ফাইল চিত্র।
গাঢ় থেকে হালকা নীল রংয়ের ফ্লেক্স, তাতে সাদা রং খানিকটা আছে আর সঙ্গে কয়েকটি ঘন সবুজ রঙের দাগ। ফ্লেক্সের একদিকে বড় করে শুভেন্দু অধিকারীর মুখের ছবি। ‘জনতার সেবক শুভেন্দু অধিকারীর’ তরফে বাসিন্দাদের দুর্গাপুজো, কালীপুজো এবং ছটপুজোর শুভেচ্ছাবার্তা লেখা ফ্লেক্সে। সেখানে লেখা রয়েছে, ‘শুভেন্দু অধিকারীর সমর্থকবৃন্দে’র তরফে এই শুভেচ্ছাবার্তা জানানো হয়েছে। ফ্লেক্সের কোথাও ‘তৃণমূল কংগ্রেস’ লেখা নেই। তৃণমূলের পোস্টার বা ফ্লেক্সে সাধারণত যে রং দেখা যায় তা নেই এই ফ্লেক্সে। গত রবিবার থেকে জলপাইগুড়ি শহর জুড়ে এই ফ্লেক্স লাগানো শুরু হয়েছে।
শুভেন্দু অধিকারী রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী তথা তৃণমূলের রাজ্য স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য। অথচ শুভেচ্ছা জানানোর ফ্লেক্সে দুই পরিচয়ের কিছুরই উল্লেখ নেই, দলের নামও নেই। যা নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে দলের অন্দরে, উঠেছে প্রশ্নও। তৃণমূলের প্রাক্তন যুব সভাপতি তথা বর্তমানে জেলা তৃণমূলের যুগ্ম সভাপতি বুবাই কর বলেন, ‘‘জননেতা শুভেন্দু অধিকারী জনতাকে শুভেচ্ছা জানাবেন তারজন্য দলের কোনও ছাড়পত্র প্রয়োজন হয় না, কোনও পদও লাগে না।’’
জলপাইগুড়ি জেলায় শুভেন্দু অধিকারীর অনুগামীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য জেলা তৃণমূল নেতা বুবাই কর। বেশ কিছুদিন ধরেই তাঁরা শুভেন্দু অধিকারীর নামে সোশ্যাল মিডিয়ায় নানা পেজ পরিচালনা করেন। বুবাই করকে সম্প্রতি জেলা তৃণমূলের যুগ্ম সম্পাদক করা হলেও দলের কোনও কর্মসূচিতে দেখা যায় না। এ প্রসঙ্গে বুবাই করের মন্তব্য, ‘‘নানা কারণে যাওয়া হয়ে ওঠে না।’’ শুভেন্দুবাবুর যে কোনও রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে বুবাই কর সামিল হবেন তা তিনি প্রকাশ্যে ঘোষণা করে থাকেন। কিন্তু জেলায় আর কারা শুভেন্দু অধিকারীর রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে সামিল হবেন?
জেলা তৃণমূলের নেতারা ইতিমধ্যেই খোঁজখবর শুরু করেছেন৷ জেলার তৃণমূল বিধায়কদের সঙ্গে জেলা নেতারা কথা বলছেন। পঞ্চায়েত স্তরের জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে জেলাস্তরের নেতারা যোগাযোগ রাখছেন নিয়মিত। সূত্রের খবর, জলপাইগুড়ির দু’জন বিধায়কের সঙ্গে শুভেন্দু অধিকারীর অনুগামীদের যোগাযোগ হয়েছে। ওই দুই বিধায়কের কাছে এ দিন রাজ্য নেতাদের সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছে বলে খবর। শহরে শুভেন্দুর ফ্লেক্স এবং তাতে তৃণমূলের নাম না থাকা প্রসঙ্গে জেলা তৃণমূল সভাপতি কৃষ্ণকুমার কল্যাণীর মন্তব্য, ‘‘কেউ কারও নেতার প্রচার করতেই পারেন। তবে এখন যা ব্যবস্থা তাতে অল্প খরচেই পেশাদার লোক দিয়ে ফ্লেক্স লাগিয়ে দেওয়া যায়। সমর্থকবৃন্দ লেখা মানেই অনেক সমর্থক ফ্লেক্স টাঙাচ্ছেন এমন কিন্তু নয়। আর সমর্থন কিন্তু তৃণমূলের ঘাসফুল প্রতীকে আছে। আপসহীন সংগ্রামের সেই ঘাসফুল প্রতীক না থাকলে কোনও সমর্থন আর সমর্থকও থাকবে না।’’