Bimal Gurung

বিমল-বিনয়ের দ্বন্দ্বে না উল্টো ফল হয়, আশঙ্কা

তৃণমূল মনে করছে, দু’পক্ষ একে অপরকে ভোট দেবে কি না তা স্পষ্ট নয়।

Advertisement

কৌশিক চৌধুরী

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৬:৪৬
Share:

তখনও পাশাপাশি: ২০১৭ সালে আন্দোলনের সময়। ফাইল চিত্র।

বিধানসভা ভোটের আগে দার্জিলিং পাহাড়ের বিমল গুরুং ও বিনয় তামাংয়ের এক মঞ্চে আসার সম্ভাবনা খুবই কম। গত দু’মাস ধরে তৃণমূল থেকে দু’পক্ষের সঙ্গে টানা আলোচনা চালানো হলেও এক মঞ্চে আনার কোনও প্রচেষ্টা হয়নি। বরং দুই তরফে দিনের পর দিন বেড়েছে রেষারেষি।

Advertisement

দলীয় সূত্রের খবর, ভোট ঘোষণার পরেই আসন বণ্টন করা হবে। তাতে পাহাড়ের তিনটি আসন দুই গোষ্ঠীর মধ্যে ভাগ হওয়ার কথা। ভোট শুক্রবারই ঘোষণা হয়েছে। কিন্তু এর মধ্যেই দুশ্চিন্তা বেড়েছে শাসক শিবিরে। একে অপরের প্রার্থীকে কি জেতাবেন দুই মোর্চা শিবির, নাকি রেষারেষিতে উল্টো ফলে একে অপরের ‘যাত্রাভঙ্গ’ হবে? বাক্সে ভোট ঠিকঠাক না পড়লে বিজেপি ও জিএনএলএফের লাভের আশা বাড়বেই। তাই আপাতত চেষ্টা চলছে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে দূরত্ব বজায় থাকলেও সমঝোতা রেখেই কাজ করার।

তৃণমূলের উত্তরবঙ্গের এক প্রবীণ নেতার কথায়, ‘‘বিমল, বিনয়ের টানাপড়েন, এলাকার দখলের রাজনীতি অনেক মোর্চা সমর্থক ভাল ভাবে নিচ্ছে না। এতে উল্টোদিকে ভোট পড়ার প্রবণতা তৈরি হয়ে যায়। সেখানে বিজেপি, জিএনএলএফ ঘোলা জলে মাছ ধরতে প্রস্তুত।’’ এই জায়গাটা ধরেই দু’পক্ষকে বোঝানোর কাজ চলছে বলে ওই নেতা জানান।

Advertisement

দল সূত্রের খবর, দুই শিবিরের টানাটানি এমন পর্যায়ে গিয়েছে, দু’দিন মিরিকে গুরুং সভা করেন। তার পরেই সেখানে যান বিরোধী শিবিরের সাধারণ সম্পাদক তথা জিটিএ চেয়ারম্যান অনীত থাপা। দু’পক্ষই একে অপরের সংগঠন ভাঙার দাবি করে দলত্যাগ অনুষ্ঠান করেন। তৃণমূলের পক্ষে দু’তরফ থেকে টানা কথা বলা হলেও একাংশ পাহাড়বাসীর কাছে তা এখনও গ্রহণযোগ্য হয়নি। মোর্চার অন্দরের খবর, টানা এক দশকের মতো সময় বিজেপির সঙ্গে থাকার পর গুরুংপন্থীদের অনেকেই তৃণমূলের সঙ্গে নতুন করা আসাটা মেনে নিতে পারছেন না। গুরুং পাহাড়, সমতলে ঘুরে ঘুরে সেই জায়গা তৈরির কাজ করলেও দলের মধ্যেই তিনি প্রশ্নের মুখে পড়েছেন। অন্যদিকে, অনীত, বিনয়েরা বরাবর রাজ্যের সঙ্গে থাকায় তাঁদের ক্ষেত্রে এই সমস্যাটা কিছুটা কম।

গুরুংপন্থী তিলক রোকা, স্বরাজ থাপা, শঙ্কর অধিকারীর মতো একাধিক কেন্দ্রীয় স্তরের নেতা গত এক মাসে বিজেপিতে চলে গিয়েছেন। সেখানে বারবার সংখ্যাগরিষ্ঠ পাহাড়বাসীর সমর্থনের কথা বললেও তা একজোট করতে গুরুংকে ঘাম ঝরাতে হচ্ছে। যা গত নির্বাচনগুলিতে ভাবতেই হয়নি তাঁকে। ঘরে বসেই কার্যত তিনি ভোট করেছেন। ২০১৬ সালে পাহাড়ের আসনগুলিতে ৬০ শতাংশের মতো ভোট পেয়েছিলেন মোর্চার প্রার্থীরা। ২০১৭ সালে শুধু দার্জিলিং আসনে গুরুং ছাড়াই ভোটে লড়ে বিনয়দের ভোট ৩০ শতাংশ নেমে আসে। কিন্তু গুরুংয়ের সমর্থনে লড়ে বিজেপি, জিএনএলএফ ৬০ শতাংশ ভোট পায়। গুরুং ফিরে তৃণমূলের হাত ধরাটাই অনেকেই মানছেন না। আর তাতে ঘুম কমছে ঘাসফুল শিবিরে।

তৃণমূল মনে করছে, দু’পক্ষ একে অপরকে ভোট দেবে কি না তা স্পষ্ট নয়। ঘাসফুলের প্রতীকে ভোটে লড়ালে সমস্যা বাড়বে। মাঝখানে বিজেপি-জিএনএলএফ লাভবান হয়ে না যায়। কিন্তু যা হবে তা চুপচাপ হবে বলেই মনে হচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement