আন্দোলনে তিন দলই

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বাতিলের দাবিতে দক্ষিণ দিনাজপুরে আলাদা করে তৃণমূল এবং বামেরা আন্দোলনে নামছে। কংগ্রেসেরও জনসভা রয়েছে মাসের শেষ সপ্তাহে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০১৯ ০১:৪৭
Share:

প্রতীকী ছবি

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বাতিলের দাবিতে দক্ষিণ দিনাজপুরে আলাদা করে তৃণমূল এবং বামেরা আন্দোলনে নামছে। আজ, রবিবার ৮টি ব্লকেই তৃণমূল কর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল করে ওই আইনের প্রতিবাদ জানাবেন। সোমবার আন্দোলন হবে জেলা সদর বালুরঘাটে। বামেরা সোমবার থেকে বৃহস্পতিবার (১৬-১৯ ডিসেম্বর) জেলাজুড়ে প্রতিবাদ গড়ে তুলবে। উত্তর দিনাজপুরেও আজ ও বৃহস্পতিবার একই কর্মসূচি রয়েছে যথাক্রমে তৃণমূল ও সিপিএমের। কংগ্রেসেরও জনসভা রয়েছে মাসের শেষ সপ্তাহে। কিন্তু বিজেপি এখনই পাল্টা আন্দোলনে নামছে না উত্তর দিনাজপুরে। বদলে ন’টি ব্লকের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ওই আইনের সমর্থনে বাসিন্দাদের বোঝাতে নেতাদের শনিবার নির্দেশ দিয়েছেন জেলা নেতৃত্ব। অন্য দিকে, বামফ্রন্ট, কংগ্রেসের শক্ত ঘাঁটি বলে এক সময়ে পরিচিত মালদহে আন্দোলন, পাল্টা আন্দোলনে থাকছে তৃণমূল, বিজেপিই। তাতে ক্ষোভ ছড়িয়েছে বাম-কংগ্রেসের নিচুতলার কর্মীদের মধ্যে। যদিও কর্মসূচি নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন দু’দলের নেতৃত্ব।

Advertisement

শনিবার তৃণমূলের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা সভাপতি অর্পিতা ঘোষ অভিযোগ করেন, ‘‘দেশের সংবিধানকে মান্যতা না দিয়ে কেবল সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে কেন্দ্রীয় সরকার নতুন নাগরিকত্ব আইন পাশ করেছে। তার জেরে চার দিকে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। দেশের এই দুর্দিনের মোকাবিলায় শান্তিপূর্ণ ভাবে আজ, রবিবার থেকে ওই আইন বাতিলের দাবিতে প্রতিবাদ আন্দোলন শুরু হবে।’’

বালুরঘাটের বিধায়ক তথা আরএসপির রাজ্য সম্পাদক বিশ্বনাথ চৌধুরীর দাবি করেন, ওই আইন লাগু করার প্রাথমিক ধাপ এনপিআর-এর কাজ শুরু করার থেকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকেও বিরত থাকতে হবে। ডিটেনশন ক্যাম্পের কাজ বন্ধ করতে হবে বলে জানিয়ে বিশ্বনাথ বলেন, ‘‘শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক পথে বামদল প্রতিবাদ জানাবে।’’ অন্যদেরও শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখার আহ্বান জনিয়েছে আরএসপি।

Advertisement

জেলার রাজবংশী ইউনাইটেড জনজাগরণ সংগঠনের জেলা সম্পাদক বিপ্লব বর্মণ জানান, ‘‘শীঘ্র আন্দোলনে নামা হবে। রাজ্যকমিটি স্তরে আলোচনা চলছে।’’

অন্য দিকে, সম্প্রতি কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে হারের কারণ হিসেবে বিজেপির জেলা নেতৃত্ব এনআরসিকে দায়ী করেছেন। বিজেপির অন্দরের খবর, এই পরিস্থিতিতে তাঁরা সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে বাসিন্দাদের মনোভাব বোঝার চেষ্টা করছেন।

বিজেপির প্রাক্তন উত্তর দিনাজপুর সভাপতি নির্মল দামের বক্তব্য, ‘‘তৃণমূল, সিপিএম ও কংগ্রেস বাসিন্দাদের ভুল বুঝিয়ে আতঙ্কিত করে তুলেছে। তার জেরে কিছু বাসিন্দা আইন বাতিলের দাবিতে আন্দোলনের নামে জেলাজুড়ে অরাজকতা ও অস্থিরতার পরিবেশ সৃষ্টি করেছেন।’’

বিজেপির জেলা সভাপতি বিশ্বজিৎ লাহিড়ীর দাবি, ‘‘বিরোধীদের মিথ্যাচারের আন্দোলন না থামা পর্যন্ত সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে বাসিন্দাদের মনোভাব বোঝা সম্ভব নয়। তাই বিরোধীদের আন্দোলন থামলে তার পরে প্রয়োজনে দলের তরফে ওই আইন বোঝাতে ব্লকে ব্লকে জনসভা করা হবে।’’

মালদহে মূল্যবৃদ্ধি থেকে এনআরসি, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে রাস্তায় নেমে আন্দোলন করছে তৃণমূল। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ব্লক স্তরে এনআরসি বিরোধী কর্মসূচি হয়েছে। এ বার পঞ্চায়েত স্তরেও করা হবে। পাল্টা ময়দানে নেমেছে বিজেপিও। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গ্রামে গ্রামে গিয়ে আইনের পক্ষে সাধারণ মানুষকে বোঝাচ্ছেন জেলার নেতারা। এ দিকে বাম-কংগ্রেসের অন্দরমহলের খবর, জেলা স্তরে এখনও কারও কোনও কর্মসূচির নির্ঘণ্ট তৈরি করা হয়নি। তবে রাজ্য স্তর থেকে জেলা জুড়ে আন্দোলনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানালেন নেতারা। কংগ্রেস সূত্রে জানানো হয়েছে, জানুয়ারি মাস থেকে জেলা জুড়ে আন্দোলন শুরু করবে তারা। জেলা সভাপতি মোস্তাক আলম বলেন, ‘‘প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব আন্দোলনের সময়সূচি দিয়েছেন। সেই মতো আমাদের কর্মসূচি চলবে।’’ সিপিএম সূত্রে খবর, ১৭ ডিসেম্বর রাস্তায় নামছে তারা। জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্র বলেন, ‘‘মিছিল, পথসভা করা হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement