওহিল-এ থাকা দু’টি রিজার্ভার থেকে জল-সরবরাহ করা হয়। স্থানীয় ঝোরা থেকে জল ভরা হয় ওই রিজার্ভারে। জিটিএ সূত্রে খবর, কার্শিয়াং এর জন্য ১৪৪ কোটি টাকার ডিপিআর তৈরি করা হয়েছে। কালিম্পং শহরে জল সরবরাহ করে জিটিএ। সেখানে স্থানীয় থকচু ও নেওড়াখোলা ঝোরা থেকে জল সরবরাহ করা হয়। কালিম্পং এর জন্য মোট ৪৬৯ কোটি টাকার ডিপিআর তৈরি হয়েছে। যারমধ্যে বিভিন্ন ঝোরা থেকে শহরে প্রতিদিন ১.৯৯ মিলিয়ন গ্যালন জল সরবরাহ করা, তিস্তা ও ডেলো লেক থেজে জল তোলা, পুরনো পাইপ লাইনের মেরামতি, নতুন পাইপ লাইন তৈরি ও আরও বেশ কিছু কাজ রয়েছে বলে জিটিএ সূত্রে জানা গিয়েছে।
জিটিএ-র এক আধিকারিক বলেন, ‘‘যখন পাহাড়ে পর্যটকদের ঢল নামে। সেসময় জলের চাহিদা আরও বেশি হয়। ইস্টার্ন হিমালয়ান ট্র্যাভেল অ্যান্ড ট্যুর অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি দেবাশিস মৈত্র বলেন, ‘‘পাহাড়ে জলের সমস্যা না মিটলে পর্যটন প্রসারের পরিকল্পনা অনেকাংশেই ব্যর্থ হবে।’’ বিনয় বলেন, ‘‘এখন জল সরবরাহ নিয়ে অনেক সমস্যা রয়েছে। কিছু সাময়িক ব্যবস্থা করছি। পর্যটনকেন্দ্রগুলোয় জল সরবরাহ অব্যাহত রাখতেও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’’