Tea workers

অবস্থানে বাধার মুখে শাসক দল

বিজেপি সমর্থকদের নিয়ে তৃণমূলের ধর্নীর সামনেই পাল্টা ধর্নায় বসেন এবং গ্রাম পঞ্চায়েতে ‘দুর্নীতি’ নিয়ে প্রধানের বাড়ি ঘেরাওয়ের কথা বলেন।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

উত্তরবঙ্গ শেষ আপডেট: ২৮ জানুয়ারি ২০২৩ ০৭:৫৩
Share:

কালচিনির বিজেপি বিধায়ক বিশাল লামার বাড়ির সামনে অবস্থানে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা। নিজস্ব চিত্র

আলিপুরদুয়ার জেলার চার বিধায়ক এবং সাংসদ জন বার্লার বাড়ির সামনে চা শ্রমিকদের পিএফের বকেয়া টাকা-সহ একাধিক দাবিতে শুক্রবার ধর্না দিয়ে বিক্ষোভ দেখাল তৃণমূল চা শ্রমিক ইউনিয়ন। আলিপুরদুয়ারের বিজেপি বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলালের বাড়ি বাদ দিয়ে জেলার চার বিধায়ক মনোজ টিগ্গা, মনোজ ওরাওঁ, বিশাল লামা এবং দীপক বর্মণের বাড়ির সামনে বিক্ষোভ দেখান তৃণমূল কর্মীরা। একই দাবিতে ফাঁসিদেওয়ার বিধাননগর, মাটিগাড়ার পাথরঘাটায় বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তা, দুই বিজেপি বিধায়ক আনন্দময় বর্মণ ও দূর্গা মুর্মুর বাড়ির সামনে ধর্না শুরু করে দার্জিলিং জেলা আইএনটিটিইউসি। আইএনটিটিইউসির দার্জিলিং জেলা সভাপতি নির্জল দে বলেন, ‘‘টানা ধর্না চলবে। ভোট এলেই চা বাগান নিয়ে বিজেপি প্রতিশ্রুতি দেয়। ওদের জনপ্রতিনিধিদের সব মনে করিয়ে দেব।’’

Advertisement

অবশ্য কালচিনির বিধায়ক বিশাল লামার বাড়ির সামনে অবস্থান কর্মসূচির প্রথম দিন, শুক্রবারেই এলাকাবাসী এবং বিজেপি কর্মীদের বাধার মুখে পড়তে হয় তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের। তৃণমূলের অভিযোগ, বিধায়ক ‘গুন্ডামি’ করেছেন। এ দিকে, বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, কয়েক দিনের মধ্যে জেলায়তৃণমূল পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানদের বাড়ির সামনে, ‘দুর্নীতির’ বিরুদ্ধে ধর্না কর্মসূচি নেওয়া হবে বিজেপির তরফেও। এ নিয়ে বিজেপিকে কটাক্ষ করেছে তৃণমূল।

সূত্রের খবর, এ দিন তৃণমূল চা শ্রমিক ইউনিয়ন ও দলের তরফে আলিপুরদুয়ারের সাংসদ জন বার্লার লক্ষ্মীপাড়া চা বাগানের বাড়ির সামনে বিক্ষোভ দেখানো হয়। বিক্ষোভ চলে ফালাকাটার বিধায়ক দীপক বর্মণ, মাদারিহাটের বিধায়ক মনোজ টিগ্গার বাড়ির কাছেও। কুমারগ্রামের বিধায়ক মনোজকুমার ওরাওঁয়ের বাড়ির সামনেও চলে অবস্থান-বিক্ষোভ।

Advertisement

এ দিন কালচিনির বিজেপি বিধায়ক বিশাল লামার বাড়ির সামনে অবস্থান করতে এলে বাধার মুখে পড়েন তৃণমূল নেতারা। গ্রামবাসী ও বিজেপি কর্মীরা দাবি করেন, গ্রামে তাঁরা বিক্ষোভ কর্মসূচি করতে দেবেন না। অবস্থান করতে হলে, বিধায়কের কার্যালয়ের সামনে করা হোক, গ্রামে কারও বাড়ির সামনে নয়। কোনও মতে সেখানে ধর্নায় বসেন তৃণমূল নেতা-কর্মীরা। এর পরেই সেখানে আসেন বিশাল লামা। তিনি বিজেপি সমর্থকদের নিয়ে তৃণমূলের ধর্নীর সামনেই পাল্টা ধর্নায় বসেন এবং গ্রাম পঞ্চায়েতে ‘দুর্নীতি’ নিয়ে প্রধানের বাড়ি ঘেরাওয়ের কথা বলেন।

বিশালের অভিযোগ, ‘‘তৃণমূল নেতা-কর্মীরা বলেন, ‘কেন্দ্র কোনও টাকা দেয় না’। অথচ, প্রতি বছর কেন্দ্রীয় প্রকল্পের অধীনে ব্লকের সব পঞ্চায়েতে কোটি কোটি টাকা আসে। সেটা কোথায় যায়! এর জবাব আমরা চাই, তাই গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের বাড়ি ঘেরাও করব।’’ তিনি বলেন, ‘‘বাগান মালিক যদি পিএফ, গ্র্যাচুইটি জমা না দেন, কেন্দ্র কী করবে! মালিক তো রাজ্য সরকারের অধীন। রাজ্য কেন মালিককে কিছু বলছে না।’’ এ দিন বিকেলে বিধায়কের নেতৃত্বে কালচিনির বিজেপি কার্যালয় থেকে র‌্যালি হয়, যা কালচিনি থানায় গিয়ে শেষ হয়। সেখানে তৃণমূলের এই কর্মসূচির বিরুদ্ধে স্মারকলিপি দেওয়া হয়।

আলিপুরদুয়ার জেলা বিজেপি সভাপতি ভূষণ মোদক বলেন, ‘‘আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই জেলার তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েত প্রধানদের দুর্নীতির প্রতিবাদে তাঁদের বাড়ির সামনে বিজেপির তরফে ধর্না কর্মসূচি নেওয়া হবে। আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনে মানুষ তৃণমূলকে যোগ্য জবাব দেবেন।’’

আলিপুরদুয়ার জেলা তৃণমূল সভাপতি প্রকাশ চিক বরাইক বলেন, ‘‘আমাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে ওরা মস্তানি করেছে। চা শ্রমিকদের স্বার্থে ডিসেম্বর থেকে আন্দোলন করছি। আগেই বলেছিলাম, চা শ্রমিকদের পিএফের টাকার সমস্যা না মিটলে বিধায়ক ও সাংসদদের বাড়ির সামনে ধর্না দেব। তাঁদের জানিয়েই কর্মসূচি করি। যে ভাবে গুন্ডামি করা হল, জবাব বিজেপি পাবে। পঞ্চায়েত প্রধানদের বাড়ির সামনে যদি ধর্না দিতে যায়, সেটা লোক দেখানো হবে। পঞ্চায়েত ও লোকসভা ভোটে যোগ্য জবাব পাবে বিজেপি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement