প্রতিরোধ: জেলা পরিষদ অভিযানে পুলিশের ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা বাম কর্মীদের। কোচবিহারে। নিজস্ব চিত্র
জেলা পরিষদ অভিযানে কোচবিহারে বামফ্রন্টের সঙ্গে যৌথ কর্মসূচিতে ‘গরহাজির’ কংগ্রেস।
বৃহস্পতিবার কোচবিহারে একাধিক দাবিতে জেলা পরিষদ অভিযানের ডাক দেওয়া হয়েছিল। বামফ্রন্ট ও কংগ্রেসের তরফে কর্মসূচির প্রচারও করা হয়। কিন্ত শেষ পর্যন্ত কর্মসূচির মিছিলে লাল পতাকা থাকলেও, কংগ্রেসের পতাকা দেখা গেল না। ছিলেন না জেলা কংগ্রেসের শীর্ষ নেতারাও। যা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে চর্চা শুরু হয়েছে। তৃণমূলের কটাক্ষ, ‘‘এতেই স্পস্ট, জোটের ফানুস ফেটে গিয়েছে।’’
জেলা বামফ্রন্টের নেতা, সিপিএমের কোচবিহার জেলা সম্পাদক অনন্ত রায় বলেন, ‘‘জেলা কংগ্রেস নেতৃত্বের সঙ্গে কর্মসূচি শুরুর আগেও কথা হয়েছিল। তার পরেও কেন কংগ্রেসের কেউ এলেন না, তা জানি না। পরে, ওই ব্যাপারে কংগ্রেস নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলব।’’ কোচবিহার জেলা কংগ্রেসের কার্যকরী সভাপতি রবীন রায়ের সঙ্গে যৌথ কর্মসূচি নিয়ে কথা হয়েছিল বলেও সিপিএম সূত্রে দাবি। এ দিন একাধিক বার ফোন করলেও রবীনের মোবাইল বন্ধ থাকায় তাঁর বক্তব্য জানা যায়নি। কোচবিহার জেলা কংগ্রেসের অন্য কার্যকরী সভাপতি পার্থপ্রতিম ইশোর অবশ্য বলেন, ‘‘যৌথ কর্মসূচি নিয়ে দলের কোনও নির্দেশ আসেনি। আমি ওই কর্মসূচির কথা জানতাম না। অন্য কে, কী বলেছেন তা নিয়ে কিছু বলার নেই।’’ পঞ্চায়েত ভোটের আগে বাম, কংগ্রেসের ঐক্যের বার্তা দিতে এ দিনের জেলা পরিষদ অভিযান নিয়ে দুই শিবিরের কর্মী-সমর্থকদের একাংশে আলোচনা ছিল। কিন্তু কংগ্রেসের ‘গরহাজিরা’ ওই ঐক্যের বার্তা প্রশ্ন তুলে দিল বলে রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছেন। জেলা তৃণমূল নেতা, কোচবিহার জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ আব্দুল জলিল আহমেদ বলেন, ‘‘যৌথ কর্মসূচির প্রচার আমরাও শুনেছি। কিন্তু কংগ্রেসের এক জন নেতা বা একটা পতাকাও কর্মসূচিতে ছিল না। এতেই স্পষ্ট ওদের জোটের ফানুস ফেটে গিয়েছে।’’
জেলা পরিষদের কাজে দুর্নীতি, একশো দিনের প্রকল্পে বকেয়া টাকা মেটানো-সহ একাধিক দাবিতে ওই কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়। তৃণমূল অবশ্য পাল্টা বলেছে, দুর্নীতির অভিযোগ ভিত্তিহীন। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে পঞ্চায়েত ভোটের মুখে সবই অপপ্রচারের চেষ্টা।
এ দিন দুপুর থেকে কোচবিহারের সুনীতি রোড লাগোয়া এলাকায় জড়ো হন বাম কর্মী-সমর্থকরা। পরে মিছিল করে জেলা পরিষদের দিকে রওনা দেয় মিছিল। কর্মসূচি ঘিরে অশান্তির আশঙ্কা এড়াতে বিশাল পুলিশ বাহিনী জেলা পরিষদ লাগোয়া রাস্তায় মোতায়েন করা হয়। ছিল একাধিক ব্যারিকেড। প্রথম ব্যারিকেড ভেঙে আন্দোলনকারীরা এগোলেও, দ্বিতীয় ব্যারিকেডের আগেই মিছিল আটকে দেয় পুলিশ। সেখানেই জমায়েত করে বক্তব্য রাখেন বাম নেতারা। ফরওয়ার্ড ব্লকের কোচবিহার জেলা সম্পাদক অক্ষয় ঠাকুর দাবি করেন, তিন হাজারের বেশি মানুষ অভিযানে শামিল হয়েছেন।