মৌসম বেনজির নুর। ফাইল চিত্র।
আশঙ্কা ছিলই। সেটাই সত্যি হল মালদহ জেলায় তৃণমূলের হার নিয়ে পর্যালোচনা বৈঠকে। দলের জেলা সভানেত্রী মৌসম নুরের সামনেই ঝড় উঠল কাটমানি নিয়ে। সভার মধ্যেই নেতাদের একাংশ নাম না করে দলের অনেকেই কাটমানি নিচ্ছেন বলে অভিযোগ তোলেন। আর রাজ্যের এক মন্ত্রীকে পাশে নিয়ে মৌসম জেলা নেতাদের স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, সরকারি বা অন্য কোনও প্রকল্প থেকে কোনও নেতা কাটমানি নিলেই তাঁর বিরুদ্ধে এবার দলই পুলিশকে অভিযোগ করবে।
সোমবার মালদহের চাঁচলের একটি বেসরকারি লজে সোমবার লোকসভা নির্বাচনে দলের হার নিয়ে পর্যালোচনা বৈঠক ডাকা হয়। সেখানে জেলা সভানেত্রী মৌসম, জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন, জেলা পরিষদের সভাধিপতি গৌরচন্দ্র মণ্ডল ছাড়াও হাজির ছিলেন পঞ্চায়েত দফতরের রাষ্ট্রমন্ত্রী তথা দলের মালদহের পর্যবেক্ষক গোলাম রব্বানি। এ দিন সভা শুরুর আগেই দলের অভ্যন্তরীণ বৈঠক বলে সংবাদমাধ্যমের প্রবেশাধিকার ছিল না। পরে অবশ্য সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে মৌসম বলেন, ‘‘কাটমানি নিয়ে এ দিন কড়া বার্তা দেওয়া হয়েছে। যদি কেউ কাটমানি নিয়ে থাকেন, তবে তা ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তেমন হলে দল তাঁদের পাশে দাঁড়াবে না, তা তিনি যে মাপের নেতাই হন না কেন। পাশাপাশি, লোকসভা নির্বাচনে হারের কারণ নিয়েও আলোচনা হয়েছে।’’
চাঁচল-১ ব্লকের নেতৃত্বকে নিয়ে ওই আলোচনাসভায় দলের হার নিয়েও প্রত্যাশিত ঝড় ওঠে। সেই খবর নেতাদের আগাম ছিল বলেই সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের রাখা হয়নি। তবে দলীয় সূত্রে খবর, চাঁচলে দলের ভোট কমেছে। ফলে সভার শুরুতেই স্থানীয় নেতৃত্বের কাছে ফল খারাপ নিয়ে জবাবদিহি চান মন্ত্রী রব্বানি। আর ওই প্রশ্নেই দুই গোষ্ঠীর চাপানউতোর শুরু হয়। শেষে তা সামাল দেন নেতারা। তার পর কাটমানি প্রসঙ্গে মৌসম মুখ খুলতেই শুরু হয় কাদা ছোড়াছুড়ি। সভাতেই দলীয় নেতৃত্বের একাংশের বিরুদ্ধে কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ তোলেন একাংশ। তারপরেই কাটমানি নিয়ে দলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে কড়া বার্তা দেন মৌসম।
এ বিষয়ে দলের কেউই অবশ্য মুখ খুলতে চাননি। তবে সভার পর দলের কয়েকজন নেতা একান্তে পর্যবেক্ষকের কাজের পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তাঁদের বক্তব্য, উত্তর দিনাজপুরের রাজনীতি আর মালদহের রাজনীতি এক নয়। কিন্তু পর্যবেক্ষক তাঁর নিজের সিদ্ধান্ত দলীয় কর্মীদের উপরে জোর করে চাপানোর চেষ্টা করছেন। তাতে আখেরে ক্ষতি হতে পারে বলে দাবি করেছেন ওই নেতারা।