হাসপাতালে ভর্তি বিনয় বর্মণ। — নিজস্ব চিত্র।
আবার রাজনৈতিক হিংসা কোচবিহারের দিনহাটায়। এ বার এক তৃণমূল কর্মীর গলায় কুড়ুলের কোপ মারার অভিযোগ উঠল বিজেপির বিরুদ্ধে। তৃণমূলের দাবি, জোড়া ফুল প্রার্থীর স্বামীর উপর আক্রমণের ছক কষা হয়েছিল। তাঁকে না পেয়ে ওই কর্মীর উপর হামলা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ। জখম ওই তৃণমূল কর্মীকে কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করানো হয়। তৃণমূলের তোলা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে বিজেপি। গেরুয়াশিবিরের দাবি, এই ঘটনা তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দলের ফল।
তৃণমূলের দাবি, সোমবার রাতে দিনহাটার বড় আঁটিয়াবাড়ি-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের ২৩৬ নম্বর বুথে তৃণমূল প্রার্থী শর্মিষ্ঠা সরকারের স্বামী দেবাশিস বর্মণ এবং তৃণমূল কর্মী বিনয় বর্মণ এলাকায় বাড়ি বাড়ি প্রচারে বেরিয়েছিলেন। রাতে বাড়ি ফেরার সময় বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা দেবাশিসকে মারতে গিয়ে বিনয়ের উপর ভুল করে হামলা চালায় বলে অভিযোগ। দেবাশিস বলেন, ‘‘গত রাতে আমরা লোকের বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচার করছিলাম। সেই সময় বৃষ্টি নামায় আমরা ছন্নছাড়া হয়ে পড়ি। এর পর আমরা যে যার মতো বাড়ি চলে যাই। তার পর খবর পাই বিজেপির লোকজন বিনয়কে ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলায় মেরেছে।’’ তাঁর অভিযোগ, এলাকায় সন্ত্রাস তৈরি করতে বিজেপি ভিন্রাজ্য থেকে লোক জড়ো করছে কোচবিহারে। তাঁর দাবি, ‘‘আমাকে টার্গেট করা হয়েছিল। কিন্তু ওরা ভুলবশত বিনয়ের উপর আক্রমণ করেছে।’’
তৃণমূলের কোচবিহার জেলার মুখপাত্র পার্থপ্রতিম রায় আহত বিনয়কে দেখতে হাসপাতালে যান মঙ্গলবার। তিনি বলেন, ‘‘বিজেপির টার্গেট ছিল প্রার্থীর স্বামীকে মারা। কিন্তু ভুলবশত তারা বিনয়ের উপর আক্রমণ করে। গত কাল দু’জনে প্রায় একই রকম জামা পরেছিলেন। সেই কারণেই ওরা ভুল করেছে।’’
তৃণমূলের তোলা অভিযোগ নিয়ে বিজেপির কোচবিহার জেলার সভাপতি সুকুমার রায় বলেন, ‘‘গত কাল রাতে গীতালদহে তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দলের ফলে তাদেরই এক প্রার্থীর স্বামীর পায়ে গুলি লেগেছে। আঁটিয়াবাড়ির ঘটনাও একই। তৃণমূল সকলকে টিকিট দিতে পারেনি। তাই নিজেদের মধ্যেই এখন মারামারি শুরু হয়েছে। ওরা বিজেপির উপর দোষ চাপাচ্ছে।’’
কোচবিহারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সানি রাজ জানিয়েছেন, আহতকে প্রথমে দিনহাটা এসডি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তার পর তাঁকে সেখান থেকে স্থানান্তরিত করানো হয় এমজেএন হাসপাতালে। বিনয়ের শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক। তিনি এখনও অচৈতন্য অবস্থায় রয়েছেন বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার। তাঁর মতে, এই ঘটনার পিছনে বিনয়ের পরিবারের কারও হাত থাকতে পারে। ঘটনার তদন্ত চলছে। এর আগে গত শনিবার রাতে দিনহাটারই কিসামত দশগ্রাম এলাকায় শম্ভু দাস (২৪) নামে এক বিজেপি কর্মীর মৃত্যু হয়।