প্রতীকী ছবি।
পাঁচ বছর আগে নিয়োগ হয়েছে। কিন্তু যাঁকে নিয়োগ করা হয়েছে তাঁর তথ্যই যাচাই করা হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে জলপাইগুড়িতে। তৃণমূলের এক প্রভাবশালী নেতার ছেলে ২০১৭ সালে প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি পেয়েছিলেন। অভিযোগ, তাঁর নাম প্রথমে প্যানেলে ছিল না। হঠাৎ করে তাঁর নিয়োগের বার্তা আসে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদে। তড়িঘড়ি তাঁকে নিয়োগ করে দেওয়া হয় বলে দাবি। নিয়োগের ক্ষেত্রে যে নথিপত্র যাচাই বাঞ্ছনীয়, তা সেই সময়ে করা হয়নি বলে অভিযোগ। সম্প্রতি হাই কোর্টের নির্দেশে চাকরি-পাওয়া সকলের নথি জমার সময় প্রথমবার সেই নেতার ছেলের নামের নথি জমা পড়েছে বলে খবর মিলেছে।
অভিযোগ, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের দফতরে রাতের বেলা দরজা বন্ধ করে ভুয়ো নম্বরের তালিকা তৈরি হয়েছিল। সে সব নিয়ে নতুন করে অভিযোগ তুলতে শুরু করেছেন বিরোধীরা। সিবিআই এবং ইডি-কে লিখিত অভিযোগ জানানোর প্রস্তুতিও নেওয়া হয়েছে বলে দাবি। তৎকালীন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান তৃণমূল নেতা ধর্তিমোহন রায় বলেন, “এখন আর ও সব কিছু বলতে পারব না।”
সোমবারই ময়নাগুড়ির প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক অনন্তদেব অধিকারী দাবি করেন, শিক্ষামন্ত্রী থাকাকালীন পার্থ চট্টোপাধ্যায় নিয়োগের সুপারিশ পাঠাতে বলেছিলেন। তৃণমূল সূত্রের খবর, সুপারিশ গিয়েছিল জেলা তৃণমূল অফিস-সহ একাধিক ব্লক সভাপতিদেরও। একাধিক লেটারহেড প্যাডে অন্তত দেড় হাজার নামের তালিকার সুপারিশ গিয়েছিল বলে দাবি। তৃণমূলেরই একাংশের প্রশ্ন, দলের নেতারা নিজেদের প্যাডে যাঁদের নাম পাঠিয়েছিলেন, তাঁদের ক’জন প্রকৃত তৃণমূল কর্মী আর কতজন নন তা খতিয়ে দেখা হোক। সেই সব সুপারিশে কাদের নাম রয়েছে তা নিয়েও তদন্তের দাবি তুলেছেন বিরোধীরা।
বিজেপির জেলা সভাপতি বাপি গোস্বামী বলেন, “আমার কাছে তথ্য-প্রমাণ আছে, তৃণমূলের একজন নেতা তাঁর ছেলের কাগজপত্র তৈরি করে মাসখানেক আগে জমা দিয়েছেন। এতদিন বিনা যাচাইয়ে সেই নেতার ছেলে চাকরি করেছে। সব তথ্য-প্রমাণ আমরা সিবিআই-ইডিকে পাঠাচ্ছি। প্রয়োজনে নতুন করে মামলাও রুজু করা হবে।” সিপিএমের প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠনের জেলা সম্পাদক বিপ্লব ঝাঁ বলেন, “প্রাথমিক শিক্ষার পরিবেশ কলুষিত হয়েছে। আমাদের জেলাতেও ভুরি ভুরি অনিয়ম হয়েছে। দোষী, শাস্তি, তদন্ত— এ সব তো চলবেই, সবার আগে জেলার শিক্ষার সুস্থ পরিবেশ ফিরে আসুক।”
তৃণমূল নেতারা এ নিয়ে মুখ খোলা নিয়ে সাবধানী। জেলা তৃণমূল সভাপতি মহুয়া গোপ বলেন, “দলনেত্রী তো আমদের দলের অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়েছেন। দল কাউকে দুর্নীতি করতে বলেনি। প্রশ্রয়ও দেয় না।”