Jalpaiguri

দলীয় নেতার পনেরো লাখি শৌচাগার! দেখতে আসছে তৃণমূলের প্রতিনিধি দল

দলের কয়েকজন জনপ্রতিনিধির বাড়ি, সম্পত্তি, জীবনযাত্রার ধরণ নিয়ে একাধিক নালিশ উঠেছে। সেসব খতিয়ে দেখতেই রাজ্য থেকে তৃণমূলের দল আসছে জলপাইগুড়িতে।

Advertisement

অনির্বাণ রায়

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ০৯ মার্চ ২০২০ ০৩:৩৭
Share:

কার্যালয়: নিজের অফিসে তৃণমূল নেতা অমরনাথ ঝাঁ।

দলের নেতার বাড়ির শৌচাগার দেখতে কলকাতা থেকে জলপাইগুড়ি আসবে তৃণমূলের প্রতিনিধি দল। দল সূত্রের খবর, যে সে শৌচাগার নয়, ওটি তৈরিতে নাকি খসেছে লাখ পনেরো টাকা। সেসব দেখে ওই দলই আবার যাবে ডুয়ার্সে আর এক নেতার বাড়ি দেখতে। সেই বাড়িতে না কি বসেছে অতি আধুনিক দরজা। দলের ওই সূত্রই জানাচ্ছে, জলপাইগুড়ি শহরেও আসবে সেই দল। শহরের এক নেতার তৈরি বেশ কিছু ‘প্রোমোটিং’ দেখা উদ্দেশ্য তাদের।

Advertisement

দলের কয়েকজন জনপ্রতিনিধির বাড়ি, সম্পত্তি, জীবনযাত্রার ধরণ নিয়ে একাধিক নালিশ উঠেছে। সেসব খতিয়ে দেখতেই রাজ্য থেকে তৃণমূলের দল আসছে জলপাইগুড়িতে। সূত্রের খবর, চলতি মাসেই রাজ্য তৃণমূলের অভিযোগ-সেলের প্রতিনিধিরা এসে তৃণমূল নেতাদের বাড়ি এবং বিভিন্ন সম্পত্তি খতিয়ে দেখবে এবং ছবি তুলবে। তৃণমূল নেতাদের একাংশের দাবি, জেলা নেতাদের তেমনই ইঙ্গিত দিয়েছেন খোদ দলের জেলা পর্যবেক্ষক এবং পূর্তমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। কর্মীদের একাংশের দাবি, মঙ্গলবার রাতে জলপাইগুড়ির বৈঠকে বলা হয়েছে, ‘এক নেতা ১৫ লক্ষ টাকা দিয়ে শৌচাগার বানিয়েছে। তা দেখতে কলকাতা থেকে দলের প্রতিনিধি আসবে।’ নেতৃত্বের একাংশের দাবি, ডুয়ার্সের নেতা তথা জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের এক কর্তার বাড়ির শৌচালয় নিয়ে দলের রাজ্যস্তরে অভিযোগ হয়েছে। সম্প্রতি ওই নেতা একটি বাড়ি বানিয়েছেন। চা বলয়ের ওই নেতার বাড়িতে বিলাসবহুল সরঞ্জাম এবং দামি টাইলস দিয়ে শৌচালয় তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ। শুধুমাত্র শৌচালয় তৈরি করতেই ন্যূনতম ১৫ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে বলে দাবি। কর্মীদের মনে প্রশ্ন উঠেছে কোথা থেকে এল এত টাকা? এই প্রশ্নও তুলে কর্মীদের একাংশ রাজ্য নেতৃত্বকে জানায়।

ডুয়ার্সের চা বলয়ে তৃণমূলের নেতা তথা জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের মেন্টর অমরনাথ ঝাঁ-র মন্তব্য, “দল যদি চায় কোনও জনপ্রতিনিধির সম্পত্তি নিয়ে তদন্ত করে দেখতেই পারে। তাতে কার কী আপত্তি থাকে।”

Advertisement

সূত্রের খবর, পিকে-র টিমের কাছে খবর গিয়েছে আর এক নেতার বিলাসবহুল বাড়ি নিয়ে। মালবাজার পুর এলাকায় সেই বাড়ি তৈরি হয়েছে। পুরসভার সঙ্গে জড়িত ওই তৃণমূলের নেতার বাড়িতে অতি আধুনিক সরঞ্জাম বসেছে বলে দাবি। তার মধ্যে স্বয়ংক্রিয় নানা যন্ত্রও রয়েছে। বাড়ি তৈরিতে কোটি টাকা ছাড়িয়ে গিয়েছে বলে দাবি। জেলা তৃণমূলেরই কয়েকজন নেতার থেকে পিকে-র টিম ওই বাড়ি নিয়ে তথ্য সংগ্রহ করেছে বলে খবর। সেই বাড়িও ঘুরে দেখতে পারে তৃণমূলের তদন্তকারী দল। মালবাজারের পুরপ্রধান স্বপন সাহার দাবি, ‘‘এরকম বিলাসবহুল বাড়ির কথা আমার জানা নেই। এগুলি একেবারে মিথ্যে কথা।’’

তালিকায় রয়েছে জলপাইগুড়ির এক নেতার সম্পত্তিও। সেই নেতা শহরে বেশ কিছু প্রোমোটিংয়ে জড়িত। বেনামে একটি ব্যবসায় লগ্নি করার অভিযোগও তাঁর বিরুদ্ধে রয়েছে। জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূল সভাপতি কৃষ্ণকুমার কল্যাণী কোনও মন্তব্য করতে চাননি। জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশের দাবি, নয়া কমিটি তৈরির সময়ে এইসব অভিযোগ মাথায় রাখা হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement