কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরীকে ফোনে হুমকি-বার্তা দেওয়া হয়। —ফাইল চিত্র।
ইংরেজবাজার পুরসভার চেয়ারম্যান তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরীকে খুনের হুমকি দেওয়ার ঘটনায় তিন জনকে আটক করেও তেমন কোনও তথ্য পায়নি পুলিশ। এখনও পর্যন্ত মূল অভিযুক্তেরা অধরা। আর এ নিয়ে পুলিশ-প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন মালদহ জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। ‘বিশ পেটি’ দাবি করে কৃষ্ণেন্দুকে হুমকি দেওয়ার ঘটনায় মালদহ জেলা তৃণমূলের সভাপতি তথা মালতিপুরের বিধায়ক আব্দুর রহিম বক্সির হুঁশিয়ারি, ‘‘পুলিশ ব্যবস্থা না করলে তৃণমূল কর্মীরা এই ধরনের চক্রান্তকারীদের গুঁড়িয়ে দেবে।’’ যা নিয়ে সমালোচনা করল বিজেপি।
কৃষ্ণেন্দু অভিযোগ করেন, বুধবার সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ তিনি একটি মেসেজ পান। যিনি বার্তা পাঠিয়েছিলেন, তিনি নিজেকে ‘ডি কোম্পানি’র প্রদীপ বলে পরিচয় দিয়েছেন। তিনি বার্তায় লেখেন, ‘‘২০ পেটি দেনা হোগা আপকো, নেহি তো তুম অর তুমহারি ফ্যামিলি মেম্বার কো টোক দেঙ্গে।’’ বাংলায় তর্জমা করলে দাঁড়ায় ‘‘আপনাকে ২০ পেটি দিতে হবে। নয়তো আপনাকে এবং আপনার পরিবারকে গুলি করে দেব!’’
শুক্রবার ওই ঘটনায় অভিযোগ পাওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তিন জনকে আটক করে কালিয়াচক থানার পুলিশ। কিন্তু তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করে তেমন কোনও ‘সূত্র’ উদ্ধার করতে পারেননি তদন্তকারীরা। যার ফলে এখনও মূল অভিযুক্তদের টিকি ছুঁতে পারেনি পুলিশ। এ নিয়েই পুলিশের উপর ক্ষুব্ধ শাসকদলের নেতারা। শনিবার মালদহ জেলা তৃণমূলের সভাপতি আব্দুর রহিম জানান, জেলায় একের পর এক অপরাধের ঘটনা ঘটে চলেছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে আক্রান্ত হতে হচ্ছে তৃণমূলের নেতা এবং কর্মীদের। কিন্তু পুলিশ কার্যকরী পদক্ষেপ করছে না। তিনি উদাহরণ টানেন গত মাসে ইংরেজবাজার পুরসভার তৃণমূল কাউন্সিলর দুলাল সরকার ওরফে বাবলার খুনের ঘটনার। বাবলাকে কাছ থেকে গুলি করে খুন করা হয়। ওই ঘটনায় বেশ কয়েক জন গ্রেফতার হয়েছেন। মামলা এখনও চলছে। তবে আব্দুর রহিম বলেন, ‘‘বাবলা সরকারের খুন থেকে শুরু করে একের পর এক ঘটনার পিছনে গভীর ষড়যন্ত্র রয়েছে। পুলিশ তদন্ত করছে। আশা করি, অভিযুক্তেরা ধরা পড়বে।’’ তার পরেই তৃণমূল বিধায়ক বলেন, ‘‘কিন্তু পুলিশ ব্যবস্থা করতে না পারলে তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীরাই ষড়যন্ত্রকারীদের গুঁড়িয়ে দেবে। চুপ করে বসে থাকবে না তারা।’’
দক্ষিণ মালদহ সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক অম্লান ভাদুড়ি বলেন, ‘‘কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরীকে হুমকির ঘটনায় ইতিমধ্যে কালিয়াচক থেকে তিন জনকে আটক করেছে পুলিশ। তবে পুলিশ সূত্রের খবর, তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করে তেমন কোনও সূত্র মেলেনি।’’ তিনি আব্দুর রহিমের মন্তব্যের সমালোচনা করেছেন। অন্য দিকে, পুলিশের অনুমান, ফোন নম্বর ‘ক্লোন’ করে অথবা ইন্টারনেট সিস্টেমকে ব্যবহার করে ফোনে হুমকি দেওয়া হয়েছে। অভিযুক্তদের ধরতে সাইবার বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিচ্ছেন তদন্তকারীরা।