ফাইল চিত্র
বিজেপির মিছিলের জবাবে শিলিগুড়িতে পাল্টা মিছিলের ডাক দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। ৩ জানুয়ারি ওই মিছিলে কয়েক লক্ষ মানুষকে সামিল করানোর প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। শুক্রবার শিলিগুড়িতে উত্তরবঙ্গের পাঁচ জেলাকে নিয়ে গঠিত কোর কমিটির বৈঠকে তা নিয়ে আলোচনা হয়। কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি কালিম্পং এবং দার্জিলিং— এই পাঁচ জেলার কোর কমিটির চেয়ারম্যান গৌতম দেব বলেন, ‘‘এই মিছিলকে সর্বকালের সেরা, ঐতিহাসিক মিছিল করার জন্য সমস্ত রকম প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। পাহাড় থেকে প্রচুর লোক আসবেন। শান্তা ছেত্রী সে ব্যাপারে উদ্যোগী। সেই সঙ্গে অশেপাশের জেলাগুলি থেকেও অনেকে আসবেন। তবে দার্জিলিং জেলা এবং জলপাইগুড়ি জেলা থেকেই বেশি লোক আসছে।’’
বিজেপির মিছিলে ভিড় জমলেও পাহাড় থেকে লোক খুব কমই এসেছে বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মত। যদিও সেই ঘাটতি পূষিয়ে দিয়েছে চা বলয়। ৩ তারিখের মিছিলটি তৃণমূল করতে চাইছে মূলত আশপাশের এলাকা থেকে লোক এনে। তবে এই দলে পাহাড়কে সামিল করতে বদ্ধ পরিকর গৌতম দেবরা। তৃণমূল সূত্রে বলা হচ্ছে, পাহাড় যদি বিজেপির থেকে মুখ ফিরিয়ে থাকে, তা হলে তাদের নিজেদের দিকে টানাটা সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হবে। তাই পাহাড়ের বিভিন্ন মহকুমায় প্রস্তুতি মিছিলও হবে। সেই সঙ্গে তরাই, ডুয়ার্সের চা বলয়কেও যে মিছিলে সামিল করানো হবে, তা নিয়ে এদিন কোর কমিটির বৈঠকেও আলোচনা হয়। এদিন আলিপুরদুয়ার থেকে সৌরভ চক্রবর্তী, মোহন শর্মারাও বৈঠকে ছিলেন।
আগামী বছরেই শিলিগুড়িতে পুরভোট হওয়ার কথা। কোর কমিটির বৈঠকে তাই দলের কাউন্সিলরদেরও ডাকা হয়। মিছিলে শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে কর্মী-সমর্থক বাসিন্দাদের সামিল করানোর কথা বলা হয়েছে। শনিবার শিলিগুড়ি শহর-সহ মহকুমায় চার জায়গায় জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) এবং নতুন নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) বিরোধিতায় অবস্থান বিক্ষোভ কর্মসূচি নিয়েছে তৃণমূল।
সব কিছু ঠিক থাকলে ৩ জানুয়ারির মিছিলে উপস্থিত থাকছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই। মিছিল কোন পথে যাবে, তা চূড়ান্ত করতে দু’টি প্রস্তাব কলকাতায় দলনেত্রীর কাছে পঠানো হয়েছে। একটি তিনবাতি থেকে বর্ধমান রোড হয়ে হিলকার্ট রোড ধরে দার্জিলিং মোড় যাবে। অন্য রুটটি তিনবাতি থেকে বর্ধমান রোড হয়ে মহানন্দা সেতু ঘুরে হিলকার্ট রোড ধরে হাসমিচকে গিয়ে শেষ হবে। বিজেপি যে ভাবে শহরের মধ্যে মিছিল করে প্রচারের চেষ্টা করেছে, পাল্টা মিছিলে তৃণমূল নেতৃত্বও চাইছেন মিছিলকে শহরের মাঝে রাখতে। মিছিলে কয়েক লক্ষ লোক টানার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে বলে পর্যটনমন্ত্রী এ দিন জানিয়েছেন।
যেখানেই মিছিল, প্রচারসভা হবে, সেখানে দলের সমস্ত স্তরের কর্মীকে সামিল করানোর বার্তাও কোর কমিটির বৈঠকে দেওয়া হয়েছে। দ্বন্দ্ব ভুলে বিভিন্ন জেলায় কর্মী-সমর্থকদের একসঙ্গে নিয়ে চলার কথাও বলা হয়। কোর কমিটির চেয়ারম্যান জানান, ‘‘দলের অভ্যন্তরীণ কিছু বিষয় নিয়ে কথা হয়েছে। রাজ্যের বিভিন্ন প্রকল্প নিয়ে বাড়ি বাড়ি প্রচারে যাওয়া হবে। এনআরসি এবং সিএএ-র বিরোধিতা করে বাসিন্দাদের বোঝানো হবে।’’