বিপ্লব মিত্র। —ফাইল চিত্র।
দলের সঙ্গে ‘বেইমানি’ করলে আগামী দিনে কারও পদ থাকবে না। শনিবার দলীয় বৈঠকে দলের নেতা-কর্মীদের হুঁশিয়ারি দিয়ে রাখলেন দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা তৃণমূল নেতা তথা ক্রেতাসুরক্ষা মন্ত্রী বিপ্লব মিত্র। আগামী বিধানসভা ভোটের আগে দল গোছানোর প্রস্তুতি শুরু করেছে তৃণমূল। তার আগে মন্ত্রীর হুঁশিয়ারিতে ফের বেসুরোবিরোধী গোষ্ঠীর নেতারা। আদৌ কি ভোটের আগে শাসক দলের কোন্দল জেলায় মিটবে, উঠেছে প্রশ্ন।
শেষ লোকসভা ভোটে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের কাছে দশ হাজার ভোটে হেরে যান বিপ্লব। সে সময় তার বিরোধী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ভোটে দলবিরোধী কাজের অভিযোগও তুলেছিলেন তিনি। সামনে বছর বিধানসভা নির্বাচন। দল গোছানোর প্রস্তুতি শুরু হতেই সেই প্রসঙ্গ টেনে আনেন বিপ্লব। শনিবার গঙ্গারামপুরে একটি দলীয় বৈঠকে তিনি নাকি এমনও বলেছেন, বিরোধিতা করলে দল বেঁধে তাদের বাড়ি ঘেরাও করে দল থেকে বের করে দেওয়া হবে। বিপ্লবের হুঁশিয়ারিতে তেলে-বেগুনে জ্বলে উঠেছে বিরোধী শিবির। সমাজ মাধ্যমে নাম না করে মন্ত্রীকে কটাক্ষ করে কড়া জবাব দিয়েছেন প্রাক্তন জেলা সভাপতি তথা বিপ্লব বিরোধী শিবিরের নেতা মৃণাল সরকার। মৃণাল বলেন, “অন্যকে দোষারোপ করার আগে গঙ্গারামপুর পুর-এলাকার ফল কেন মন্ত্রী দেখতে পাচ্ছেন না?” গঙ্গারামপুর পুরসভার চেয়ারম্যান মন্ত্রীর ভাই প্রশান্ত। ওই পুরসভায় নিজের ওয়ার্ডেই বিজেপির কাছে পিছিয়ে ছিলেন বিপ্লব। মন্ত্রীর হুঁশিয়ারি নিয়ে দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা বিপ্লব বিরোধী নেতা গৌতম দাস বলেন, “যারা কখনও নির্দল, কখনও দলের প্রার্থীকে হারিয়ে দিতে সচেষ্ট, তাদের মুখে এ সব মানায় না।’’ মন্ত্রীর খাসতালুক গঙ্গারামপুর থেকেই তৃণমূল প্রার্থী হিসেবে হেরে যান গৌতম। বৈঠকে ছিলেন যুব তৃণমূল জেলা সভাপতি অম্বরীশ সরকার। অম্বরীশ বলেন, “যদি কারও নির্দিষ্ট বক্তব্য থাকে, তবে তা রাজ্যকে জানাক। সব পরিষ্কার হবে। তা না করে বারবার এ সব কথা শোনা যাবে না।’’
কেন বলতে হল এমন কথা?
বিপ্লব জানিয়েছেন, গত লোকসভা নির্বাচনের দিন বিজেপির হয়ে ভোট করানোর অভিযোগে খোদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অফিস থেকে গঙ্গারামপুরের কয়েক জনের কাছে ফোন এসেছিল। বিপ্লব বলেন, ‘‘আমি তো ঠিকই বলেছি। ভোটের সময় বিরোধীদের হয়ে কাজ করার মানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরোধিতা করা। বারবার তা চলবে না।’’ ড্যামেজ কন্ট্রোলে নেমে তৃণমূলের জেলা সভাপতি সুভাষ ভাওয়ালের ব্যাখ্যা, “কাউকে হুমকি বা হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়নি। দলে বরিষ্ঠ হিসেবে মন্ত্রী একসঙ্গে চলার বার্তাই দিয়েছেন।’’