সাজ: আসছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। স্বাগত জানাতে সেজেছে আলিপুরদুয়ার শহর। সোমবার। নিজস্ব চিত্র
‘গোষ্ঠীকোন্দল’ রয়েছে বলে মানছেন দলের নেতাদের একাংশ। তাঁদের বক্তব্য, তার মধ্যে দলের জেলা চেয়ারম্যান তৃণমূল ছেড়ে যোগ দিয়েছেন গেরুয়া শিবিরে। সেইসঙ্গে চা বলয় অধ্যুষিত জেলার প্রতিটি বিধানসভা এলাকাতেই প্রভাব বাড়িয়েছে বিজেপি। এই পরিস্থিতিতে দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ও ভাঙন রোধের পাশাপাশি লোকসভা নির্বাচনের ‘হারানো জমি’ বিধানসভায় ফিরে পেতে মঙ্গলবার সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কী বার্তা দেন, সে দিকেই তাকিয়ে আলিপুরদুয়ার জেলার তৃণমূল নেতারা।
গত লোকসভা নির্বাচনে আলিপুরদুয়ার কেন্দ্রে কার্যত ভরাডুবি হয়েছে তৃণমূলের। ওই নির্বাচনে জেলার পাঁচটি বিধানসভা কেন্দ্রেই এগিয়ে ছিলেন বিজেপি প্রার্থী। পাশাপাশি লোকসভা নির্বাচনের পরে জেলায় তাদের সাংগঠনিক শক্তি আরও অনেকটা বেড়েছে বলেও দাবি গেরুয়া শিবিরের নেতাদের। এই অবস্থায় বিধানসভা নির্বাচনের আগে জেলার বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে অভিষেকের বৈঠক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করছেন তৃণমূলের জেলা শীর্ষ নেতাদের বড় অংশ। জেলা তৃণমূল সভাপতি মৃদুল গোস্বামী জানিয়েছেন, মঙ্গলবার হাসিমারায় একটি কালীমন্দিরে যাবেন সাংসদ। তার পরে আলিপুরদুয়ার সার্কিট হাউজে সাংগঠনিক বৈঠক করবেন। তৃণমূল সূত্রে খবর, বৈঠকে দলের বাছাই করা নেতাদের ডাকা হবে। মূলত জেলার কোন এলাকায় দলের কী পরিস্থিতি তা নিয়েই অভিষেক পর্যালোচনা করবেন বলে তৃণমূলের জেলা শীর্ষ নেতারা জানিয়েছেন। লোকসভা নির্বাচনের পরে আলিপুরদুয়ারে দলের সভাপতি পরিবর্তন হলেও মাস কয়েক আগে নতুন জেলা কমিটি গঠন হতেই দলের অন্দরে গোষ্ঠীকোন্দল কার্যত চরমে পৌঁছয় বলে অভিযোগ। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, এই পরিস্থিতিতে শিলিগুড়িতে দলের জেলা শীর্ষ নেতাদের নিয়ে বৈঠক করেন অভিষেক। সেই বৈঠকে নেতাদের আলাদা আলাদা করে দায়িত্ব ভাগ করে দেন। নেতারা সেই দায়িত্ব কতটা পালন করেছেন, মঙ্গলবারের বৈঠকে তারও পর্যালোচনা করা হতে পারে।
তবে বিধানসভা নির্বাচনের আগে ‘দ্বন্দ্বের’ পাশাপাশি তৃণমূল নেতাদের অন্যতম চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ভাঙন। দলের জেলা চেয়ারম্যান তথা প্রাক্তন সাংসদ দশরথ তিরকে গেরুয়া শিবিরে যোগ দেওয়ার পরে বিধানসভা নির্বাচনের আগে আরও ভাঙনের আশঙ্কা করছেন নেতাদের অনেকে। এই পরিস্থিতি দলের ভাঙন রোধে অভিষেক কা বার্তা দেন সেদিকেও তাকিয়ে তৃণমূল নেতাদের অনেকেই।
যদিও জেলা তৃণমূল সভাপতি বলেন, “আলিপুরদুয়ারে দলের অন্দরে কোনও কোন্দল বা ভাঙন নেই। যাঁরা রাজনীতি নিয়ে ব্যবসা করেন, তাঁরা দল থেকে বেরিয়ে গিয়েছেন।”