নেত্রী: বৈঠকের পর দোলা সেন।
একুশের নির্বাচনের আগে শ্রমিকদের কাছে টানতে এবার চা বাগানে মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে সরব হল তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন। সোমবার আলিপুরদুয়ার জংশনে সংগঠনের আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহার কোর কমিটির সদস্যদের নিয়ে বৈঠক করেন আইএনটিটিইউসি-র সভানেত্রী দোলা সেন। সূত্রের খবর, এই বৈঠকেই দ্রুত চা শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে সরব হন আইএনটিটিইউসি-র নেতারা। দোলা অবশ্য সংগঠনের নেতাদের আশ্বাস দেন, রাজ্য সরকার নিয়ম মেনেই চা বাগান শ্রমিকদের মজুরি বাড়াবে। পরে বিভিন্ন ক্ষেত্রের চা শিল্পেও ন্যূনতম মজুরি চালু হবে।
রাজ্যে তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে চা শ্রমিকেরা দৈনিক ১৭৬ টাকা মজুরি পাচ্ছেন। কিন্তু বর্তমান বাজার দরের কথা মাথায় রেখে চা শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি দেওয়ার দাবিতে সরব বিরোধীরা। এই দাবিতে বিভিন্ন সময়ে বিরোধীরা একজোট হয়ে নানা আন্দোলনও করছে। খোদ তৃণমূল নেতাদের একাংশের কথায়, ন্যূনতম মজুরি নিয়ে বিরোধীদের এই আন্দোলনেরই ফসল ঘরে তুলছে বিজেপি। যার জেরে গত লোকসভা নির্বাচনে চা বাগান অধ্যুষিত আলিপুরদুয়ার কেন্দ্রে বিজেপির কাছে তাদেরকে পর্যুদস্ত হতে হয়। একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগেও চা বলয়ে বিজেপি উত্থান অব্যাহত।
এই পরিস্থিতিতে সোমবার জংশনে আইএনটিটিইউসির জেলা সভাপতি মানিক দে-র বাড়িতে দোলা সেনের ডাকা বৈঠকে চা শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে সরব হন সংগঠনের জেলা নেতারা। তরাই-ডুয়ার্স প্ল্যান্টেশন ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের জেলা সভাপতি নকুল সোনার বলেন, “রাজ্যে তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পরই চা শ্রমিকদের মজুরি বেড়েছে। কিন্তু ২০১৮ সালের পর চা শ্রমিকদের আর মজুরি বাড়েনি। ফলে চা শ্রমিকেরা বর্তমান বাজারের পরিস্থিতির তুলনায় যথেষ্ট কম মজুরি পাচ্ছেন। তাই চা শ্রমিকদের মজুরি দ্রুত বাড়ানোর ব্যবস্থা নিতে সংগঠনের শীর্ষ নেত্রীকে এ দিন বলা হয়।”
সূত্রের খবর, চা বলয়ে সংগঠনকে শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে আলিপুরদুয়ারের নেতাদের একটা অংশের মধ্যে যে যথেষ্ট ঢিলেঢালা মনোভাব রয়েছে, এ দিনের বৈঠকের আলোচনায় সেটা ওঠে। এই অবস্থায় প্রতি সপ্তাহে নেতারা যাতে নিয়মিত বাগানে গিয়ে শ্রমিকদের সমস্যার কথা শোনেন এবং সেই সমস্যার বিষয়ে সংগঠনের রাজ্য নেতৃত্বকে জানান, সে বিষয়ে আলোচনা হয়।
যদিও বৈঠক শেষে দোলা বলেন, ‘‘দুই জেলা নিয়ে এটা একটা ঘরোয়া বৈঠক।’’ চা শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি নিয়ে তিনি বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার ক্ষমতায় আসার পর কোনও দাবি ছাড়া বিভিন্ন দফায় চা শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি হয়। নিয়ম মেনে আরও মজুরি বৃদ্ধি হবে। সেইসঙ্গে ৬৩টি ক্ষেত্রে ন্যূনতম মজুরি চালু হয়। চা সমেত যে ক্ষেত্রগুলো ওই ৬৩টির মধ্যে নেই, সেগুলিতেও ধাপে ধাপে ন্যুনতম মজুরি চালু হবে।’’