বীরনগর-২ গ্রাম পঞ্চায়েত। নিজস্ব চিত্র।
বিজেপি-র সঙ্গে হাত মিলিয়ে দলীয় পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনলেন তৃণমূলের সদস্যরা। মালদহের কালিয়াচক-৩ নম্বর ব্লকের বীরনগর-২ গ্রাম পঞ্চায়েতে ঘটেছে এই ঘটনা। স্থানীয় বিধায়কের নেতৃত্বে পঞ্চায়েত সদস্যরা প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা জানিয়েছেন। এ নিয়ে পঞ্চায়েত প্রধান সোমা রায়ের অভিযোগ, ‘কাটমানি’ না দেওয়ায় তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছেন বিধায়ক চন্দনা সরকার এবং তাঁর স্বামী বাচ্চু সরকার। সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিধায়ক। ঘটনার জেরে ফের সামনে এসেছে শাসকদলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব।
২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে বীরনগর-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৭টি আসনের মধ্যে ৭টি করে আসন জেতে তৃণমূল এবং বিজেপি। একটি আসন যায় কংগ্রেসের দখলে। অন্য দু’টিতে জিতেছিলেন নির্দল প্রার্থীরা। কংগ্রেস এবং নির্দলদের সমর্থনে প্রধান হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন তৃণমূলের সোমা রায়। তাঁর বিরুদ্ধেই আনা হয়েছে অনাস্থা প্রস্তাব। ঘটনা নিয়ে সোমা বলেছেন, ‘‘আমাকে সরিয়ে বিজেপি-র লোককে প্রধান করার জন্য ষড়যন্ত্র করেছেন স্থানীয় বিধায়ক এবং তাঁর স্বামী। উন্নয়নের কাজ করার পরও আমাকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে।’’ গোটা বিষয়টি জেলা প্রশাসনকে জানিয়েছেন তিনি। তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি মনু ঘোষ বলেছেন, ‘‘বিধায়ক এবং তাঁর স্বামীকে কাটমানি না দেওয়াতেই এই চক্রান্ত করা হয়েছে।’’
ষড়যন্ত্রের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বৈষ্ণবনগরের তৃণমূল বিধায়ক চন্দনা সরকার। তিনি বলেছেন, ‘‘কাটমানির অভিযোগ ভিত্তিহীন। অনেক জায়গাতেই পঞ্চায়েত সদস্যরা দলীয় নেতৃত্বের কথা শুনছেন না।’’ সেই সঙ্গে ওই পঞ্চায়েতের বিজেপি সদস্যরা তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন বলেও দাবি করেছেন তিনি। এর মধ্যে ওই পঞ্চায়েত দখলের স্বপ্ন দেখছেন মালদহ জেলা বিজেপি সভাপতি গোবিন্দচন্দ্র মণ্ডল। তিনি বলেছেন, ‘‘ওই প্রধান দুর্নীতিতে নিমজ্জিত। তাই তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনা হয়েছে। বিজেপি সদস্যরা নতুন প্রধান নির্বাচন করবেন। এবং এই পঞ্চায়েতও আমাদের হবে।’’
এর আগে মালদহের মানিকচক ব্লকের চৌকি মিরদাদপুর গ্রাম পঞ্চায়েতেও একই ঘটনা ঘটেছিল। এই ধরনের ঘটনা চলতে থাকায় বেজায় অস্বস্তিতে পড়েছেন শাসকদলের জেলা নেতৃত্ব। জেলা নেতৃত্বের তরফে জানানো হয়েছে, দলবিরোধী কাজে যুক্ত থাকলে তা কঠোর হাতে দমন করা হবে।