বৈঠক: গঙ্গারামপুরে অর্পিতা। নিজস্ব চিত্র
জেলা পরিষদের দখলদারি নিয়ে তৃণমূল-বিজেপি দ্বৈরথে দক্ষিণ দিনাজপুরের গ্রামোন্নয়ন থমকে যাবে বলে আশঙ্কা রাজনৈতিক মহলের। এর জেরে আখেরে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন সাধারণ মানুষই। নির্বাচিত সদস্যদের একাংশ বিজেপিতে যোগ দেওয়ায় আগামী ২০২১ সাল পর্যন্ত জেলা পরিষদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়বে বলে আশঙ্কায় অনেকেই।
জেলা পরিষদে তৃণমূলের সদ্যনিযুক্ত দলনেতা প্রবীর রায়ও বলেন, ‘‘এটা ঠিকই যে, কাজকর্ম কিছুটা ব্যাহত হবে। তবে আমরা চেষ্টা করছি পরিষেবা স্বাভাবিক রাখতে।’’ জেলা পরিষদের ১৮ জন সদস্যের মধ্যে সভাধিপতি-সহ মোট ১০ সদস্য গত সোমবার বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। সেই থেকেই সমস্যার সূত্রপাত। তৃণমূলের দখলে থাকা এই জেলা পরিষদ যাতে কোনওভাবেই বিজেপির দখলে না যায় সেজন্য তৃণমূল শিবির পাল্টা চাল চালছে। কিন্তু জেলা পরিষদের বয়স আড়াই বছর না হওয়ায় তৃণমূল কিছুটা ব্যাকফুটে। এজন্য তৃণমূল না পারছে অনাস্থা আনতে, না পারছেন প্রশাসক বসাতে। এমনকি, চলে যাওয়া সদস্যদের সদস্যপদ খারিজও করতে পারছে না। কিন্তু তার পরেও হাল ছাড়তে চাইছে না তৃণমূল। আজ, শুক্রবার অথবা আগামী সোমবার তৃণমূলের দলনেতা আইনানুগ দিক দেখে বিজেপিতে যাওয়া সদস্যদের সদস্যপদ খারিজের আবেদন করবেন বলে খবর। পাশাপাশি, জেলা পরিষদে অডিট বসিয়ে চাপে ফেলার কৌশলও নিয়েছে তৃণমূল। কিন্তু তার পরেও পরিস্থিতি যেদিকে বাঁক নিয়েছে, তাতে ২০২১ সালের আগে কোনও ভাবেই তৃণমূল এই জেলা পরিষদ পুনর্দখল করতে পারছে না। ফলে জেলা পরিষদের কাজকর্ম শিকেয় ওঠার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
সূত্রের খবর, ডামাডোলের মধ্যে বিভিন্ন স্থায়ী সমিতিগুলির বৈঠক হবে না। হবে না বিভিন্ন কাজে অর্থ বরাদ্দ। রাস্তা থেকে বিভিন্ন কাজ বন্ধ হয়ে যাবে বলেই আধিকারিকদের একাংশের দাবি। অন্য দিকে, যেসব সদস্য বিজেপিতে গিয়েছেন তাঁদের বাড়িতে ক্রমাগত হামলা ও হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন বিজেপি নেতৃত্ব। হিলির গৌরী মালি, হরিরামপুরের পঞ্চানন বর্মণদের বাড়িতে ভয় দেখানো হয়েছে। তৃণমূলে ফিরে না এলে তাদের ভবিষ্যৎ খারাপ হবে বলে হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। গৌরীর বাড়িও ইতিমধ্যে ভাঙচুর হয়েছে। বিজেপির জেলা সভাপতি শুভেন্দু সরকার বলেন, ‘‘যাঁরা আমাদের দলে এসেছেন সেই সব সদস্যদের বাড়ি ভাঙচুর করে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এইভাবে ভয় দেখিয়ে তৃণমূল জেলা পরিষদ দখলে রাখতে চাইছে। আমাদের সদস্যদের আমরা নিরাপত্তা দেব।’’